০৬:১৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিএনপির নেতাদের ভাষা গণতন্ত্রের নয়-রাষ্ট্রদ্রোহী বক্তব্য

###   খুলনা গণসমাবেশে বিএনপির মিথ্যাচার, নৈরাজ্য ও উস্কানীমূলক বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ। এছাড়া বিএনপির খুলনা বিভাগীয় গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে খুলনায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি এবং সমাবেশে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা নির্লজ্জ মিথ্যাচার ও উস্কানীমূলক বক্তব্যের পক্ষ নিয়ে কয়েকটি গণমাধ্যম যেভাবে অসত্য ও অতিরঞ্জিত সংবাদ পরিবেশন করেছে সে বিষয়েও ক্ষোভ জানিয়েছে। রবিবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবের হুমায়ুন কবীল বালু মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে খুলনা মহানগর ও জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন খুলনা জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ। সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ বলেন, গতকাল শনিবার গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপি গত কয়েকদিন যাবৎ খুলনা ও আশপাশ অঞ্চলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভীতি ও আতংক সৃষ্টি করেছিল-জনগণ ছিল উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে। এরমধ্যে ১০ জেলা থেকে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা এসে এই সমাবেশে যোগ দিয়েছে। পথে কোথাও কোন বাধা দেয়া হয়নি তাদের। তবে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনায় তারা নিজেরাই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে এবং সহিংস কার্যকলাপ চালায়। বিএনপির সমাবেশের আগে মালিক-শ্রমিকরা নিরাপত্তার স্বার্থে এবং তাদের কিছু দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বিভিন্ন পরিবহন বন্ধ রাখে। এর সাথে সরকার বা আওয়ামী লীগের কোন সম্পর্ক নেই। বিএনপির মিথ্যা অভিযোগ, উস্কানী ও নানা উচ্ছৃংখল আচরনের মুখে আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং আওয়ামীলীগ অনেক ধৈর্য্যরে পরিচয় দিয়েছে। বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হওয়াটাই প্রমাণিত যে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। বিরোধী পক্ষকে সভা-সমাবেশ করতে দেয়। অথচ বিএনপির আমলে আওয়ামী লীগকে সভা-সমাবেশ করতে দেয়া হতোই না-এমনকি রাস্তায় নামতে দেয়া হতো না তার বহু প্রমাণ রয়েছে। বিভিন্ন স্থান থেকে বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা লাঠিসোটা নিয়ে শহরে প্রবেশ করে আতংক ও সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছিল। অথচ বিএনপি নেতারা পথে পথে বাধা দেয়া হচ্ছে বলে মিথ্যাচার করেছিল। আওয়ামীলীগ নেতারা বলেন, সমাবেশে বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অন্য নেতারা যা বলেছেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-‘সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ১০টি আসনও পাবে না। আওয়ামী লীগের কোন চিহ্ন থাকবে না’, ‘এখনও সময় আছে নিরাপদে সরে যান, না হলে পালাবার পথ পাবেন না’, স্বৈচারচারী সরকারকে জনগণ টেনে হিঁচড়ে নামাবে’, ‘এ সরকারের পতন ঘটাবে’, ‘বিএনপি ক্ষমতায় গেলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠিত করা হবে’, ‘তাদের আমলে সংখ্যালঘু মানুষ নিরাপদে থাকে ইত্যাদি’। এসব গণতন্ত্রের ভাষা নয়-রাষ্ট্রদ্রোহী বক্তব্য। তারা আরও বলেন, বিএনপি কোন গণতান্ত্রিক দল নয়, তাদের জন্ম সেনানিবাসে-তৃণমূল পর্যায়ের মানুষ তাদের সমর্থন করে না। বিগত নির্বাচনে তাই জনগণ তাদের প্রত্যাখান করেছিল, ১০টি আসনও পায়নি। তারা গণতন্ত্রের ধার ধারে না। অগণতান্ত্রিক পন্থায় ক্ষমতা দখল করতে চায়। আওয়ামী লীগকে টেনে-হিঁচড়ে নামানোর ক্ষমতা বিএপি’র নেই। আওয়ামী লীগ সবসময় নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে। ভবিষৎতেও আসবে। তাদের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান