১০:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বরিশাল বিএম  কলেজ   ক্যান্টিন র্দীঘদিন বন্ধ : চরম ভোগান্তিতে ৩০সহস্রাধিক শিক্ষার্থী

###    বরিশালের সরকারী ব্রজ মোহন(বিএম) কলেজ র্দীঘদিন যাবৎ বন্ধ রয়েছে। কলেজের ছাত্র-শিক্ষকদের সুবিধার্থে এ ক্যান্টিনটি চালু করা হয়। তবে কলেজ ক্যান্টিনটি এক ছাত্রলীগ নেতা নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর ক্যাফে জীবনানন্দ নাম দিয়ে ক্যান্টিনটি চলেছে দুই বছরেরও কম সময়। শতবর্ষেরও পুরোনো বরিশালের সরকারি ব্রজমোহন কলেজের এই ক্যান্টিন করোনার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে। মরিচা ধরেছে ক্যান্টিনের বন্ধ তালাতেও। এতে ব্যাপক ভোগান্তির মধ্যে পড়েছে ৩০সহস্রাধিক  শিক্ষার্থীরা। দ্রুত ক্যান্টিন চালু করার দাবি শিক্ষার্থীদের। তবে কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে শিগগিরই ক্যান্টিন চালুতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কলেজ সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের শেষের দিকে ব্রজমোহন কলেজের ক্যান্টিন ইজারা নেয় বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের এক সহসভাপতি এবং তার কয়েকজন বন্ধু। তখন ক্যান্টিনের নাম পরিবর্তন করে ক্যাফে জীবনানন্দ নাম দেয়া হয়।এরপর থেকেই কোনো সময় চালু আবার কোনো সময় বন্ধ থাকে ক্যান্টিন। তবে করোনার পর থেকে টানা বন্ধ রয়েছে কলেজ ক্যান্টিন।এতেই ক্ষুব্ধ সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান, একটা সময় হৈহুল্লোড় আর শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখর থাকত এই ক্যান্টিনটি। কবি জীবনানন্দ দাশের নামে ইজারাদার ছাত্রলীগ নেতা ও তার সহচররা ক্যান্টিনটির নামকরণ করার পর মাত্র দুই বছর সচল ছিল তারপরই বন্ধ কলেজের প্রাণ এই ক্যান্টিন। ৩০ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করে সরকারি ব্রজমোহন কলেজের ২৩টি বিভাগে। আর এই শিক্ষার্থীদের জন্য একমাত্র ক্যান্টিন বন্ধ রয়েছে বছরের পর বছর ধরে। ক্যান্টিনের সামনে শিক্ষার্থীরা আড্ডা দিলেও ভেতরে প্রবেশের সুযোগ হয়নি। আর অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা ক্যান্টিনে প্রবেশের সুযোগ না পেয়ে বাইরের জানালা থেকে দেখছেন ভেতরের অবস্থা। ধুলোর স্তরে ঢাকা পড়েছে কলেজ ক্যান্টিনের মধ্যে থাকা নান্দনিক ডিজাইনের টেবিল, চেয়ারসহ আসবাবপত্রগুলো।

অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র রাহাত হোসেন বলেন, বিশাল এই ক্যাম্পাসের বাইরে গিয়ে খাবার খাওয়াটা অনেকটা অসম্ভব ও কষ্টকর। তাছাড়া ক্যান্টিনে স্বল্পমূল্যে খাবার খাওয়া যায়। খাবার- দাবার ছাড়াও ক্যান্টিনে চলত আড্ডা। ক্যান্টিনটি দ্রুত চালুর দাবি জানাচ্ছি। আব্দুল্লাহ মাহফুজ নামে এক ছাত্র বলেন, কলেজে ভর্তি হওয়ার পর থেকে ক্যান্টিন খোলা দেখতে পাইনি। বাইরে ফুটপাতের দোকানগুলোতে খাবার খেতে হয় যেটা স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর। কলেজ জীবনে ক্যান্টিন ঘিরে অনেক স্মৃতি থাকে, আর সেসব স্মৃতিই বেঁচে থাকে আজীবন। তবে সেই স্বাদ আমরা নিতে পারছি না।

এদিকে ক্যান্টিন বন্ধের বিষয়ে বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রী সরকারি ব্রজমোহন কলেজ শাখার সভাপতি আরাফাত হোসেন শাওন বলেন, ছাত্রলীগের নেতারা এই ক্যান্টিনটি ইজারা নিয়েছিল।তাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে ক্যান্টিনটি বন্ধ রয়েছে। এছাড়া কলেজ প্রশাসন ক্যান্টিন চালুতে উদ্যোগী না হওয়ায় ক্যান্টিনের আসবাবপত্র ও ভবন জরাজীর্ণ হয়ে পড়ছে।

কলেজ শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক আলামিন সরোয়ার বলেন, ক্যান্টিন কাউকে ইজারা দেওয়া হয়নি। কয়েক বছর ক্যান্টিন বন্ধ থাকায় এখন সেটার সংস্কার প্রয়োজন। সংস্কারের পরই খুব দ্রুত ক্যান্টিন চালু করা হবে।সরকারি ব্রজমোহন কলেজের অধ্যক্ষ ড. গোলাম কিবরিয়া বলেন, আমরা উপযুক্ত লোক পেলে ক্যান্টিনটি পুনরায় চালু করব। শিক্ষার্থীদের সমস্যা হচ্ছে সেটা আমরা অনুধাবন করছি। সমস্যাটি দ্রুত সমাধান করা হবে। ##

