০৫:৫১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মধুমতী নদীর ভাঙ্গন রোধে ৪৮১ কোটি টাকার প্রকল্পের উদ্বোধন

####

ফরিদপুরের মধুমতি নদীর তীর সংরক্ষণ ও ড্রেজিং প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়েছে। বৃহষ্পতিবার মৎস্য ও প্রানীসম্পদ মন্ত্রী আবদুর রহমান এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে এ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। এই প্রকল্পের আওতায় আলফাডাঙ্গা ও মধুখালি উপজেলার সাড়ে সাত কিলোমিটার এলাকায় নদীটির সংরক্ষণ ও ড্রেজিং করা হবে। প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৮১ কোটি ১০ লাখ টাকা। পাউবো সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুর জেলাধীন মধুখালী ও আলফাডাঙ্গা উপজেলার খরস্রোতা মধুমতি নদীর তীর সংরক্ষণমূলক কাজ বাস্তবায়নের মাধ্যমে নদী ভাঙ্গন রোধ নদী শাষন এবং বন্যার কবল থেকে স্থানীয় জনসাধারনকে রক্ষা করাই এ প্রকল্পের মুল উদ্দেশ্য।  ড্রেজিং করে নদীর প্রবাহ ও নাব্যতা স্বাভাবিক রাখা হবে। আর নদীর তীর সংরক্ষণের মাধ্যমে এ দু’টি উপজেলার অন্তর্গত আটটি প্রবল নদীভাঙ্গন কবলিতস্থানে অবস্থিত সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা, শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ স্মৃতি যাদুঘর, সংযোগ সড়ক, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষ্যে নির্মিত বিভিন্ন আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরবাড়ি, সরকারি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাট-বাজার, কমিউনিটি ক্লিনিক সহ ধর্মীয় উপসনালয়, ফসলি জমি ও বসবাসরত বাড়িঘর ছাড়াও বিভিন্ন স্থাপনা নদীভাঙ্গন থেকে রক্ষা পাবে।  এতে নদীর তীরবর্তী এলাকার আনুমানিক প্রায় ২ হাজার ৭৭২ কোটি ২৫ লাখ টাকার সম্পত্তি রক্ষা করা সম্ভব হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মুন্সী আব্দুর রউফ স্মৃতি জাদুঘরের সংযোগ সড়ক সহ তৎসংলগ্ন এলাকা নদীর ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পাবে। চলতি অর্থবছর থেকে শুরু হওয়া এ প্রকল্প সম্পন্নের শেষ সময় আগামী ২০২৬ সালের জুন মাস পর্যন্ত।  সূত্র জানান, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফের বসতভিটায় যাতায়াতের রাস্তাসহ রাস্তাসহ নওয়াপাড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ নওয়াগাড়া এলাকাসহ ৩ হাজার ১৫০ মিটার এলাকা মধুমতি নদীর প্রবল ভাঙ্গনকবলিত হয়েছে। এছাড়া আলফাডাঙ্গা উপজেলার বাঁশতলা, পশ্চিম চর নারায়ণদিয়া, দক্ষিণ চর নারায়ণদিয়া, দিগনগর, পবনবেগ বাজার এবং গোপালপুর ও টগরবন্দ ইউনিয়নের মিলনস্থলে বাজড়া ও চরআজমপুর রায়ের পানাইল এলাকা সহ ৪ হাজার ৩৫০ মিটার নদীতীর এলাকাও মধুমতি নদীর প্রবল ভাঙ্গন কবলিত হয়।

ফরিদপুর জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা আমাদের প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন, এ প্রকল্পের আওতায় সাড়ে ৭ কিলোমিটার নদী তীর এলাকা সংরক্ষণ ও ৩ হাজার একশো মিটার এলাকা ড্রেজিং করা হবে। এর ফলে নদীর নাব্যতা বৃদ্ধি পেয়ে নদীভাঙ্গন রোধ হবে এবং নৌ-চলাচলে সহায়ক হবে ও মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।দারিদ্র্য বিমোচন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। প্রাকৃতিক পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্রের উপর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। নদীর তীরবর্তী জনগুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোসমূহ রক্ষা পাবে। তিনি আরও বলেন, প্রকল্প এলাকাটি “বাংলাদেশ ডেল্টা প্লান-২১০০” এ উল্লেখিত ৬টি হটস্পটের মধ্যে ‘নদী অঞ্চল এবং মোহনা” এলাকায় অবস্থিত।

প্রসঙ্গত, “বাংলাদেশ ডেল্টা প্লান-২১০০” এর অভীষ্ট-১ হলো বন্যা ও জলবাযু পরিবর্তন সম্পর্কিত বিপর্যয় থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। অভীষ্ট-৩ হলো- সমন্বিত ও টেকসই নদী অঞ্চল এবং মোহনা ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা। অভীষ্ট-৪ হলো- জলাভূমি এবং বাস্তুতন্ত্র সংরক্ষণ এবং তাদের যথোপযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিত করা। অভীষ্ট-৬ হলো- ভূমি ও পানি সম্পদের সর্বোত্তম সমন্বিত ব্যবহার নিশ্চিত করা। এরআগে গত মঙ্গলবার বিকেলে মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান এমপি মধুখালী উপজেলার রউফ নগরে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রকল্পটির নামফলক উন্মোচনের মাধ্যমে এর উদ্বোধন করেন।এ সময় উপস্থিত ছিলেন  ফরিদপুর জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা ও মধুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামনূন আহমেদ অনিকসহ গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ।

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik Madhumati

জনপ্রিয়

গোপালগঞ্জে অপচিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু, কথিত ডাক্তার আটক

