১০:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্কের সাম্প্রতিক পরিবর্তনের দৃশ্যমান প্রতীক নতুন নদীপথ : প্রণয় ভার্মা

####

বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেছেন, সুলতানগঞ্জ থেকে মাইয়া এই নতুন নদীপথকে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বিদ্যমান ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক ও যোগাযোগ সংযোগের অংশ এবং সম্পর্কের সাম্প্রতিক পরিবর্তনের একটি দৃশ্যমান প্রতীক। তিনি দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার প্রকৃত সম্ভাবনা উন্মোচনে মাল্টিমোডাল সংযোগের গুরুত্বের ওপর জোর দেন এবং মাইয়া-সুলতানগঞ্জ নদী রুট পুনরায় চালুর একটি পদক্ষেপ হিসেবে অবহিত করেন। যা শুধু সীমান্তের দুই পাশের স্থানীয় অর্থনীতির জন্যই উপকৃত হবে না বরং জাতীয় অর্থনীতিতেও অবদান রাখবে। একই সাথে এটি উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা এবং একীকরণ আরও জোরদার করবে। সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ নদী সংযোগ রুট চালুর জন্য বাংলাদেশের সুলতানগঞ্জ থেকে ভারতের মাইয়া পর্যন্ত একটি পণ্যবাহী জাহাজের ফ্ল্যাগিং-অফ অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় ভারথীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বাংলাদেশের নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর সাথে যৌথভাবে সুলতানগঞ্জ-গোদাগাড়ী পোর্ট অফ কলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও যোগ দেন।

অনুষ্ঠানে প্রনয় ভার্মা বলেন, ভারত এশিয়ায় বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি গন্তব্য। উন্নত যোগাযোগ সংযোগ এবং ভারতীয় রুপিতে বাণিজ্যের মতো নতুন পদক্ষেপ ভারতে বাংলাদেশি রপ্তানিকে আরও বাড়িয়ে তুলবে। হাইকমিশনার ভবিষ্যত আসন্ন উদ্যোগের বিষয়ে বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট (CEPA) চুক্তির বিষয়ে শীঘ্রই আলোচনা শুরু হতে যাচ্ছে। ইন্দো-বাংলাদেশ প্রোটোকল (IBP) রুট ৫ এবং ৬-এর পোর্ট অফ কলের আওতায় সুলতানগঞ্জ-গোদাগাড়ী পোর্ট অফ কলের উদ্বোধন এবং বাংলাদেশের সুলতানগঞ্জ থেকে ভারতের মাইয়া পর্যন্ত একটি পণ্যবাহী জাহাজের ফ্ল্যাগিং-অফ, ভারতের মাইয়া বন্দর এবং সুলতানগঞ্জ-গোদাগাড়ী বন্দরের মধ্যে পাঁচটি পণ্যবাহী জাহাজের পরীক্ষামূলক চলাচলের প্রথম উদ্যোগ। এই আইবিপি প্রোটোকল রুটের মাধ্যমে কার্গো চলাচলের জন্য প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। এই রুটে ট্রাফিকের সম্ভাবনা প্রায় ২৬ লাখ টন, যার বার্ষিক মূল্য প্রায় ২২০ কোটি টাকা। যা উভয় দেশের অভ্যন্তরীণ জলপথের ইকোসিস্টেমকে নতুন গতি দেবে বলে আশা করেন তিনি।

প্রনয় ভার্মা বলেন, ভারত এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হওয়ার জন্য একের পর এক পদক্ষেপ নিচ্ছে। বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে জ্ঞান অর্থনীতি দ্বারা চালিত একটি উন্নত দেশ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’হয়ে উঠতে চাইছে। ভারত ২০৪৭ সালের মধ্যে বিশ্বের উন্নত অর্থনীতির সারিতে যোগদান করে ‘বিকশিত ভারত’ হতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। উন্নয়নের এই ওভারল্যাপিং দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের সহযোগিতার জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করে আমাদের নতুন ক্ষমতা এবং নতুন আকাঙ্ক্ষার উপর নির্মিত।

তিনি বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি অনন্য এবং বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে যা অন্য কোনো দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মতো নয়। এটি একটি কৌশলগত অংশীদারিত্বের চেয়ে বেশি। আমাদের বন্ধনগুলি ভাগ করা ইতিহাস, ভাষা, সংস্কৃতি এবং গভীর পারস্পরিক সহানুভূতির সাথে জড়িত। সবচেয়ে বড় কথা, এগুলি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের যৌথ আত্মত্যাগের মূলে রয়েছে। আমাদের সংযোগ উদ্যোগগুলিও আমাদের জনগণ এবং আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কল্যাণ ও মঙ্গলকে কেন্দ্র করে পারস্পরিক সহানুভূতি এবং পরস্পর নির্ভরতার একই চেতনার দ্বারা পরিচালিত হয়। অনুষ্টানে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম. খায়রুজ্জামান লিটন, রাজশাহী-১ আসনের ষংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী, চাপাই নবাবগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য মো: আব্দুল ওয়াদুদ, শিপিং মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র েসচিব মো: মোস্তফা কামালসহ বিআইডব্লিউটিএ, শিপিং মন্ত্রনালয়ের অফিসারবৃন্দ ও ভারতীয় হাইকমিশনের অফিসারবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। ##

