১২:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাগেরহাটে মেয়র-চেয়ারম্যানসহ অধিকাংশ জনপ্রতিনিধি আত্মগোপনে, র্দূভোগে সাধারণ মানুষ

####

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে বাগেরহাটের বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, পৌরসভা মেয়র, চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য, নারী ইউপি সদস্য, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলররা আত্মগোপনে রয়েছেন। এসব জনপ্রতিনিধিরা নিয়মিত অফিসে না আসায় নাগরিক সেবা প্রদান ব্যাহত হচ্ছে। দুর-দুরান্ত থেকে সেবা নিতে এসে চরম র্দূভোগে পড়ছেন সাধারণ মানুষ।  অতিদ্রুত এই সেবা স্বাভাবিক করে নাগরিক ভোগান্তি নিরসনের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

জানা যায়, বাগেরহাটে জেলায় ৯টি উপজেলা, ৩টি পৌরসভা ও ৭৫টি ইউনিয়ন রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে মেয়র, কাউন্সিলর, উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য, নারী ইউপি সদস্য মিলে ১০৪১ জন জনপ্রতিনিধি রয়েছে। যাদের বেশিরভাগ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গেল ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ও শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং দেশ ত্যাগের পরে জেলার বেশিরভাগ জনপ্রতিনিধিরা গা ঢাকা দিয়েছেন। কেউ কেউ এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন সুবিধামত স্থানে। নিজ কার্যালয়ে আসছেন না অধিকাংশ জনপ্রতিনিধি। জনপ্রতিনিধি না থাকার ফলে জন্মসনদ, মৃত্যু নিবন্ধন, নাগরিক সনদ, ট্রেড লাইসেন্স, ওয়ারেশ কায়েম সনদসহ কোন প্রকার সেবা পাচ্ছে না নাগরিকরা।

সরেজমিন বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কাড়াপাড়া, গোটাপাড়া ও বেমরতা ইউনিয়ন পরিষদ ঘুরে তেমন কোন জনপ্রতিনিধির দেখা মেলে না। বাগেরহাট পৌরসভারও একই চিত্র দেখা যায়। ২নং ওয়ার্ড এলাকার বাসিন্দা কবিরুল ইসলাম বলেন, একটি জরুরী প্রয়োজনে নাগরিকত্বের সনদ প্রয়োজন। তাই পৌরসভায় আসছিলাম কিন্তু মেয়র না থাকায় কেউ দিতে পারেনি।

কোহিনুর আক্তার ডালিম নামের এক নারী কাউন্সিলরের সাথে। তিনি জানান, কয়েকদিন ধরে মেয়রসহ কোন কাউন্সিলর আসেন না অফিসে। আসলে মেয়র না থাকলে তো অফিসিয়াল কাজ করা যায় না। তারপও মাঝে মাঝে এসে ঘুরে যাই।

বাগেরহাট সদরের কাড়াপাড়া, ষাটগম্বুজ, কচুয়ার রাড়িপাড়া, বাধালসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদে একই চিত্র পাওয়া যায়। তবে কোথাও কোথাও পরিষদের উদ্যোক্তা ও সচিবদের দেখা যায়। কাড়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, অফিসে আসি। অনেক নাগরিকও আসেন সেবা নিতে। কিন্তু চেয়ারম্যান না থাকায় আমরা কোন সেবা দিতে পারি না। যারা আসেন তাদেরকে বুঝিয়ে দেই। এদিকে, জেলায় কতজন জনপ্রতিনিধি কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকছেন তার একটি তালিকা স্থানীয় সরকারবিভাগে পাঠিয়েছেন স্থানীয় সরকার বিভাগ।পাঠানো তথ্য অনুযায়ী ৫০ শতাংশের বেশি জনপ্রতিনিধি কর্মস্থলে উপস্থিত নেই।

বাগেরহাটের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ডা. মোঃ ফখরুল হাসান বলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের চাহিদা অনুযায়ী আমরা জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকা ও না থাকার একটা তালিকা পাঠিয়েছি। মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা আসলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।আশা করি নাগরিক সেবার বিষয়টি দ্রুতই সমাধান হবে এবং মানুষের র্দূভোগ হ্রাস পাবে।

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik Madhumati

জনপ্রিয়

সাতক্ষীরায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের মতবিনিময় সভা দু’গ্রুপের হাতাহাতিতে ভন্ডুল