মধুমতী নদীর ভাঙ্গন রোধে ৪৮১ কোটি টাকার প্রকল্পের উদ্বোধন

প্রকাশিত সময় : ০৭:০৮:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ মার্চ ২০২৪

####

ফরিদপুরের মধুমতি নদীর তীর সংরক্ষণ ও ড্রেজিং প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়েছে। বৃহষ্পতিবার মৎস্য ও প্রানীসম্পদ মন্ত্রী আবদুর রহমান এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে এ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। এই প্রকল্পের আওতায় আলফাডাঙ্গা ও মধুখালি উপজেলার সাড়ে সাত কিলোমিটার এলাকায় নদীটির সংরক্ষণ ও ড্রেজিং করা হবে। প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৮১ কোটি ১০ লাখ টাকা। পাউবো সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুর জেলাধীন মধুখালী ও আলফাডাঙ্গা উপজেলার খরস্রোতা মধুমতি নদীর তীর সংরক্ষণমূলক কাজ বাস্তবায়নের মাধ্যমে নদী ভাঙ্গন রোধ নদী শাষন এবং বন্যার কবল থেকে স্থানীয় জনসাধারনকে রক্ষা করাই এ প্রকল্পের মুল উদ্দেশ্য।  ড্রেজিং করে নদীর প্রবাহ ও নাব্যতা স্বাভাবিক রাখা হবে। আর নদীর তীর সংরক্ষণের মাধ্যমে এ দু’টি উপজেলার অন্তর্গত আটটি প্রবল নদীভাঙ্গন কবলিতস্থানে অবস্থিত সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা, শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ স্মৃতি যাদুঘর, সংযোগ সড়ক, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষ্যে নির্মিত বিভিন্ন আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরবাড়ি, সরকারি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাট-বাজার, কমিউনিটি ক্লিনিক সহ ধর্মীয় উপসনালয়, ফসলি জমি ও বসবাসরত বাড়িঘর ছাড়াও বিভিন্ন স্থাপনা নদীভাঙ্গন থেকে রক্ষা পাবে।  এতে নদীর তীরবর্তী এলাকার আনুমানিক প্রায় ২ হাজার ৭৭২ কোটি ২৫ লাখ টাকার সম্পত্তি রক্ষা করা সম্ভব হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মুন্সী আব্দুর রউফ স্মৃতি জাদুঘরের সংযোগ সড়ক সহ তৎসংলগ্ন এলাকা নদীর ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পাবে। চলতি অর্থবছর থেকে শুরু হওয়া এ প্রকল্প সম্পন্নের শেষ সময় আগামী ২০২৬ সালের জুন মাস পর্যন্ত।  সূত্র জানান, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফের বসতভিটায় যাতায়াতের রাস্তাসহ রাস্তাসহ নওয়াপাড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ নওয়াগাড়া এলাকাসহ ৩ হাজার ১৫০ মিটার এলাকা মধুমতি নদীর প্রবল ভাঙ্গনকবলিত হয়েছে। এছাড়া আলফাডাঙ্গা উপজেলার বাঁশতলা, পশ্চিম চর নারায়ণদিয়া, দক্ষিণ চর নারায়ণদিয়া, দিগনগর, পবনবেগ বাজার এবং গোপালপুর ও টগরবন্দ ইউনিয়নের মিলনস্থলে বাজড়া ও চরআজমপুর রায়ের পানাইল এলাকা সহ ৪ হাজার ৩৫০ মিটার নদীতীর এলাকাও মধুমতি নদীর প্রবল ভাঙ্গন কবলিত হয়।

ফরিদপুর জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা আমাদের প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন, এ প্রকল্পের আওতায় সাড়ে ৭ কিলোমিটার নদী তীর এলাকা সংরক্ষণ ও ৩ হাজার একশো মিটার এলাকা ড্রেজিং করা হবে। এর ফলে নদীর নাব্যতা বৃদ্ধি পেয়ে নদীভাঙ্গন রোধ হবে এবং নৌ-চলাচলে সহায়ক হবে ও মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।দারিদ্র্য বিমোচন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। প্রাকৃতিক পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্রের উপর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। নদীর তীরবর্তী জনগুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোসমূহ রক্ষা পাবে। তিনি আরও বলেন, প্রকল্প এলাকাটি “বাংলাদেশ ডেল্টা প্লান-২১০০” এ উল্লেখিত ৬টি হটস্পটের মধ্যে ‘নদী অঞ্চল এবং মোহনা” এলাকায় অবস্থিত।

প্রসঙ্গত, “বাংলাদেশ ডেল্টা প্লান-২১০০” এর অভীষ্ট-১ হলো বন্যা ও জলবাযু পরিবর্তন সম্পর্কিত বিপর্যয় থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। অভীষ্ট-৩ হলো- সমন্বিত ও টেকসই নদী অঞ্চল এবং মোহনা ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা। অভীষ্ট-৪ হলো- জলাভূমি এবং বাস্তুতন্ত্র সংরক্ষণ এবং তাদের যথোপযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিত করা। অভীষ্ট-৬ হলো- ভূমি ও পানি সম্পদের সর্বোত্তম সমন্বিত ব্যবহার নিশ্চিত করা। এরআগে গত মঙ্গলবার বিকেলে মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান এমপি মধুখালী উপজেলার রউফ নগরে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রকল্পটির নামফলক উন্মোচনের মাধ্যমে এর উদ্বোধন করেন।এ সময় উপস্থিত ছিলেন  ফরিদপুর জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা ও মধুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামনূন আহমেদ অনিকসহ গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ।