০৬:১৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বটিয়াঘাটায় মাসুদ-মারুফ বাহিনীর হামলায় শ্রমিকলীগ কর্মী জখম

  • অফিস ডেক্স।।
  • প্রকাশিত সময় : ০৭:৪৫:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ অক্টোবর ২০২২
  • ৭৯ পড়েছেন

খুলনার বটিয়াঘাটায় আওয়ামীলীগ থেকে বহিষ্কৃত চিহ্নিত সন্ত্রাসী মাসুদ-মারুফ বাহিনীর হাতুড়ী পেটায় শ্রমিকলীগ কর্মী আলমগীর শেখ গুরুতর জখম হয়েছে। শনিবার দুপুরের দিকে উপজেলার সুরখালী ইউনিয়নের গাওঘরা বাজার সংলগ্ন ওয়াপদার রাস্তার উপর থেকে ধরে নিয়ে সন্ত্রাসীরা হাতুড়ী দিয়ে পিটিয়ে ফেলে রেখে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বটিয়াঘাটা হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে সেখান থেকে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় বটিয়াঘাটা থানায় অভিযোগ দিলেও মামলা নেয়নি পুলিশ। ভুক্তভোগী আলমগীর শেখের বক্তব্য  ও থানায় দায়েরকৃত লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, পূর্ববিরোধের জের ধরে শনিবার দুপুরের দিকে গাওঘরা বাজার সংলগ্ন ওয়াপদা রাস্তার ওপর একা পেয়ে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী হত্যা মামলার আসামী মাসুদ-মারুফ বাহিনীর লোকজন তাকে জোর করে ধরে নিয়ে গালিগালাজ করতে থাকে। এ সময় তারা জীবন নাশের হুমকি দেয়। তখন গালিগালাজ দিতে নিষেধ করলে সন্ত্রাসী মাসুদ বিশ্বাসের নির্দেশে তার ভাই মারুফ বিশ্বাস, আমজাদ শেখের ছেলে জাহাঙ্গীর শেখ, হাসান সরদারের ছেলে ডালিম সরদার, মহাতাপ শেখের ছেলে মোবারক শেখ, তরফদি তরফদারের ছেলে জাহাতাপ তরফদার, জুলফিকার মোল্লার ছেলে ইউনুস মোল্লা, আব্দুল মোড়লের ছেলে মহিবুল্রাহ মোড়ল ও পীর আলী সরদারের ছেলে বিএনপি নেতা কামাল সরদারসহ ১০-১২জন সন্ত্রাসী তাকে হাতুড়ী ও রোহার রড দিয়ে বেপরোয়া পিটিয়ে মৃত ভেবে ফেলে রেখে যায়। এ সময় তার ডাক চিৎকারে আশপামের লোক এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। সন্ত্রাসীদের মারপিটে তার হাটুর হাড় ভাঙ্গাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখম হয়। এ সময় সন্ত্রাসীরা তার কাছে থাকা ২১হাজার টাকাও ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে এলাকার লোকজন তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।

এ ঘটনায় বটিয়াঘাটা থানায় অবিযোগ দিলেও গত দুদিনেও মামলা নেয়নি এবং ঘটনার সাথে জড়িত কাউকে আটক করেনি পুলিশ। হাসপাতালের বেডে শুয়ে শ্রমিকলীগ কর্মী তার উপর হামলা ও বেপরোয়া মারপিটের ঘটনার সাথে জড়িত মাসুদ-মারুফ বাহিনীর হোতা এবং সদস্যদের দ্রুত গ্রেফতার ও কঠোর শাস্তির দাবী জানান।

হামলা ও মারপিটের বিষয়ে বিগত ইউপি নির্বাচনে নৌকার বিরোধীতা করে আওয়ামীলীগ থেকে বহিষ্কৃত মাসুদ বিশ্বাস এ প্রতিবেদককে মুটোফেনে জানান, ইতিপূর্বের একটি মারামারির ঘটনা নিয়ে স্থানীয় জাহাঙ্গীর ও আলমগীর পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছিল। সেই ঘটনাটা মিমাংসার কথা বলা হলেও কেউ রাজি না হওয়ায় কয়েকদিন আগে জাহাঙ্গীরকে মারপিট করে আলমগীরসহ তাদের লোকজন। এ ঘটনার জের ধরে শনিবার জাহাঙ্গীর, মোবারেক ও ডালিমসহ কয়েকজন আলমগীরকে পেয়ে তাকেও মারপিট করেছে। কিন্তু এ ঘটনার সাথে আমি ও আমার ভাই মারুফ কোনভাবেই জড়িত নেই। অভিযোগে যাদের নাম দেয়া হয়েছে তাদের অনেকেই ও আমি ঘটনার সময় এলাকায় ছিলাম না এটা আমি মসজিদে উঠেও বলতে পারি। তবে তিনি রাজনৈতিক কারনে সাবেক চেয়ারম্যান জাহান আলী হত্যা মামলার আসামী হয়েছিলেন। এখনও তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছেন বলে দাবী করেন।