কীভাবে ক্ষমতা দখল করেছিল-পরবর্তীতে খালেদা জিয়া কীভাবে ক্ষমতায় এসেছে তা জনগণ জানে। যে দলের নেতারা বলেন, পাকিস্তানী আমল ভালো ছিল-সে দলের পক্ষে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখা কোন অবস্থাতেই সম্ভব নয়। বিএনপি একটি সাম্প্রদায়িক দল। তাদের আমলে সংখালঘু মানুষ কখনও নিরাপদে ছিল না-কখনও থাকবেও না। ২০০১ সালের অক্টোবরের নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা শুরু হলে ওই রাতেই বিএনপি-জামায়াতের ক্যাডাররা ঝাঁপিয়ে পড়ে আওয়ামী লীগ সমর্থক ও সংখ্যালঘুদের ওপর। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ ‘অপারেশন সার্চ লাইটে’র আদলে শুরু হয় হত্যা, লুট-তরাজ, অগ্নিসংযোগ। চলে নারকীয় তান্ডব দেশের সর্বত্র। ১ অক্টোবর থেকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত চলে ‘আওয়ামী লীগমুক্ত বাংলাদেশ’ নির্মাণের অভিযান। দেশে আইনের শাসন বলে কিছুই ছিল তাদের আমলে। তা দেশবাসী ভুলে যায়নি। তাই, বিএনপি নেতাদের মুখে এসব বিভ্রান্তিকর-মিথ্যাচার শোভা পায় না। সরকার পতনের আন্দোলনের নামে বিশৃঙ্খলা ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালালে আওয়ামী লীগ জনগনকে সাথে নিয়ে সমুচিত জবাব দেয়া হবে।  আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ বলেন, মির্জা ফখরুল ও বেগম খালেদা জিয়া বলেছিলেন, পদ্মা সেতু হবে না- হলেও তাতে উঠবেন না-ভেঙে পড়ে যাবে। মির্জা ফখরুলকে বলতে চাই- ‘আপনি তো এই পদ্মা সেতু দিয়েই জন সমাবেশে স্বাচ্ছন্দে আসলেন, ভেঙে তো পড়েনি। তাই অতীতে পদ্মা সেতু নিয়ে মন্তব্যের কথা মনে করে আপনার লজ্জা হওয়া উচিত।  গণসমাবেশ সুষ্ঠুভাবে শেষ হওয়ায় সোনালী ব্যাংক চত্বর ব্যবহার করার অনুমতি দেয়ায়, সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ মাইক ব্যবহারসহ আনুষঙ্গিক বিষয়ে অনুমতি দেয়ায় খুলনা মেট্রোপলিট্রন পুলিশ ও  স্থানীয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে খুলনা জেলা ও মহানগর বিএনপি। এতেই প্রমাণিত হয় গণসমাবেশে কোন ধরনের বাধা দেয়া হয়নি। তবে কেন এই মিথ্যাচার করা হলো ? আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ লিখিত বক্তব্যে বলেন, গণমাধ্যম সঠিক সংবাদ পরিবেশন করবে-এটাই জনগণ প্রত্যাশা করে। কিন্তু গণসমাবেশকে কেন্দ্র কোন কোন প্রচার মাধ্যমে অতি উৎসাহী, অতিরঞ্জিত ও উদ্দেশ্যমূলক সংবাদ পরিবেশন জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। খুলনার একটি পত্রিকা প্রকাশ করেছে, ‘অনেক নেতা-কর্মী শহরে ঢুকতে পারেনি। খুলনা শহরের প্রত্যেকটি পয়েন্টে শাসক দলের দলীয় নেতা-কর্মীরা অস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যে বাধার দেয়াল তৈরি করে। এসব ঘটনায় আহত হয় অর্ধশত নেতা-কর্মী। এই পত্রিকা আরেক স্থানে বলেছে, ‘সমাবেশে আসতে পারেনি বাগেরহাটের বিএনপি’র নেতা-কর্মীরা’। অথচ পত্রিকার শেষ পাতায় ‘খুলনায় বিএনপি’র সমাবেশে বাগেরহাটের ২০ হাজার নেতা-কর্মীর যোগদান’ এই শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করেছে। এ সব সংবাদ কী বিভ্রান্তিকর ও পরস্পর বিরোধী নয় ? এটাই কী দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার নমুনা? সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, শনিবার বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করার কথা থাকলেও খুলনা আধুনিক রেলওয়ে স্টেশন ব্যাপক ভাংচুর করে বিএনপি‘র কর্মী ও সমর্থকরা। এ বিষয়ে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ দায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে। এছাড়া নগরীর দৌলতপুর এলাকার নতুন রাস্তা মোড়ে আওয়ামী লীগ অফিসে হামলা করে ভাংচুর করা হয়। এতে ২জন আহত হয়েছে-যারা বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এসময়ে একটি মোটর সাইকেলও ভাংচুর করা হয়। বিএনপির নেতা-কর্মীরা নগরীর শিববাড়ী মোড় টাইগার গার্ডেন হোটেলের সামনে ৪টি মোটর সাইকেল ভাংচুর করে। এতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৮জন নেতা-কর্মী আহত হয়। দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি এবং দেশকে অশান্ত ও জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য তারা এ সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়েছে। অথচ এসব সংবাদ অনেক পত্রপত্রিকায় আসেনি।  