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik Madhumati

জনপ্রিয়

কোস্টগার্ডের অভিযানে অস্ত্রসহ আটক -১ 

ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্কের সাম্প্রতিক পরিবর্তনের দৃশ্যমান প্রতীক নতুন নদীপথ : প্রণয় ভার্মা

প্রকাশিত সময় : ০৭:৪৮:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

####

বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেছেন, সুলতানগঞ্জ থেকে মাইয়া এই নতুন নদীপথকে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বিদ্যমান ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক ও যোগাযোগ সংযোগের অংশ এবং সম্পর্কের সাম্প্রতিক পরিবর্তনের একটি দৃশ্যমান প্রতীক। তিনি দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার প্রকৃত সম্ভাবনা উন্মোচনে মাল্টিমোডাল সংযোগের গুরুত্বের ওপর জোর দেন এবং মাইয়া-সুলতানগঞ্জ নদী রুট পুনরায় চালুর একটি পদক্ষেপ হিসেবে অবহিত করেন। যা শুধু সীমান্তের দুই পাশের স্থানীয় অর্থনীতির জন্যই উপকৃত হবে না বরং জাতীয় অর্থনীতিতেও অবদান রাখবে। একই সাথে এটি উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা এবং একীকরণ আরও জোরদার করবে। সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ নদী সংযোগ রুট চালুর জন্য বাংলাদেশের সুলতানগঞ্জ থেকে ভারতের মাইয়া পর্যন্ত একটি পণ্যবাহী জাহাজের ফ্ল্যাগিং-অফ অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় ভারথীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বাংলাদেশের নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর সাথে যৌথভাবে সুলতানগঞ্জ-গোদাগাড়ী পোর্ট অফ কলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও যোগ দেন।

অনুষ্ঠানে প্রনয় ভার্মা বলেন, ভারত এশিয়ায় বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি গন্তব্য। উন্নত যোগাযোগ সংযোগ এবং ভারতীয় রুপিতে বাণিজ্যের মতো নতুন পদক্ষেপ ভারতে বাংলাদেশি রপ্তানিকে আরও বাড়িয়ে তুলবে। হাইকমিশনার ভবিষ্যত আসন্ন উদ্যোগের বিষয়ে বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট (CEPA) চুক্তির বিষয়ে শীঘ্রই আলোচনা শুরু হতে যাচ্ছে। ইন্দো-বাংলাদেশ প্রোটোকল (IBP) রুট ৫ এবং ৬-এর পোর্ট অফ কলের আওতায় সুলতানগঞ্জ-গোদাগাড়ী পোর্ট অফ কলের উদ্বোধন এবং বাংলাদেশের সুলতানগঞ্জ থেকে ভারতের মাইয়া পর্যন্ত একটি পণ্যবাহী জাহাজের ফ্ল্যাগিং-অফ, ভারতের মাইয়া বন্দর এবং সুলতানগঞ্জ-গোদাগাড়ী বন্দরের মধ্যে পাঁচটি পণ্যবাহী জাহাজের পরীক্ষামূলক চলাচলের প্রথম উদ্যোগ। এই আইবিপি প্রোটোকল রুটের মাধ্যমে কার্গো চলাচলের জন্য প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। এই রুটে ট্রাফিকের সম্ভাবনা প্রায় ২৬ লাখ টন, যার বার্ষিক মূল্য প্রায় ২২০ কোটি টাকা। যা উভয় দেশের অভ্যন্তরীণ জলপথের ইকোসিস্টেমকে নতুন গতি দেবে বলে আশা করেন তিনি।

প্রনয় ভার্মা বলেন, ভারত এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হওয়ার জন্য একের পর এক পদক্ষেপ নিচ্ছে। বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে জ্ঞান অর্থনীতি দ্বারা চালিত একটি উন্নত দেশ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’হয়ে উঠতে চাইছে। ভারত ২০৪৭ সালের মধ্যে বিশ্বের উন্নত অর্থনীতির সারিতে যোগদান করে ‘বিকশিত ভারত’ হতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। উন্নয়নের এই ওভারল্যাপিং দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের সহযোগিতার জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করে আমাদের নতুন ক্ষমতা এবং নতুন আকাঙ্ক্ষার উপর নির্মিত।

তিনি বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি অনন্য এবং বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে যা অন্য কোনো দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মতো নয়। এটি একটি কৌশলগত অংশীদারিত্বের চেয়ে বেশি। আমাদের বন্ধনগুলি ভাগ করা ইতিহাস, ভাষা, সংস্কৃতি এবং গভীর পারস্পরিক সহানুভূতির সাথে জড়িত। সবচেয়ে বড় কথা, এগুলি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের যৌথ আত্মত্যাগের মূলে রয়েছে। আমাদের সংযোগ উদ্যোগগুলিও আমাদের জনগণ এবং আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কল্যাণ ও মঙ্গলকে কেন্দ্র করে পারস্পরিক সহানুভূতি এবং পরস্পর নির্ভরতার একই চেতনার দ্বারা পরিচালিত হয়। অনুষ্টানে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম. খায়রুজ্জামান লিটন, রাজশাহী-১ আসনের ষংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী, চাপাই নবাবগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য মো: আব্দুল ওয়াদুদ, শিপিং মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র েসচিব মো: মোস্তফা কামালসহ বিআইডব্লিউটিএ, শিপিং মন্ত্রনালয়ের অফিসারবৃন্দ ও ভারতীয় হাইকমিশনের অফিসারবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। ##