স্থানীয় ইউপি মেম্বর মো: ফরিদ রানা জানান, ‘আমি ঘটনাটি শুনেছি। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তারা দূর্ধর্ষ ও সন্ত্রাসী প্রকৃতির। তাদের হাত থেকে ভয়ে আছি কখন আমাদের উপরেও হামলা করে।এ বিষয়টি আইনগতবাবে ব্যবস্থার জন্য চেয়ারম্যান মহোদয় চেষ্টা করছেন।

স্থানীয় সুরখালী ইউপি চেয়ারম্যান মো: জাকির হোসেন লিটু মুঠোফোনে জানান,ঘটনার সময় তিনি একটি জানাজায় ছিলেন। পরে তিনি হামলা ও মারপিটের ঘটনা জেনেছেন। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তারা ইউনিয়নে একটি অস্থির পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাইছে। এ গ্রুপের মধ্যে আওয়ামীলীগ থেকে বহিষ্কৃত ও সাবেক চেয়ারম্যান জাহান আলী হত্যা মামলার আসামীরাও রয়েছে। তিনি ভুক্তবোগীকে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বলেছেন বলেও জানান।

বটিয়াঘাটা থানার ওসি এ প্রতিবেদককে মুটোফোনে জানান, তিনি অভিযোগ পেয়ে থানার একজন অফিসারকে সরেজমিন পরিদর্শন করে ঘটনার বিষয়ে জানাতে বলেছেন। এ বিষয়ে যথাযথ তথ্য পেলে অবশ্যই মামলা রেকর্ড করে ঘটনার সাথে জড়িতদেরকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার ব্যবস্থা করবেন।  ##

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik Madhumati

জনপ্রিয়

কোস্টগার্ডের অভিযানে অস্ত্রসহ আটক -১ 

বটিয়াঘাটায় মাসুদ-মারুফ বাহিনীর হামলায় শ্রমিকলীগ কর্মী জখম

প্রকাশিত সময় : ০৭:৪৫:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ অক্টোবর ২০২২

খুলনার বটিয়াঘাটায় আওয়ামীলীগ থেকে বহিষ্কৃত চিহ্নিত সন্ত্রাসী মাসুদ-মারুফ বাহিনীর হাতুড়ী পেটায় শ্রমিকলীগ কর্মী আলমগীর শেখ গুরুতর জখম হয়েছে। শনিবার দুপুরের দিকে উপজেলার সুরখালী ইউনিয়নের গাওঘরা বাজার সংলগ্ন ওয়াপদার রাস্তার উপর থেকে ধরে নিয়ে সন্ত্রাসীরা হাতুড়ী দিয়ে পিটিয়ে ফেলে রেখে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বটিয়াঘাটা হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে সেখান থেকে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় বটিয়াঘাটা থানায় অভিযোগ দিলেও মামলা নেয়নি পুলিশ। ভুক্তভোগী আলমগীর শেখের বক্তব্য  ও থানায় দায়েরকৃত লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, পূর্ববিরোধের জের ধরে শনিবার দুপুরের দিকে গাওঘরা বাজার সংলগ্ন ওয়াপদা রাস্তার ওপর একা পেয়ে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী হত্যা মামলার আসামী মাসুদ-মারুফ বাহিনীর লোকজন তাকে জোর করে ধরে নিয়ে গালিগালাজ করতে থাকে। এ সময় তারা জীবন নাশের হুমকি দেয়। তখন গালিগালাজ দিতে নিষেধ করলে সন্ত্রাসী মাসুদ বিশ্বাসের নির্দেশে তার ভাই মারুফ বিশ্বাস, আমজাদ শেখের ছেলে জাহাঙ্গীর শেখ, হাসান সরদারের ছেলে ডালিম সরদার, মহাতাপ শেখের ছেলে মোবারক শেখ, তরফদি তরফদারের ছেলে জাহাতাপ তরফদার, জুলফিকার মোল্লার ছেলে ইউনুস মোল্লা, আব্দুল মোড়লের ছেলে মহিবুল্রাহ মোড়ল ও পীর আলী সরদারের ছেলে বিএনপি নেতা কামাল সরদারসহ ১০-১২জন সন্ত্রাসী তাকে হাতুড়ী ও রোহার রড দিয়ে বেপরোয়া পিটিয়ে মৃত ভেবে ফেলে রেখে যায়। এ সময় তার ডাক চিৎকারে আশপামের লোক এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। সন্ত্রাসীদের মারপিটে তার হাটুর হাড় ভাঙ্গাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখম হয়। এ সময় সন্ত্রাসীরা তার কাছে থাকা ২১হাজার টাকাও ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে এলাকার লোকজন তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।

