০৯:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মোংলায় ঘূর্ণিঝড় রিমালের তান্ডবে সাড়ে ৭ হাজার বাড়ীঘর সহ মৎসঘের তলিয়ে ১৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি

  • সংবাদদাতা
  • প্রকাশিত সময় : ১১:০০:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ মে ২০২৪
  • ৫৬ পড়েছেন

মোঃ আবু বকর সিদ্দিক মোংলা ঃ বঙ্গোপ সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়
রিমালের তান্ডবে মোংলায় সাড়ে ৭ হাজারের অধিক বাড়ীঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। মৎস্যঘের তলিয়ে ১৫ কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছে চাষীরা । পানিতে তলিয়েগেছে রাস্তাঘাট । বৈদ্যুতিক খুটি পড়ে ও কেবল ছিড়ে যাওয়ায় বন্ধ রয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ ।

মঙ্গলবার (২৮ মে) বিকাল ৪:০০ টায পৌর শহরের দুই একটি সড়কে বিদ্যুৎ আসলেও মোংলা উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নসহ বেশিরভাগ পৌর এলাকায় বিদ্যুৎ আসেনি । এ ব্যাপারে
মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত তামান্না জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে রবিবার বিকাল থেকে মোংলা উপকুলের উপর দিয়ে বয়ে গেছে রিমালের তান্ডব। সোমবার রাতে ঝড়ো বাতার ও বৃষ্টি পাতের কারনে মোংলা উপজেলার চিলা, জয়মনি, হুলদিবুনিয়া, সুন্দরবন ইউনিয়নের প্রায় সাড়ে ৫ হাজারের অধিক বাড়ী ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এছাড়া ১২৫০ টি ঘর পুরোপুরি বিধস্ত হয়েছে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে জানান ইউএনও। তিনি আরো জানান, আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া দূর্গত মানুষের সংখ্যা ৬৮ হাজার। এছাড়া বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে নিচু এলাকার অধিকাংশ রাস্তা ঘাট। উপচে পড়েগেছে অসংখ্য গাছপালা।

মোংলা পৌর শহরের দিগম্ত কলোনির বাসিন্ধা মর্জিনা বেগম(৪৫) জানান, ঘূর্ণি ঝড়ের কবক থেকে বাচতে রাতে তারা পরিবার পরিজন নিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন সাইক্লোন সেল্টারে। সকালে দেখতে পান তাদের ঘরের ছাল পুরোটা উড়েগেছে বাতাসে।

সুন্দরবন সংলগ্ন জয়মনি এলাকার বাসিন্ধা মো: ফৈরদাউস জানান, বৌদ্ধ মারী, জয়মনি এলাকার অধিকাংশ মানুষের ঘর বাড়ী বাসাতের তোড়ে উড়েগেছে।

এদিকে ঝড়ের প্রভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে সুন্দর সংলগ্ন নদ নদীর পানি। জোয়ারে নদীর পানি ৫ থেকে ৬ ফুট উচ্ছতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে তলিয়েগেছে মোংলা উপকুলের অনেক মৎস্যঘের।

মোংলা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অঞ্জন বিশ্বাস জানান, রবিবার রাতে ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে তলিয়েগেছে উপজেলার ২ হাজার মৎস্যঘের। এতে অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্থ সহ মাছ ভেসে গিয়ে প্রায় ১৫ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি গ্রস্থ হয়েছে চাষীদের।

রবিবার সকাল থেকে মোংলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগের মোংলা অফিসের আবাসিক প্রকৌশলী মনোয়ার জাহিদ জানান, বৈদ্যুতিকখুটি পড়ে যাওয়া ও গাছ পড়ে কেবল ছিড়ে যাওয়ার কারনে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। তবে কখন থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে এ বিষয়ে তিনি নিশ্চিত করে কিছু জানাতে পারেননি।

এদিকে জলোচ্ছাসে ৬ থেকে ৭ ফুট পানিতে তলিয়েগেছে সুন্দররন। বাঁধ ভেসে তলিয়েগেছে করমজল বন্যপ্রানী প্রজনন কেন্দ্রের কুমির রাখা ২ টি পুকুর। বনের কটকা কচি খালী
সহ নিচু এলাকা গুলো তলিয়েগেছে পানিতে।
করমজল বন্যপ্রানী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, প্রজনন কেন্দ্রের কুমির থাকা পুকুর থেকে কুরির যাতে বেরিয়েযেতে না পারে এজন্য নেট দিয়ে ঘেরাও দেওয়া হয়েছে। তিনি দাবী করেন, প্রজনন কেন্দ্রের কুমির বা অন্যান্য বন্য প্রানীরনকোন এদিকে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করে খাদ্য সামুগ্রী বিতরন করছেন উপজেলা প্রশাসন। #