একপেশে সংবাদ পরিবেশন করায় জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ বলেন, আওয়ামী লীগ কোন ভূঁইফোড় সংগঠন নয়। বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া আওয়ামী লীগের ইতিহাস রয়েছে-রয়েছে গৌরবময় অতীত। মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী গণমানুষের সংগঠন আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর যোগ্য উত্তরসূরী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সুসংগঠিত দল হিসেবে জনগণের আস্থা ও ভালোবাসা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। জনগণ জানে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশবাসী ভালো থাকে-শান্তিতে থাকে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখে। সংবাদ সম্মেলনে মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এ্যাড. সুজিত কুমার অধিকারী, খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য মো: আকতারুজ্জামান বাবু, মো: কামরুজ্জামান জামাল, শরফুদ্দিন বিশ্বাস বাচ্চু, মো: সৈয়দ আলী, এ্যাড. সাইফুল ইসলাম, কেসিসির কাউন্সিলর জেড.এ.মাহমুদ ডন, শ্রমিকলীগের রনোজিত কুমার ঘোষ, মো: আশরাফুল ইসলাম, নূর ইসলাম বন্দ, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি এমএ. নাসিম, সাধারন সম্পাদক মো: আসাদুজ্জামান রাসেল, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পারভেজ হাওলাদারসহ আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, শ্রমিকলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। ##

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik Madhumati

জনপ্রিয়

কোস্টগার্ডের অভিযানে অস্ত্রসহ আটক -১ 

বিএনপির নেতাদের ভাষা গণতন্ত্রের নয়-রাষ্ট্রদ্রোহী বক্তব্য

প্রকাশিত সময় : ০১:১৩:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ অক্টোবর ২০২২

###   খুলনা গণসমাবেশে বিএনপির মিথ্যাচার, নৈরাজ্য ও উস্কানীমূলক বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ। এছাড়া বিএনপির খুলনা বিভাগীয় গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে খুলনায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি এবং সমাবেশে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা নির্লজ্জ মিথ্যাচার ও উস্কানীমূলক বক্তব্যের পক্ষ নিয়ে কয়েকটি গণমাধ্যম যেভাবে অসত্য ও অতিরঞ্জিত সংবাদ পরিবেশন করেছে সে বিষয়েও ক্ষোভ জানিয়েছে। রবিবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবের হুমায়ুন কবীল বালু মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে খুলনা মহানগর ও জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন খুলনা জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ। সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ বলেন, গতকাল শনিবার গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপি গত কয়েকদিন যাবৎ খুলনা ও আশপাশ অঞ্চলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভীতি ও আতংক সৃষ্টি করেছিল-জনগণ ছিল উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে। এরমধ্যে ১০ জেলা থেকে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা এসে এই সমাবেশে যোগ দিয়েছে। পথে কোথাও কোন বাধা দেয়া হয়নি তাদের। তবে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনায় তারা নিজেরাই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে এবং সহিংস কার্যকলাপ চালায়। বিএনপির সমাবেশের আগে মালিক-শ্রমিকরা নিরাপত্তার স্বার্থে এবং তাদের কিছু দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বিভিন্ন পরিবহন