এ ঘটনায় বটিয়াঘাটা থানায় অবিযোগ দিলেও গত দুদিনেও মামলা নেয়নি এবং ঘটনার সাথে জড়িত কাউকে আটক করেনি পুলিশ। হাসপাতালের বেডে শুয়ে শ্রমিকলীগ কর্মী তার উপর হামলা ও বেপরোয়া মারপিটের ঘটনার সাথে জড়িত মাসুদ-মারুফ বাহিনীর হোতা এবং সদস্যদের দ্রুত গ্রেফতার ও কঠোর শাস্তির দাবী জানান।

হামলা ও মারপিটের বিষয়ে বিগত ইউপি নির্বাচনে নৌকার বিরোধীতা করে আওয়ামীলীগ থেকে বহিষ্কৃত মাসুদ বিশ্বাস এ প্রতিবেদককে মুটোফেনে জানান, ইতিপূর্বের একটি মারামারির ঘটনা নিয়ে স্থানীয় জাহাঙ্গীর ও আলমগীর পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছিল। সেই ঘটনাটা মিমাংসার কথা বলা হলেও কেউ রাজি না হওয়ায় কয়েকদিন আগে জাহাঙ্গীরকে মারপিট করে আলমগীরসহ তাদের লোকজন। এ ঘটনার জের ধরে শনিবার জাহাঙ্গীর, মোবারেক ও ডালিমসহ কয়েকজন আলমগীরকে পেয়ে তাকেও মারপিট করেছে। কিন্তু এ ঘটনার সাথে আমি ও আমার ভাই মারুফ কোনভাবেই জড়িত নেই। অভিযোগে যাদের নাম দেয়া হয়েছে তাদের অনেকেই ও আমি ঘটনার সময় এলাকায় ছিলাম না এটা আমি মসজিদে উঠেও বলতে পারি। তবে তিনি রাজনৈতিক কারনে সাবেক চেয়ারম্যান জাহান আলী হত্যা মামলার আসামী হয়েছিলেন। এখনও তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছেন বলে দাবী করেন।

স্থানীয় ইউপি মেম্বর মো: ফরিদ রানা জানান, ‘আমি ঘটনাটি শুনেছি। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তারা দূর্ধর্ষ ও সন্ত্রাসী প্রকৃতির। তাদের হাত থেকে ভয়ে আছি কখন আমাদের উপরেও হামলা করে।এ বিষয়টি আইনগতবাবে ব্যবস্থার জন্য চেয়ারম্যান মহোদয় চেষ্টা করছেন।

স্থানীয় সুরখালী ইউপি চেয়ারম্যান মো: জাকির হোসেন লিটু মুঠোফোনে জানান,ঘটনার সময় তিনি একটি জানাজায় ছিলেন। পরে তিনি হামলা ও মারপিটের ঘটনা জেনেছেন। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তারা ইউনিয়নে একটি অস্থির পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাইছে। এ গ্রুপের মধ্যে আওয়ামীলীগ থেকে বহিষ্কৃত ও সাবেক চেয়ারম্যান জাহান আলী হত্যা মামলার আসামীরাও রয়েছে। তিনি ভুক্তবোগীকে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বলেছেন বলেও জানান।

বটিয়াঘাটা থানার ওসি এ প্রতিবেদককে মুটোফোনে জানান, তিনি অভিযোগ পেয়ে থানার একজন অফিসারকে সরেজমিন পরিদর্শন করে ঘটনার বিষয়ে জানাতে বলেছেন। এ বিষয়ে যথাযথ তথ্য পেলে অবশ্যই মামলা রেকর্ড করে ঘটনার সাথে জড়িতদেরকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার ব্যবস্থা করবেন।  ##