১০:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বরিশাল রূপাতলী বাস টার্মিনালে খানাখন্দে বেহাল ভোগান্তিতে যাত্রী!

  • রিপন রানা বরিশাল
  • প্রকাশিত সময় : ১০:৫৪:৫০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • ৯৩ পড়েছেন

বরিশাল নগরীর রূপাতলী বাস টার্মিনাল খানাখন্দে বেহাল অবস্থা ভোগান্তিতে যাত্রীরা। টার্মিনালের মধ্যে বাস ঢোকালে তা বের করা কঠিন হয়ে পড়ে চালকদের। পাশাপাশি অনেক সময় বাস খানাখন্দে পড়ে দুর্বিষহ দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়।

মালিক সমিতি বলছে বড় প্রজেক্ট এলে এই বাস টার্মিনাল ভালোভাবে সংস্কার করা সম্ভব। ওদিকে সিটি করপোরেশন বলছে শিগগিরই সংস্কার করা হবে বাস টার্মিনালটি।

বরিশাল কুয়াকাটা রুটের সিকদার পরিবহণের চালক সাইদুল বলেন, রূপাতলী বাস টার্মিনাল থেকে আমার বাস কুয়াকাটা পর্যন্ত ট্রিপ দেয়। কিন্তু বিভাগীয় শহরে দুটি বাস টার্মিনালের মধ্যে এই রূপাতলী বাস টার্মিনালের অবস্থা সব থেকে খারাপ।

এই টার্মিনালের মধ্যে একবার বাস যদি ঢোকে আর বের হয় তাতেই বাসের ১২টা বেজে যায়। কোনো না কোনো সমস্যা হবেই। আমরা অনেকবার মালিক সমিতির নেতাদের বিষয়টি বলছি।

তারপর তারা নিজেদের সাধ্যমতো ইটের খোয়া ফেলে ঠিক করার চেষ্টা করলেও তা বেশি দিন টেকে না। বাবু-শুভ পরিবহণের চালক মোফাজ্জেল তরফদার বলেন, ‘আমাগো রূপাতলী স্ট্যান্ডের মধ্যে দিয়া বাস বাইর করতে কইলজা লইড়া যায় ভাঙাচোরায়।

এহেন যে অবস্থা হেডা এক বা দুদিনের না। এয়া কয়েক বছর ধইরাই এই রহমই আছে। কোনো চেঞ্জ নাই। একটা বাসস্ট্যান্ডের অবস্থা এই রহম থাহে কেমনে। মোরাও তো মানুষ। এইয়ার মধ্যে গাড়ি তো ঢুকাইতেই ইচ্ছা করে না।’

কুয়াকাটা-বরিশাল-খুলনা রুটের বাস ইমান আপনের চালক আব্দুল্লাহ রকিব বলেন, ‘শীতকালে এই বাস টার্মিনাল ধুলায় ভইরা যায়। আর বর্ষাকালে থাহে পানিতে ভরা। এমন কোনো জায়গা নাই যে ভাঙাচোরা নাই।

এই স্ট্যান্ড দিয়া ২১ রুটে বাস চলাচল করে। বাসও আছে কয়েকশ। দূরপাল্লা আর অভ্যন্তরীণ রুট মিলাইয়া যে পরিমাণ বাস এই হানে আয় সেই ক্যাপাসিটি নাই এই বাস টার্মিনালের। এই স্ট্যান্ডের মধ্যে ঢোকার সময় মনে হইবে কোলা বা মাঠের মধ্যে নামতে আছি।’

বরিশাল থেকে বরগুনার আমতলীর যাত্রী সুকান্ত পাল বলেন, ‘স্ট্যান্ডের কাউন্টারের সামনে যাওয়ার সময় পাশ দিয়ে বাস গিয়েছিল, বাসের চাকা ভাঙার মধ্যে পড়ায় ভাঙার মধ্যে থাকা পানি আমার শরীরে লেগে জামাকাপড়ই নষ্ট হয়ে গেছে।’

পটুয়াখালী বাউফলের যাত্রী সোবাহান মিঞা বলেন, ‘কাউন্টারের সামনে যাওয়া ধরছি, তহন দেহি সামনে কাদা আর পানিতে ভরা। প্যান্ট কাচাইয়া যাওয়া লাগছে। বাচ্চাগো কান্দে কইড়া নেওয়া লাগছে।’

এসব বিষয়ে বরিশাল-পটুয়াখালী বাস ও মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওছার হোসেন শিপন বলেন, ‘টার্মিনালে ড্রেন সংস্কারের কাজ চলছে।

এরপরই টার্মিনালের সংস্কার কাজ ধরা হবে। আমরা মাঝেমধ্যে ভাঙা ইট ফেলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছি। তবে এবারে শক্ত-পোক্তভাবে কাজ হবে।

বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফারুখ আহম্মেদ বলেন, ‘বরিশাল নগরীর বিভিন্ন এলাকায় সড়ক নির্মাণ, সংস্কারসহ নানা উন্নয়নমূলক কাজ চলছে। পর্যায়ক্রমে রূপাতলী বাস টার্মিনালের কাজও ধরা হবে। জনগণের ভোগান্তির বিষয়টি মাথায় রেখে যত দ্রুত সম্ভব এই টার্মিনালে সংস্কার কাজ করা হবে।

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

dainik madhumati

জনপ্রিয়

কোস্টগার্ডের অভিযানে অস্ত্রসহ আটক -১ 

বরিশাল রূপাতলী বাস টার্মিনালে খানাখন্দে বেহাল ভোগান্তিতে যাত্রী!

