১২:৫০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফকিরহাট উপজেলা সরকারী হাসপাতালে চোখ ওঠা রোগীদের উপচেপড়া ভিড়

###   বাগেরহাটের ফকিরহাটে ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে অতি ছোঁয়াচে কনজাংকটিভাইটিস বা চোখের প্রদাহ রোগ। স্থানীয় ভাবে যাকে ‘চোখ ওঠা’ রোগ বলে। উপজেলার প্রায় সকল এলাকায় সব বয়সীদের মধ্যে রোগটি ছড়িয়ে পড়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চক্ষু চিকিৎসা কেন্দ্রের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গত ৩দিনে চিকিৎসা নিতে আসা ১৬২জন চোখের রোগীর মধ্যে ১৫৫জন কনজাংকটিভাইটিস বা চোখ ওঠা রোগে আক্রান্ত ছিল।

বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ‘কমিউনিটি ভিশন সেন্টার’ বা চক্ষু চিকিৎসা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় বিভিন্ন বয়সী চোখ ওঠা রোগীর ভিড়। হাসপাতাল সূচী অনুযায়ী সকাল ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত খোলা থাকার কথা থাকলেও রোগীর চাপে বিকাল ৪টা পর্যন্ত রোগী দেখছেন আই সেন্টারের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ সেবিকা (অপথালমিক) বিউটি এদবর। হাসপাতালে কোন চক্ষু চিকিৎসক না থাকলেও অনলাইনে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণের সুযোগ আছে বলে তিনি জানান। এখান থেকে রোগীদের দেওয়া হচ্ছে বিনামূল্যে ওষুধ ও চোখের ড্রপ। তবে রোগীর সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে তাতে বরাদ্দকৃত ওষুধের স্বল্পতা পড়তে পারে বলে জানান আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শিশির বসু। অতিসংক্রমিত এ রোগ উপজেলায় মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়লেও রোগটি সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরিতে কোন উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায়নি। সামাজিক দুরত্ব বা আইসোলেশনে থাকার নিয়ম থাকলেও মানছে না কেউ। আক্রান্ত ব্যক্তি ও সুস্থ্য মানুষের অবাধ মেলামেশার কারণে রোগটি বেশি ছড়াচ্ছে। এ অবস্থায় রোগটি সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা জরুরী বলে মনে করছেন চিকিৎসকেরা। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত দুই সপ্তাহ ধরে চোখ ওঠা রোগটি গ্রামে গ্রামে ছড়িয়েছে। পিলজঙ্গ ইউনিয়নের টাউন নোয়াপাড়া গ্রামের শেখ শওকত আলী জানান, তাঁর বড় ছেলের চোখ ওঠার একদিন পরেই তাদের পরিবারের সকল সদস্য এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের প্রতিবেশী প্রায় সব ঘরেই চোখ ওঠা রোগী আছে। এছাড়া মানসা-বাহিরদিয়া, বেতাগা, ফকিরহাট সদর, মূলঘরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে ব্যাপকভাবে ছড়িয়েছে চোখ ওঠা রোগ। ডায়াবেটিক্স ও উচ্চ-রক্তচাপে ভোগা অনেক রোগীদের চোখ ওঠায় জটিলতার কারণে খুলনায় গিয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে বলে জানান একাধিক রোগী। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শাহ্ মো. মহিবুল্লাহ্ জানান, ‘কনজাংকটিভাইটিস একটি ছোঁয়াচে রোগ। আক্রান্তদের আইসোলেশনে আলাদা থাকতে হবে। বাইরে সানগ্লাস ব্যবহার করা উত্তম। কোন অবস্থাতেই নিজের পছন্দ মতো ফার্মেসী থেকে ড্রপ কিনে ব্যবহার করা যাবে না। ফকিরহাট হাসপাতাল থেকে বিনামূল্যে অষুধ প্রদান করা হচ্ছে। রোগটির সংক্রমণ রুখতে জনসচেতনা তৈরির উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।’ ##

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik Madhumati

জনপ্রিয়

সাতক্ষীরায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের মতবিনিময় সভা দু’গ্রুপের হাতাহাতিতে ভন্ডুল