বন্ধ রাখে। এর সাথে সরকার বা আওয়ামী লীগের কোন সম্পর্ক নেই। বিএনপির মিথ্যা অভিযোগ, উস্কানী ও নানা উচ্ছৃংখল আচরনের মুখে আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং আওয়ামীলীগ অনেক ধৈর্য্যরে পরিচয় দিয়েছে। বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হওয়াটাই প্রমাণিত যে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। বিরোধী পক্ষকে সভা-সমাবেশ করতে দেয়। অথচ বিএনপির আমলে আওয়ামী লীগকে সভা-সমাবেশ করতে দেয়া হতোই না-এমনকি রাস্তায় নামতে দেয়া হতো না তার বহু প্রমাণ রয়েছে। বিভিন্ন স্থান থেকে বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা লাঠিসোটা নিয়ে শহরে প্রবেশ করে আতংক ও সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছিল। অথচ বিএনপি নেতারা পথে পথে বাধা দেয়া হচ্ছে বলে মিথ্যাচার করেছিল। আওয়ামীলীগ নেতারা বলেন, সমাবেশে বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অন্য নেতারা যা বলেছেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-‘সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ১০টি আসনও পাবে না। আওয়ামী লীগের কোন চিহ্ন থাকবে না’, ‘এখনও সময় আছে নিরাপদে সরে যান, না হলে পালাবার পথ পাবেন না’, স্বৈচারচারী সরকারকে জনগণ টেনে হিঁচড়ে নামাবে’, ‘এ সরকারের পতন ঘটাবে’, ‘বিএনপি ক্ষমতায় গেলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠিত করা হবে’, ‘তাদের আমলে সংখ্যালঘু মানুষ নিরাপদে থাকে ইত্যাদি’। এসব গণতন্ত্রের ভাষা নয়-রাষ্ট্রদ্রোহী বক্তব্য। তারা আরও বলেন, বিএনপি কোন গণতান্ত্রিক দল নয়, তাদের জন্ম সেনানিবাসে-তৃণমূল পর্যায়ের মানুষ তাদের সমর্থন করে না। বিগত নির্বাচনে তাই জনগণ তাদের প্রত্যাখান করেছিল, ১০টি আসনও পায়নি। তারা গণতন্ত্রের ধার ধারে না। অগণতান্ত্রিক পন্থায় ক্ষমতা দখল করতে চায়। আওয়ামী লীগকে টেনে-হিঁচড়ে নামানোর ক্ষমতা বিএপি’র নেই। আওয়ামী লীগ সবসময় নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে। ভবিষৎতেও আসবে। তাদের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান কীভাবে ক্ষমতা দখল করেছিল-পরবর্তীতে খালেদা জিয়া কীভাবে ক্ষমতায় এসেছে তা জনগণ জানে। যে দলের নেতারা বলেন, পাকিস্তানী আমল ভালো ছিল-সে দলের পক্ষে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখা কোন অবস্থাতেই সম্ভব নয়। বিএনপি একটি সাম্প্রদায়িক দল। তাদের আমলে সংখালঘু মানুষ কখনও নিরাপদে ছিল না-কখনও থাকবেও না। ২০০১ সালের অক্টোবরের নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা শুরু হলে ওই রাতেই বিএনপি-জামায়াতের ক্যাডাররা ঝাঁপিয়ে পড়ে আওয়ামী লীগ সমর্থক ও সংখ্যালঘুদের ওপর। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ ‘অপারেশন সার্চ লাইটে’র আদলে শুরু হয় হত্যা, লুট-তরাজ, অগ্নিসংযোগ। চলে নারকীয় তান্ডব দেশের সর্বত্র। ১ অক্টোবর থেকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত চলে ‘আওয়ামী লীগমুক্ত বাংলাদেশ’ নির্মাণের অভিযান। দেশে আইনের শাসন বলে কিছুই ছিল তাদের আমলে। তা দেশবাসী ভুলে যায়নি। তাই, বিএনপি নেতাদের মুখে এসব বিভ্রান্তিকর-মিথ্যাচার শোভা পায় না। সরকার পতনের আন্দোলনের নামে বিশৃঙ্খলা ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালালে আওয়ামী লীগ জনগনকে সাথে নিয়ে সমুচিত জবাব দেয়া হবে।  আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ বলেন, মির্জা ফখরুল ও বেগম খালেদা জিয়া বলেছিলেন, পদ্মা সেতু হবে না- হলেও তাতে উঠবেন না-ভেঙে পড়ে যাবে। মির্জা ফখরুলকে বলতে চাই- ‘আপনি তো এই পদ্মা সেতু দিয়েই জন সমাবেশে স্বাচ্ছন্দে আসলেন, ভেঙে তো পড়েনি। তাই অতীতে পদ্মা সেতু নিয়ে মন্তব্যের কথা মনে করে আপনার লজ্জা হওয়া উচিত।  