১২:৫৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বরিশালে বিদায় অনুষ্ঠানের টাকা দিয়ে বন্যার্তদের পাশে দাড়ানোর আহ্বান স্কুল শিক্ষকের

####

শিক্ষকতা পেশায় দীর্ঘ কর্মজীবন শেষে এবার বিদায়ের পালা। আর এই প্রিয় শিক্ষকের এই বিদায়কে স্মরণ করে রাখতে কর্মরত অন্যান্য শিক্ষক-কর্মচারীবৃন্দ, স্কুলের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা এক বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজনে জন্য তোড়জোর করছেন। কেননা বিদায়বেলা সবার প্রিয় শিক্ষক মোঃ ইউছুব আলীকে সুখময় স্মৃতি উপহার দিতে চান শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তবে হঠাৎ করেই আকস্মিক বন্যায় লন্ডভন্ড হয়ে যায় দেশের বিভিন্ন জেলা। এতে চরম বিপর্যয় দেখা দেয় জনজীবনে। আর এই পরিস্থিতিতে বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন না করে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে দাড়ানোর আহবান জানান বিদায়ী শিক্ষক। বলছি বরিশাল সদর উপজেলার ৬ নং জাগুয়া ইউনিয়নের চন্ডিপুর গ্ৰামে অবস্থিত মহাম্মদ আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ ইউছুব আলীর কথা। ১৯৮৮সালে এই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে যোগদান করেন ঝালকাঠি সদর উপজেলার কাঁচাবালিয়া গ্ৰামের মৃত আনোয়ার হোসেনের ছেলে মোঃ ইউছুব আলী। সে এসএসসি ও এইচএসসি ও বিএ পাস করার পরেই শিক্ষকতা পেশায় নিজেকে যুক্ত করেন। এরপরে চাকুরীরত অবস্থায় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন, পরবর্তীতে সিনিয়র শিক্ষক তিনি। ২০২২ সালের শেষের দিকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এরপরে সুনামের সাথে তার দায়িত্ব পালন করেন। এসময় স্কুলের শিক্ষার মান উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন তিনি। এই গুণী শিক্ষকের আগামী চার সেপ্টেম্বর শেষ কর্ম দিবস। আর তাই তার এই বিদায়কে স্মরণীয় রাখতে বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। বিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান ছাত্র-ছাত্রী এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ফেনী নোয়াখালীসহ বিভিন্ন এলাকায় বন্যা থাকায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য তিনি অনুষ্ঠান না করে সেই অর্থ দিয়ে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আহ্বান জানান।

এসময় সাবেক একাধিক শিক্ষার্থী বলেন,  মোঃ ইউছুব স্যার অনেকগুলো বছর বিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। এই এলাকায় ইউছুব স্যার নামটি অনেক সন্মানের। সে দীর্ঘদিন আমাদের মাঝে ছিলেন। আমরা কখনোই তার কথা ভুলতে পারবো না। আমরা সব সময় তাকে আদর্শবান মানুষ হিসেবে মানি

অপর শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা জানান, আগামী চার সেপ্টেম্বর ইউছুব স্যারের শেষ কর্মদিবস উপলক্ষে বিদায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। কিন্তু স্যার বরাবরই উদার মনের মানুষ ও একজন মানবিক ব্যক্তি। সে বিদায় অনুষ্ঠানের আয়োজন না করে সেই টাকা দিয়ে বানভাসী মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য অনুরোধ করেছেন। আগামীর প্রজন্ম তার মত একজন আদর্শবান শিক্ষককে মিস করবেন।আমরা তার জন্য দোয়া করি।

এব্যাপারে মোঃ: ইউছুব আলী বলেন, আমি দীর্ঘদিন এই বিদ্যালয়ে শিক্ষক পদে কর্মরত ছিলাম। সবসময় চেষ্টা করেছি শিক্ষার্থীদের ভালো কিছু শেখানোর জন্য। এই এলাকার মানুষের সাথে আমার অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। আর মাত্র কয়েকদিন পরে আমি অবসর গ্রহণ করবো। আমাকে বিদায় দেয়ার জন্য শিক্ষক এবং সাবেক শিক্ষার্থী ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা বিদায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি কারনে বিদায় অনুষ্ঠান না করে সেই টাকা দিয়ে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আহ্বান করেছি। ##

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik Madhumati

জনপ্রিয়

সাতক্ষীরায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের মতবিনিময় সভা দু’গ্রুপের হাতাহাতিতে ভন্ডুল