বাগেরহাটে মেয়র-চেয়ারম্যানসহ অধিকাংশ জনপ্রতিনিধি আত্মগোপনে, র্দূভোগে সাধারণ মানুষ

প্রকাশিত সময় : ১১:৫০:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৪

####

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে বাগেরহাটের বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, পৌরসভা মেয়র, চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য, নারী ইউপি সদস্য, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলররা আত্মগোপনে রয়েছেন। এসব জনপ্রতিনিধিরা নিয়মিত অফিসে না আসায় নাগরিক সেবা প্রদান ব্যাহত হচ্ছে। দুর-দুরান্ত থেকে সেবা নিতে এসে চরম র্দূভোগে পড়ছেন সাধারণ মানুষ।  অতিদ্রুত এই সেবা স্বাভাবিক করে নাগরিক ভোগান্তি নিরসনের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

জানা যায়, বাগেরহাটে জেলায় ৯টি উপজেলা, ৩টি পৌরসভা ও ৭৫টি ইউনিয়ন রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে মেয়র, কাউন্সিলর, উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য, নারী ইউপি সদস্য মিলে ১০৪১ জন জনপ্রতিনিধি রয়েছে। যাদের বেশিরভাগ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গেল ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ও শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং দেশ ত্যাগের পরে জেলার বেশিরভাগ জনপ্রতিনিধিরা গা ঢাকা দিয়েছেন। কেউ কেউ এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন সুবিধামত স্থানে। নিজ কার্যালয়ে আসছেন না অধিকাংশ জনপ্রতিনিধি। জনপ্রতিনিধি না থাকার ফলে জন্মসনদ, মৃত্যু নিবন্ধন, নাগরিক সনদ, ট্রেড লাইসেন্স, ওয়ারেশ কায়েম সনদসহ কোন প্রকার সেবা পাচ্ছে না নাগরিকরা।

সরেজমিন বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কাড়াপাড়া, গোটাপাড়া ও বেমরতা ইউনিয়ন পরিষদ ঘুরে তেমন কোন জনপ্রতিনিধির দেখা মেলে না। বাগেরহাট পৌরসভারও একই চিত্র দেখা যায়। ২নং ওয়ার্ড এলাকার বাসিন্দা কবিরুল ইসলাম বলেন, একটি জরুরী প্রয়োজনে নাগরিকত্বের সনদ প্রয়োজন। তাই পৌরসভায় আসছিলাম কিন্তু মেয়র না থাকায় কেউ দিতে পারেনি।

কোহিনুর আক্তার ডালিম নামের এক নারী কাউন্সিলরের সাথে। তিনি জানান, কয়েকদিন ধরে মেয়রসহ কোন কাউন্সিলর আসেন না অফিসে। আসলে মেয়র না থাকলে তো অফিসিয়াল কাজ করা যায় না। তারপও মাঝে মাঝে এসে ঘুরে যাই।

বাগেরহাট সদরের কাড়াপাড়া, ষাটগম্বুজ, কচুয়ার রাড়িপাড়া, বাধালসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদে একই চিত্র পাওয়া যায়। তবে কোথাও কোথাও পরিষদের উদ্যোক্তা ও সচিবদের দেখা যায়। কাড়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, অফিসে আসি। অনেক নাগরিকও আসেন সেবা নিতে। কিন্তু চেয়ারম্যান না থাকায় আমরা কোন সেবা দিতে পারি না। যারা আসেন তাদেরকে বুঝিয়ে দেই। এদিকে, জেলায় কতজন জনপ্রতিনিধি কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকছেন তার একটি তালিকা স্থানীয় সরকারবিভাগে পাঠিয়েছেন স্থানীয় সরকার বিভাগ।পাঠানো তথ্য অনুযায়ী ৫০ শতাংশের বেশি জনপ্রতিনিধি কর্মস্থলে উপস্থিত নেই।

বাগেরহাটের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ডা. মোঃ ফখরুল হাসান বলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের চাহিদা অনুযায়ী আমরা জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকা ও না থাকার একটা তালিকা পাঠিয়েছি। মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা আসলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।আশা করি নাগরিক সেবার বিষয়টি দ্রুতই সমাধান হবে এবং মানুষের র্দূভোগ হ্রাস পাবে।