গণসমাবেশ সুষ্ঠুভাবে শেষ হওয়ায় সোনালী ব্যাংক চত্বর ব্যবহার করার অনুমতি দেয়ায়, সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ মাইক ব্যবহারসহ আনুষঙ্গিক বিষয়ে অনুমতি দেয়ায় খুলনা মেট্রোপলিট্রন পুলিশ ও  স্থানীয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে খুলনা জেলা ও মহানগর বিএনপি। এতেই প্রমাণিত হয় গণসমাবেশে কোন ধরনের বাধা দেয়া হয়নি। তবে কেন এই মিথ্যাচার করা হলো ? আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ লিখিত বক্তব্যে বলেন, গণমাধ্যম সঠিক সংবাদ পরিবেশন করবে-এটাই জনগণ প্রত্যাশা করে। কিন্তু গণসমাবেশকে কেন্দ্র কোন কোন প্রচার মাধ্যমে অতি উৎসাহী, অতিরঞ্জিত ও উদ্দেশ্যমূলক সংবাদ পরিবেশন জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। খুলনার একটি পত্রিকা প্রকাশ করেছে, ‘অনেক নেতা-কর্মী শহরে ঢুকতে পারেনি। খুলনা শহরের প্রত্যেকটি পয়েন্টে শাসক দলের দলীয় নেতা-কর্মীরা অস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যে বাধার দেয়াল তৈরি করে। এসব ঘটনায় আহত হয় অর্ধশত নেতা-কর্মী। এই পত্রিকা আরেক স্থানে বলেছে, ‘সমাবেশে আসতে পারেনি বাগেরহাটের বিএনপি’র নেতা-কর্মীরা’। অথচ পত্রিকার শেষ পাতায় ‘খুলনায় বিএনপি’র সমাবেশে বাগেরহাটের ২০ হাজার নেতা-কর্মীর যোগদান’ এই শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করেছে। এ সব সংবাদ কী বিভ্রান্তিকর ও পরস্পর বিরোধী নয় ? এটাই কী দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার নমুনা? সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, শনিবার বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করার কথা থাকলেও খুলনা আধুনিক রেলওয়ে স্টেশন ব্যাপক ভাংচুর করে বিএনপি‘র কর্মী ও সমর্থকরা। এ বিষয়ে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ দায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে। এছাড়া নগরীর দৌলতপুর এলাকার নতুন রাস্তা মোড়ে আওয়ামী লীগ অফিসে হামলা করে ভাংচুর করা হয়। এতে ২জন আহত হয়েছে-যারা বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এসময়ে একটি মোটর সাইকেলও ভাংচুর করা হয়। বিএনপির নেতা-কর্মীরা নগরীর শিববাড়ী মোড় টাইগার গার্ডেন হোটেলের সামনে ৪টি মোটর সাইকেল ভাংচুর করে। এতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৮জন নেতা-কর্মী আহত হয়। দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি এবং দেশকে অশান্ত ও জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য তারা এ সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়েছে। অথচ এসব সংবাদ অনেক পত্রপত্রিকায় আসেনি।  একপেশে সংবাদ পরিবেশন করায় জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ বলেন, আওয়ামী লীগ কোন ভূঁইফোড় সংগঠন নয়। বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া আওয়ামী লীগের ইতিহাস রয়েছে-রয়েছে গৌরবময় অতীত। মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী গণমানুষের সংগঠন আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর যোগ্য উত্তরসূরী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সুসংগঠিত দল হিসেবে জনগণের আস্থা ও ভালোবাসা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। জনগণ জানে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশবাসী ভালো থাকে-শান্তিতে থাকে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখে। সংবাদ সম্মেলনে মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এ্যাড. সুজিত কুমার অধিকারী, খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য মো: আকতারুজ্জামান বাবু, মো: কামরুজ্জামান জামাল, শরফুদ্দিন বিশ্বাস বাচ্চু, মো: সৈয়দ আলী, এ্যাড. সাইফুল ইসলাম, কেসিসির কাউন্সিলর জেড.এ.মাহমুদ ডন, শ্রমিকলীগের রনোজিত কুমার ঘোষ, মো: আশরাফুল ইসলাম, নূর ইসলাম বন্দ, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি এমএ. নাসিম, সাধারন সম্পাদক মো: আসাদুজ্জামান রাসেল, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পারভেজ হাওলাদারসহ আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, শ্রমিকলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। ##