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

dainik madhumati

জনপ্রিয়

কোস্টগার্ডের অভিযানে অস্ত্রসহ আটক -১ 

মোংলায় ঘূর্ণিঝড় রিমালের তান্ডবে সাড়ে ৭ হাজার বাড়ীঘর সহ মৎসঘের তলিয়ে ১৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি

প্রকাশিত সময় : ১১:০০:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ মে ২০২৪

মোঃ আবু বকর সিদ্দিক মোংলা ঃ বঙ্গোপ সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়
রিমালের তান্ডবে মোংলায় সাড়ে ৭ হাজারের অধিক বাড়ীঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। মৎস্যঘের তলিয়ে ১৫ কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছে চাষীরা । পানিতে তলিয়েগেছে রাস্তাঘাট । বৈদ্যুতিক খুটি পড়ে ও কেবল ছিড়ে যাওয়ায় বন্ধ রয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ ।

মঙ্গলবার (২৮ মে) বিকাল ৪:০০ টায পৌর শহরের দুই একটি সড়কে বিদ্যুৎ আসলেও মোংলা উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নসহ বেশিরভাগ পৌর এলাকায় বিদ্যুৎ আসেনি । এ ব্যাপারে
মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত তামান্না জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে রবিবার বিকাল থেকে মোংলা উপকুলের উপর দিয়ে বয়ে গেছে রিমালের তান্ডব। সোমবার রাতে ঝড়ো বাতার ও বৃষ্টি পাতের কারনে মোংলা উপজেলার চিলা, জয়মনি, হুলদিবুনিয়া, সুন্দরবন ইউনিয়নের প্রায় সাড়ে ৫ হাজারের অধিক বাড়ী ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এছাড়া ১২৫০ টি ঘর পুরোপুরি বিধস্ত হয়েছে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে জানান ইউএনও। তিনি আরো জানান, আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া দূর্গত মানুষের সংখ্যা ৬৮ হাজার। এছাড়া বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে নিচু এলাকার অধিকাংশ রাস্তা ঘাট। উপচে পড়েগেছে অসংখ্য গাছপালা।

মোংলা পৌর শহরের দিগম্ত কলোনির বাসিন্ধা মর্জিনা বেগম(৪৫) জানান, ঘূর্ণি ঝড়ের কবক থেকে বাচতে রাতে তারা পরিবার পরিজন নিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন সাইক্লোন সেল্টারে। সকালে দেখতে পান তাদের ঘরের ছাল পুরোটা উড়েগেছে বাতাসে।

সুন্দরবন সংলগ্ন জয়মনি এলাকার বাসিন্ধা মো: ফৈরদাউস জানান, বৌদ্ধ মারী, জয়মনি এলাকার অধিকাংশ মানুষের ঘর বাড়ী বাসাতের তোড়ে উড়েগেছে।

এদিকে ঝড়ের প্রভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে সুন্দর সংলগ্ন নদ নদীর পানি। জোয়ারে নদীর পানি ৫ থেকে ৬ ফুট উচ্ছতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে তলিয়েগেছে মোংলা উপকুলের অনেক মৎস্যঘের।

মোংলা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অঞ্জন বিশ্বাস জানান, রবিবার রাতে ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে তলিয়েগেছে উপজেলার ২ হাজার মৎস্যঘের। এতে অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্থ সহ মাছ ভেসে গিয়ে প্রায় ১৫ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি গ্রস্থ হয়েছে চাষীদের।

রবিবার সকাল থেকে মোংলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগের মোংলা অফিসের আবাসিক প্রকৌশলী মনোয়ার জাহিদ জানান, বৈদ্যুতিকখুটি পড়ে যাওয়া ও গাছ পড়ে কেবল ছিড়ে যাওয়ার কারনে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। তবে কখন থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে এ বিষয়ে তিনি নিশ্চিত করে কিছু জানাতে পারেননি।

এদিকে জলোচ্ছাসে ৬ থেকে ৭ ফুট পানিতে তলিয়েগেছে সুন্দররন। বাঁধ ভেসে তলিয়েগেছে করমজল বন্যপ্রানী প্রজনন কেন্দ্রের কুমির রাখা ২ টি পুকুর। বনের কটকা কচি খালী
সহ নিচু এলাকা গুলো তলিয়েগেছে পানিতে।
করমজল বন্যপ্রানী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, প্রজনন কেন্দ্রের কুমির থাকা পুকুর থেকে কুরির যাতে বেরিয়েযেতে না পারে এজন্য নেট দিয়ে ঘেরাও দেওয়া হয়েছে। তিনি দাবী করেন, প্রজনন কেন্দ্রের কুমির বা অন্যান্য বন্য প্রানীরনকোন এদিকে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করে খাদ্য সামুগ্রী বিতরন করছেন উপজেলা প্রশাসন। #