বরিশালে বিদায় অনুষ্ঠানের টাকা দিয়ে বন্যার্তদের পাশে দাড়ানোর আহ্বান স্কুল শিক্ষকের

প্রকাশিত সময় : ০৯:৪১:৩৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৪

####

শিক্ষকতা পেশায় দীর্ঘ কর্মজীবন শেষে এবার বিদায়ের পালা। আর এই প্রিয় শিক্ষকের এই বিদায়কে স্মরণ করে রাখতে কর্মরত অন্যান্য শিক্ষক-কর্মচারীবৃন্দ, স্কুলের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা এক বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজনে জন্য তোড়জোর করছেন। কেননা বিদায়বেলা সবার প্রিয় শিক্ষক মোঃ ইউছুব আলীকে সুখময় স্মৃতি উপহার দিতে চান শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তবে হঠাৎ করেই আকস্মিক বন্যায় লন্ডভন্ড হয়ে যায় দেশের বিভিন্ন জেলা। এতে চরম বিপর্যয় দেখা দেয় জনজীবনে। আর এই পরিস্থিতিতে বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন না করে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে দাড়ানোর আহবান জানান বিদায়ী শিক্ষক। বলছি বরিশাল সদর উপজেলার ৬ নং জাগুয়া ইউনিয়নের চন্ডিপুর গ্ৰামে অবস্থিত মহাম্মদ আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ ইউছুব আলীর কথা। ১৯৮৮সালে এই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে যোগদান করেন ঝালকাঠি সদর উপজেলার কাঁচাবালিয়া গ্ৰামের মৃত আনোয়ার হোসেনের ছেলে মোঃ ইউছুব আলী। সে এসএসসি ও এইচএসসি ও বিএ পাস করার পরেই শিক্ষকতা পেশায় নিজেকে যুক্ত করেন। এরপরে চাকুরীরত অবস্থায় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন, পরবর্তীতে সিনিয়র শিক্ষক তিনি। ২০২২ সালের শেষের দিকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এরপরে সুনামের সাথে তার দায়িত্ব পালন করেন। এসময় স্কুলের শিক্ষার মান উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন তিনি। এই গুণী শিক্ষকের আগামী চার সেপ্টেম্বর শেষ কর্ম দিবস। আর তাই তার এই বিদায়কে স্মরণীয় রাখতে বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। বিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান ছাত্র-ছাত্রী এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ফেনী নোয়াখালীসহ বিভিন্ন এলাকায় বন্যা থাকায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য তিনি অনুষ্ঠান না করে সেই অর্থ দিয়ে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আহ্বান জানান।

এসময় সাবেক একাধিক শিক্ষার্থী বলেন,  মোঃ ইউছুব স্যার অনেকগুলো বছর বিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। এই এলাকায় ইউছুব স্যার নামটি অনেক সন্মানের। সে দীর্ঘদিন আমাদের মাঝে ছিলেন। আমরা কখনোই তার কথা ভুলতে পারবো না। আমরা সব সময় তাকে আদর্শবান মানুষ হিসেবে মানি

অপর শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা জানান, আগামী চার সেপ্টেম্বর ইউছুব স্যারের শেষ কর্মদিবস উপলক্ষে বিদায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। কিন্তু স্যার বরাবরই উদার মনের মানুষ ও একজন মানবিক ব্যক্তি। সে বিদায় অনুষ্ঠানের আয়োজন না করে সেই টাকা দিয়ে বানভাসী মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য অনুরোধ করেছেন। আগামীর প্রজন্ম তার মত একজন আদর্শবান শিক্ষককে মিস করবেন।আমরা তার জন্য দোয়া করি।

এব্যাপারে মোঃ: ইউছুব আলী বলেন, আমি দীর্ঘদিন এই বিদ্যালয়ে শিক্ষক পদে কর্মরত ছিলাম। সবসময় চেষ্টা করেছি শিক্ষার্থীদের ভালো কিছু শেখানোর জন্য। এই এলাকার মানুষের সাথে আমার অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। আর মাত্র কয়েকদিন পরে আমি অবসর গ্রহণ করবো। আমাকে বিদায় দেয়ার জন্য শিক্ষক এবং সাবেক শিক্ষার্থী ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা বিদায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি কারনে বিদায় অনুষ্ঠান না করে সেই টাকা দিয়ে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আহ্বান করেছি। ##