ফকিরহাট উপজেলা সরকারী হাসপাতালে চোখ ওঠা রোগীদের উপচেপড়া ভিড়

প্রকাশিত সময় : ০৭:১১:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ অক্টোবর ২০২২

###   বাগেরহাটের ফকিরহাটে ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে অতি ছোঁয়াচে কনজাংকটিভাইটিস বা চোখের প্রদাহ রোগ। স্থানীয় ভাবে যাকে ‘চোখ ওঠা’ রোগ বলে। উপজেলার প্রায় সকল এলাকায় সব বয়সীদের মধ্যে রোগটি ছড়িয়ে পড়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চক্ষু চিকিৎসা কেন্দ্রের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গত ৩দিনে চিকিৎসা নিতে আসা ১৬২জন চোখের রোগীর মধ্যে ১৫৫জন কনজাংকটিভাইটিস বা চোখ ওঠা রোগে আক্রান্ত ছিল।

বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ‘কমিউনিটি ভিশন সেন্টার’ বা চক্ষু চিকিৎসা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় বিভিন্ন বয়সী চোখ ওঠা রোগীর ভিড়। হাসপাতাল সূচী অনুযায়ী সকাল ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত খোলা থাকার কথা থাকলেও রোগীর চাপে বিকাল ৪টা পর্যন্ত রোগী দেখছেন আই সেন্টারের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ সেবিকা (অপথালমিক) বিউটি এদবর। হাসপাতালে কোন চক্ষু চিকিৎসক না থাকলেও অনলাইনে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণের সুযোগ আছে বলে তিনি জানান। এখান থেকে রোগীদের দেওয়া হচ্ছে বিনামূল্যে ওষুধ ও চোখের ড্রপ। তবে রোগীর সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে তাতে বরাদ্দকৃত ওষুধের স্বল্পতা পড়তে পারে বলে জানান আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শিশির বসু। অতিসংক্রমিত এ রোগ উপজেলায় মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়লেও রোগটি সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরিতে কোন উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায়নি। সামাজিক দুরত্ব বা আইসোলেশনে থাকার নিয়ম থাকলেও মানছে না কেউ। আক্রান্ত ব্যক্তি ও সুস্থ্য মানুষের অবাধ মেলামেশার কারণে রোগটি বেশি ছড়াচ্ছে। এ অবস্থায় রোগটি সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা জরুরী বলে মনে করছেন চিকিৎসকেরা। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত দুই সপ্তাহ ধরে চোখ ওঠা রোগটি গ্রামে গ্রামে ছড়িয়েছে। পিলজঙ্গ ইউনিয়নের টাউন নোয়াপাড়া গ্রামের শেখ শওকত আলী জানান, তাঁর বড় ছেলের চোখ ওঠার একদিন পরেই তাদের পরিবারের সকল সদস্য এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের প্রতিবেশী প্রায় সব ঘরেই চোখ ওঠা রোগী আছে। এছাড়া মানসা-বাহিরদিয়া, বেতাগা, ফকিরহাট সদর, মূলঘরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে ব্যাপকভাবে ছড়িয়েছে চোখ ওঠা রোগ। ডায়াবেটিক্স ও উচ্চ-রক্তচাপে ভোগা অনেক রোগীদের চোখ ওঠায় জটিলতার কারণে খুলনায় গিয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে বলে জানান একাধিক রোগী। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শাহ্ মো. মহিবুল্লাহ্ জানান, ‘কনজাংকটিভাইটিস একটি ছোঁয়াচে রোগ। আক্রান্তদের আইসোলেশনে আলাদা থাকতে হবে। বাইরে সানগ্লাস ব্যবহার করা উত্তম। কোন অবস্থাতেই নিজের পছন্দ মতো ফার্মেসী থেকে ড্রপ কিনে ব্যবহার করা যাবে না। ফকিরহাট হাসপাতাল থেকে বিনামূল্যে অষুধ প্রদান করা হচ্ছে। রোগটির সংক্রমণ রুখতে জনসচেতনা তৈরির উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।’ ##