####
খুলনায় সড়ক ও ড্রেনের উন্নয়নের নামে মুজগুন্নী-সোনাডাঙ্গা মহাসড়কের গাছ কাটা বন্ধ, কেটে ফেলা গাছের স্থলে নতুন গাছ রোপন ও সড়ক বিভাজকের গাছ রেখেই সৌন্দর্যবর্ধনের কর্মসূচি গ্রহণের দাবি জানিয়েছে পরিবেশবাদী সংগঠনসমুহ। শনিবার শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে খুলনা প্রেস ক্লাবের হুমায়ুন কবীর বালু মিলনায়তনে খুলনার পরিবেশবাদী সংগঠনসমুহ সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবী জানান। সংবাদ সম্মেলনে পরিবেশ সংগঠনসমূহ ৮দফা দাবীনামা তুলে ধরেন। উত্থাপিত ৮ দফা দাবিগুলো হলো-মুজগুন্নী মহাসড়কের সড়ক বিভাজকসহ খুলনার পাবলিক পরিসরে উন্নয়নের নামে যখন তখন গাছ কাটা বন্ধ করতে হবে, সড়কসহ সড়ক বিভাজকের গাছ কাটা বন্ধ করে কাটা গাছের স্থানে বৈচিত্রময় দেশীয় প্রজাতির গাছের চারা লাগাতে হবে, মুজগুন্নী মহাসড়কের সড়ক বিভাজকের কর্তনকৃত এলাকায় বৈচিত্রময় দেশীয় গাছ লাগানোর পাশাপাশি বাকি সড়ক বিভাজকে যে গাছ আছে তা রেখেই সৌন্দর্য বর্ধনের বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে, যে সকল গাছ আমাদের দেশকে উপস্থাপন করে, আমাদের ঐতিহ্যকে উপস্থাপন করে, সেই জাতীয় গাছকে গুরুত্ব দিতে হবে, গাছের ডাল ভেঙে দূর্ঘটনা ঘটবে বা বড় গাছের জন্য ডিভাইডার ভেঙে যাবে এই সকল অজুহাতকে বর্জন করে পাখীদের আবাসস্থল তৈরীতে এবং পথচারীদের ছায়া সুনিবিড় পথ উপহার দিতে দেশীয় বড় গাছ লাগাতে হবে, গাছ কেটে সৌন্দর্যবর্ধন এমন বিপরীতমুখী কর্মকান্ড বন্ধ করতে হবে, জনগণের করের টাকায় একবার গাছ লাগানো এবং আরেকবার গাছ কেটে আবার গাছ লাগানোর নতুন প্রকল্প গ্রহণের নামে অর্থ আত্মসাতের গাছ বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে, নগর উন্নয়নে প্রকৃতিভিত্তিক পরিকল্পনাকে গুরুত্ব দিয়ে বৃক্ষ ও পরিবেশবান্ধব নগরী গড়তে সৃনির্দিষ্ট নীতিমালা গ্রহণ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পরিবেশ সংগঠন বেলার খুলনার বিভাগীয় সমন্বয়কারী মাহফুজুর রহমান মুকুল। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, যে সময়ে দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিনিয়ত পরিবেশ সুরক্ষায় এবং জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে রক্ষা পেতে গাছ লাগানোর কথা বলছে ঠিক সেই মূহুর্তে খুলনা সিটি করপোরেশনের এমন পরিবেশ বিধ্বংসী কর্মকান্ড খুলনাবাসী এবং পরিবেশ ও মানবতাবাদীরা রীতিমত শংকিত এবং উদ্বিগ্ন।
বক্তব্যে আরও বলা হয়, এই খুলনা নগর আমাদের নগর, এখানকার গাছ ও সবুজ বলয় সুরক্ষার দায়িত্ব ও সিদ্ধান্ত আমাদের। সিটি কর্পোরেশন নগরবাসীর প্রতিষ্ঠান। গাছ-পাখী-মানুষ এই নগরের সকলের অধিকার ও নিরাপত্তাকে গুরুত্ব ও সম্মান দিয়ে সিটি কর্পোরেশনকে সকলের আস্থা অর্জন করতে হবে। গাছ ও প্রকৃতি সুরক্ষায় সংবিধানের অঙ্গীকার, সংশ্লিষ্ট আইন এবং নগরবাসীর দাবি সবকিছুকে সমন্বয় করে এবং মেনে নিয়ে আমাদের এগোতে হবে। কিন্তু নগরের সড়ক থেকে নির্মমভাবে গাছ কেটে আমাদের সকলের পরিবেশ, স্বাস্থ্য ও জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলা হচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো মহানগরীর সকল শ্রেণী-পেশা-জাতি-বর্ণের মানুষ নগরের বৃক্ষ ও সবুজ বলয় সুরক্ষায় ঐক্যবদ্ধ হবার আহŸান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সনাক খুলনার সভাপতি ও পরিবেশ সুরক্ষা মঞ্চের সভাপতি এ্যাড. কুদরত-ই-খুদা, পরিবেশ সুরক্ষা মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক সুতপা বেদজ্ঞ, বোপা খুলনার সমন্বয়কারী এ্যাড. বাবুল হাওলাদার, টিআইবি’র এলাকা সমন্বয়কারী আব্দুল্লাহ আল মামুন, পরিবর্তন খুলনার নির্বাহী পরিচালক নাজমুল আযম ডেবিড, হিউম্যানিটি ওয়াচের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম সেলিম, আইআরভি’র নির্বাহী পরিচালক মেরিনা যুথী, নিজেরা করি’র প্রতিনিধি নাসিমা খাতুন, ছায়াবৃক্ষের প্রধান নির্বাহী মাহবুব আলম বাদশা প্রমূখ।
উল্লেখ্য, খুলনা মহানগরীর নতুন রাস্তার মোড় থেকে সোনাডাঙ্গা সড়কের সৌন্দয্যবৃদ্ধি ও ড্রেনের উন্নয়নের নামে প্রায় এক কিলোমিটার সড়কের গাছ গাছ কেটে ফেলেছে কেসিসি। স্থানীয় কাউন্সিলরের নেতৃত্বে এ গাছ কাটার বিুরদ্ধে ফুসে উঠেছে পরিবেশবাদী সংগঠন ও সাধারন মানুষ। ##