### খুলনা বিএনপি নেতারা বলেছেন, দেশের মানুষ তার কষ্টের কথা বলার অধিকার হারিয়েছে। মানুষ কষ্টের কথা বললেও তাকে এখন ধরে নিয়ে অত্যাচার করা হচ্ছে। মানুষ তার সকল স্বাধীন অধিকার, মতপ্রকাশের অধিকার, কথা বলার স্বাধীনতা, ভোটের অধিকার হারিয়ে ফেলেছে। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব পর্যন্ত হুমকির সম্মুখিন। হারানো অধিকার ফিরে পাওয়ার প্রত্যাশা, আশা ও আকাঙ্খা নিয়ে জনগন বিএনপির পাশে এসে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির শীর্ষ নেতারা বলেছেন, মানুষের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত না করা পর্যন্ত বিএনপির একজন নেতাকর্মীও ঘরে ফিরে যাবেনা। রবিবার খুলনায় নগরীর বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, পেশাজীবী সমাজ ও রাজনৈতিক কর্মীদের সম্মানে মহানগর বিএনপি আয়োজিত ইফতার অনুষ্ঠানের পূর্বে আলোচনা ও দোয়া মাহফিলে অংশ নিয়ে বিএনপির শীর্ষ নেতারা এসব কথা বলেন। নিশিরাতের ভোট ডাকাত সরকারের অত্যাচার, লুটপাট ও অধিকার কেড়ে নেয়ার প্রতিবাদে দেশের মানুষ সকল বিভাগে অনুষ্ঠিত গণসমাবেশে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়ে সফল করেছে। সরকার অঘোষিত কারফিউ দিয়েও জন¯্রােত ঠেকাতে পারেনি। গতকালও খুলনায় একটি শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচিতে হামলা চালিয়ে অসংখ্য নেতাকর্মীকে আহত করা হয়েছে। গ্রেফতার ও মামলা দেয়া হয়েছে। কিন্ত মানুষের অংশগ্রহণ তারা ঠেকাতে পারছেনা। বিএনপি নেতারা বলেন, দেশ আজ চরম দুঃসময় পার করছে। নওগাঁয় এক গৃহবধূকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। নারায়নগঞ্জে হত্যা করা হয়েছে প্রকাশ্যে গুলি করে। মানুষ স্বাধীনতার মূল্য খুঁেজ পাচ্ছেনা। সাংবাদিক মানুষের কথা তুলে ধরেছে। সেই অপরাধে রাতের অন্ধকারে সাংবাদিককে তুলে নেয়া হয়েছে। যে অত্যাচার ১৪ বছর বিএনপির নেতাকর্মীরা ভোগ করতো, সেই অত্যাচার এখন সাধারণ মানুষ পর্যন্ত পৌছেছে। মেধাবী ছাত্র আবরার হত্যা প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বিএনপি নেতা বলেন, সে অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার কথা বলার অপরাধে হত্যার শিকার হয়েছে। একজন মন্ত্রী প্রতিবেশী দেশে গিয়ে বলে এসেছেন, যে কোন মূল্যে হাসিনা সরকারকে ক্ষমতায় রাখতে হবে। বিএনপি বিশ্বাস করে জনগনই সকল ক্ষমতার উৎস। আর তাদের ক্ষমতার উৎস প্রতিবেশি রাষ্ট্রে। তাদের নেত্রী দেশে ফিরে এসে বলেছেন, তাদেরকে যা দিয়ে এসেছি, তা তারা চিন্তাও করতে পারবে না। এ দেশের সম্পদ দেশের জনগনের। উনি এভাবে বলতে পারেননা। উনি সেদেশকে কি দিয়ে এসেছেন, আর দেশের জনগনের জন্য কি নিয়ে এসেছেন, তা তাকে বলতে হবে। এবারের রোজায় বহু মানুষ স্বস্তিতে ইফতার করতে পারছেন না দাবি করে বিএনপি নেতা বলেন, ইনশাল্লাহ আগামী বছর সবাই একসাথে ইফতার করবো। ইফতার অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির আহবায়ক শফিকুল আলম মনা। সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিনের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহবায়ক অধ্যাপক ডাঃ এ জেড এম জাহিদ হোসেন। বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুলসহ সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, সহ প্রচার সম্পাদক কৃষিবীদ শামীমুর রহমান শামীম, জেলা বিএনপির আহবায়ক আমীর এজাজ খান, সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পী। আলোচনার এক পর্যায়ে লন্ডন থেকে সরাসরি স্কাইপে যুক্ত হন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমান। এ সময় সেখানে উপস্থিত দলীয় নেতাকর্মীরা উল্লাসে ফেটে পড়েন। তারা শ্লোগানে ও করতালিতে মুখরিত করেন অনুষ্ঠান প্রাঙ্গন। সেখানে উপস্থিত বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতারাও দাঁড়িয়ে সালাম জানান। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তাদেরকে সালামের জবাব দেন ও অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার জন্য স্বাগত জানান। তিনি দীর্ঘ সময় ধরে নেতৃবৃন্দের বক্তব্য শোনেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডাঃ এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, আমাদের সামনে এখন লক্ষ্য একটাই। সংসদের বিলুপ্তি ও হাসিনার পতন। এই সরকারের বিরদ্ধে দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, দেশনেত্রীকে মুক্ত না করে, তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে না এনে, জনগনের ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত না করে একজন নেতাকর্মীও আর ঘরে ফিরে যাবেনা। অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, নড়াইলে এক স্কুল ছাত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সেজেছে বলে তাদের গাত্রদাহ সৃষ্টি হয়েছে। খুলনায় বিনা উস্কানিতে অরাজগতা সৃষ্টি করে ৮০০ নেতাকর্মীকে আসামী করে মামলা দেয়া হয়েছে। সরকারের বিদায় ঘন্টা বাজছে বলেই তারা বেপরোয়া আচরণ করছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। রকিবুল ইসলাম বকুল বলেন, গত বছর এবং এ বছর ইফতারে আমরা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে ভার্চুয়ালি পেয়েছি। আগামী বছরের ইফতারে আমরা তাকে স্বশরীরে চাই। আর এজন্য সবাইকে রাজপথে থেকে ফ্যাসিবাদের পতন নিশ্চিত করতে হবে। তার এ বক্তব্যের সময় অনুষ্ঠানস্থল শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে। আলোচনা শেষে মুসলিম উম্মাহর শান্তি সমৃদ্ধি, দেশ থেকে অপশসান দুঃশাসনের অবসান, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি, গণতন্ত্রের লড়াইয়ে নিহত সকল শহীদের রুহের মাগফিরাত কামনা এবং আহত ও অসুস্থদের সুস্থতা কামনা করে এবং অর্থনৈতিক চাপের এই সময়ে মানুষের দুঃখ কষ্ট লাঘবে মহান রাব্বুল আলামিনের রহমত কামনা করে বিশেষ দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন ওলামা দল নেতা মাওলানা জাহিদ হোসেন। ##