প্রকাশিত সময় : ১০:৫৪:৫০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২

বরিশাল নগরীর রূপাতলী বাস টার্মিনাল খানাখন্দে বেহাল অবস্থা ভোগান্তিতে যাত্রীরা। টার্মিনালের মধ্যে বাস ঢোকালে তা বের করা কঠিন হয়ে পড়ে চালকদের। পাশাপাশি অনেক সময় বাস খানাখন্দে পড়ে দুর্বিষহ দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়।

মালিক সমিতি বলছে বড় প্রজেক্ট এলে এই বাস টার্মিনাল ভালোভাবে সংস্কার করা সম্ভব। ওদিকে সিটি করপোরেশন বলছে শিগগিরই সংস্কার করা হবে বাস টার্মিনালটি।

বরিশাল কুয়াকাটা রুটের সিকদার পরিবহণের চালক সাইদুল বলেন, রূপাতলী বাস টার্মিনাল থেকে আমার বাস কুয়াকাটা পর্যন্ত ট্রিপ দেয়। কিন্তু বিভাগীয় শহরে দুটি বাস টার্মিনালের মধ্যে এই রূপাতলী বাস টার্মিনালের অবস্থা সব থেকে খারাপ।

এই টার্মিনালের মধ্যে একবার বাস যদি ঢোকে আর বের হয় তাতেই বাসের ১২টা বেজে যায়। কোনো না কোনো সমস্যা হবেই। আমরা অনেকবার মালিক সমিতির নেতাদের বিষয়টি বলছি।

তারপর তারা নিজেদের সাধ্যমতো ইটের খোয়া ফেলে ঠিক করার চেষ্টা করলেও তা বেশি দিন টেকে না। বাবু-শুভ পরিবহণের চালক মোফাজ্জেল তরফদার বলেন, ‘আমাগো রূপাতলী স্ট্যান্ডের মধ্যে দিয়া বাস বাইর করতে কইলজা লইড়া যায় ভাঙাচোরায়।

এহেন যে অবস্থা হেডা এক বা দুদিনের না। এয়া কয়েক বছর ধইরাই এই রহমই আছে। কোনো চেঞ্জ নাই। একটা বাসস্ট্যান্ডের অবস্থা এই রহম থাহে কেমনে। মোরাও তো মানুষ। এইয়ার মধ্যে গাড়ি তো ঢুকাইতেই ইচ্ছা করে না।’

কুয়াকাটা-বরিশাল-খুলনা রুটের বাস ইমান আপনের চালক আব্দুল্লাহ রকিব বলেন, ‘শীতকালে এই বাস টার্মিনাল ধুলায় ভইরা যায়। আর বর্ষাকালে থাহে পানিতে ভরা। এমন কোনো জায়গা নাই যে ভাঙাচোরা নাই।

এই স্ট্যান্ড দিয়া ২১ রুটে বাস চলাচল করে। বাসও আছে কয়েকশ। দূরপাল্লা আর অভ্যন্তরীণ রুট মিলাইয়া যে পরিমাণ বাস এই হানে আয় সেই ক্যাপাসিটি নাই এই বাস টার্মিনালের। এই স্ট্যান্ডের মধ্যে ঢোকার সময় মনে হইবে কোলা বা মাঠের মধ্যে নামতে আছি।’

বরিশাল থেকে বরগুনার আমতলীর যাত্রী সুকান্ত পাল বলেন, ‘স্ট্যান্ডের কাউন্টারের সামনে যাওয়ার সময় পাশ দিয়ে বাস গিয়েছিল, বাসের চাকা ভাঙার মধ্যে পড়ায় ভাঙার মধ্যে থাকা পানি আমার শরীরে লেগে জামাকাপড়ই নষ্ট হয়ে গেছে।’

পটুয়াখালী বাউফলের যাত্রী সোবাহান মিঞা বলেন, ‘কাউন্টারের সামনে যাওয়া ধরছি, তহন দেহি সামনে কাদা আর পানিতে ভরা। প্যান্ট কাচাইয়া যাওয়া লাগছে। বাচ্চাগো কান্দে কইড়া নেওয়া লাগছে।’

এসব বিষয়ে বরিশাল-পটুয়াখালী বাস ও মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওছার হোসেন শিপন বলেন, ‘টার্মিনালে ড্রেন সংস্কারের কাজ চলছে।

এরপরই টার্মিনালের সংস্কার কাজ ধরা হবে। আমরা মাঝেমধ্যে ভাঙা ইট ফেলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছি। তবে এবারে শক্ত-পোক্তভাবে কাজ হবে।

বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফারুখ আহম্মেদ বলেন, ‘বরিশাল নগরীর বিভিন্ন এলাকায় সড়ক নির্মাণ, সংস্কারসহ নানা উন্নয়নমূলক কাজ চলছে। পর্যায়ক্রমে রূপাতলী বাস টার্মিনালের কাজও ধরা হবে। জনগণের ভোগান্তির বিষয়টি মাথায় রেখে যত দ্রুত সম্ভব এই টার্মিনালে সংস্কার কাজ করা হবে।