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik Madhumati

জনপ্রিয়

কোস্টগার্ডের অভিযানে অস্ত্রসহ আটক -১ 

বরিশাল বিএম  কলেজ   ক্যান্টিন র্দীঘদিন বন্ধ : চরম ভোগান্তিতে ৩০সহস্রাধিক শিক্ষার্থী

প্রকাশিত সময় : ১২:২৭:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

###    বরিশালের সরকারী ব্রজ মোহন(বিএম) কলেজ র্দীঘদিন যাবৎ বন্ধ রয়েছে। কলেজের ছাত্র-শিক্ষকদের সুবিধার্থে এ ক্যান্টিনটি চালু করা হয়। তবে কলেজ ক্যান্টিনটি এক ছাত্রলীগ নেতা নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর ক্যাফে জীবনানন্দ নাম দিয়ে ক্যান্টিনটি চলেছে দুই বছরেরও কম সময়। শতবর্ষেরও পুরোনো বরিশালের সরকারি ব্রজমোহন কলেজের এই ক্যান্টিন করোনার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে। মরিচা ধরেছে ক্যান্টিনের বন্ধ তালাতেও। এতে ব্যাপক ভোগান্তির মধ্যে পড়েছে ৩০সহস্রাধিক  শিক্ষার্থীরা। দ্রুত ক্যান্টিন চালু করার দাবি শিক্ষার্থীদের। তবে কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে শিগগিরই ক্যান্টিন চালুতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কলেজ সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের শেষের দিকে ব্রজমোহন কলেজের ক্যান্টিন ইজারা নেয় বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের এক সহসভাপতি এবং তার কয়েকজন বন্ধু। তখন ক্যান্টিনের নাম পরিবর্তন করে ক্যাফে জীবনানন্দ নাম দেয়া হয়।এরপর থেকেই কোনো সময় চালু আবার কোনো সময় বন্ধ থাকে ক্যান্টিন। তবে করোনার পর থেকে টানা বন্ধ রয়েছে কলেজ ক্যান্টিন।এতেই ক্ষুব্ধ সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান, একটা সময় হৈহুল্লোড় আর শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখর থাকত এই ক্যান্টিনটি। কবি জীবনানন্দ দাশের নামে ইজারাদার ছাত্রলীগ নেতা ও তার সহচররা ক্যান্টিনটির নামকরণ করার পর মাত্র দুই বছর সচল ছিল তারপরই বন্ধ কলেজের প্রাণ এই ক্যান্টিন। ৩০ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করে সরকারি ব্রজমোহন কলেজের ২৩টি বিভাগে। আর এই শিক্ষার্থীদের জন্য একমাত্র ক্যান্টিন বন্ধ রয়েছে বছরের পর বছর ধরে। ক্যান্টিনের সামনে শিক্ষার্থীরা আড্ডা দিলেও ভেতরে প্রবেশের সুযোগ হয়নি। আর অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা ক্যান্টিনে প্রবেশের সুযোগ না পেয়ে বাইরের জানালা থেকে দেখছেন ভেতরের অবস্থা। ধুলোর স্তরে ঢাকা পড়েছে কলেজ ক্যান্টিনের মধ্যে থাকা নান্দনিক ডিজাইনের টেবিল, চেয়ারসহ আসবাবপত্রগুলো।

অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র রাহাত হোসেন বলেন, বিশাল এই ক্যাম্পাসের বাইরে গিয়ে খাবার খাওয়াটা অনেকটা অসম্ভব ও কষ্টকর। তাছাড়া ক্যান্টিনে স্বল্পমূল্যে খাবার খাওয়া যায়। খাবার- দাবার ছাড়াও ক্যান্টিনে চলত আড্ডা। ক্যান্টিনটি দ্রুত চালুর দাবি জানাচ্ছি। আব্দুল্লাহ মাহফুজ নামে এক ছাত্র বলেন, কলেজে ভর্তি হওয়ার পর থেকে ক্যান্টিন খোলা দেখতে পাইনি। বাইরে ফুটপাতের দোকানগুলোতে খাবার খেতে হয় যেটা স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর। কলেজ জীবনে ক্যান্টিন ঘিরে অনেক স্মৃতি থাকে, আর সেসব স্মৃতিই বেঁচে থাকে আজীবন। তবে সেই স্বাদ আমরা নিতে পারছি না।

এদিকে ক্যান্টিন বন্ধের বিষয়ে বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রী সরকারি ব্রজমোহন কলেজ শাখার সভাপতি আরাফাত হোসেন শাওন বলেন, ছাত্রলীগের নেতারা এই ক্যান্টিনটি ইজারা নিয়েছিল।তাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে ক্যান্টিনটি বন্ধ রয়েছে। এছাড়া কলেজ প্রশাসন ক্যান্টিন চালুতে উদ্যোগী না হওয়ায় ক্যান্টিনের আসবাবপত্র ও ভবন জরাজীর্ণ হয়ে পড়ছে।

কলেজ শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক আলামিন সরোয়ার বলেন, ক্যান্টিন কাউকে ইজারা দেওয়া হয়নি। কয়েক বছর ক্যান্টিন বন্ধ থাকায় এখন সেটার সংস্কার প্রয়োজন। সংস্কারের পরই খুব দ্রুত ক্যান্টিন চালু করা হবে।সরকারি ব্রজমোহন কলেজের অধ্যক্ষ ড. গোলাম কিবরিয়া বলেন, আমরা উপযুক্ত লোক পেলে ক্যান্টিনটি পুনরায় চালু করব। শিক্ষার্থীদের সমস্যা হচ্ছে সেটা আমরা অনুধাবন করছি। সমস্যাটি দ্রুত সমাধান করা হবে। ##