১০:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রামপালে যৌতুকলোভী স্বামীর বিরুদ্ধে গৃহবধূর মামলা, প্রতিকার চেয়ে দ্বারেদ্বারে ধর্ণা

 

###    রামপালে নির্মম নির্যাতন সইতে না পেরে স্বামীর বিরুদ্ধে গৃহবধূ নাজমুন নাহার মামলা দায়ের করেছেন। কিন্তু কোর বিচার না পেয়ে এখন প্রতিকারের আশায় ঘুরছেন সমাজপতিদের দ্বারে। গৃহবধূর স্বামী প্রভাবশালী হওয়ায় কোন প্রতিকার মিলছে না বলে অভিযোগ করেছেন। বরং অসহায় ওই গৃহবধূকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছে স্বামী শেখ তাহিদুল ইসলাম, শশুর শেখ নূর ইসলাম ও তার শ্বাশুড়ি হাবিবা বেগম। মামলা সূত্রে জানা গেছে,  রামপাল উপজেলার ভাগা গ্রামের শেখ নূর ইসলামের পুত্র শেখ তাহিদুল ইসলাম (২৭) নামের এক যুবক বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা গ্রামের মো. আমিনুল ইসলামের কন্যা নাজমুন নাহার (২৩) কে বিয়ে করেন। বিয়ের কাবিনে ৫ লক্ষ টাকা ধার্য্য করা হয়। গত ইংরেজি ২৪-০৫-২০২১ সালে বিবাহের পরে তাদের ঔরশে জন্ম নেয়া শেখ নিয়াজুল ইসলাম নামের এক বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। এরপর থেকে যৌতুক লোভী তাহিদুল যৌতুকের দাবীতে নির্যাতন শুরু করে। বিয়ের সময় কন্যার পিতা ৩ লক্ষ টাকা মূল্যের ২ ভরি স্বর্ণালংকার ও  আসবাবপত্র উপঢৌকন হিসেবে জামাতাকে প্রদান করে। এতে সন্তুষ্ট হতে না পেরে যৌতুক হিসেবে আরও ৫ লক্ষ টাকা দাবী করেন। স্বামী তাহিদুলের দাবীকৃত টাকা দিতে অস্বীকার করলে ভুক্তভোগী নাজমুন নাহারের বাড়িতে ফেলে গত ১৭-০১-২০২৩ তারিখ রাত সাড়ে ৮ টায় গলা টিপে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় গত ২২-০১-২০২৩ তারিখ ভুক্তভোগী নাজমুন নাহার বাদী হয়ে বরগুনার বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেন। যার নম্বর ৫৯/২০২৩। তথ্য উপাত্ত ও অনুসন্ধানে জানা গেছে, রামপাল উপজেলার ভাগা গ্রামের নূর ইসলামের পুত্র তাহিদুল ইতিমধ্যে আরও একাধিক বিয়ে করেছেন। সে গত ২০১২ সালে একই উপজেলার ঝনঝনিয়া গ্রামের খাদিজা ইসলাম কলি নামের এক মেয়েকে বিয়ে করেন। সেই সংসারে ইমন নামের নয় বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। পরে লম্পট তাহিদুল তাকে ডিভোর্স দেন। এরপূর্বে সে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার মহিয়ারপুর গ্রামের আকতারা খাতুনকে বিয়ে করেন। তার পরিণতি কি হয়েছে সেটি জানা যায়নি। পরে গত ২০১৫ সালে রূপসার বাগমারা গ্রামের মৃত আইয়ুব আলীর কন্যা মিতাকে বিয়ে করেন। সেই সংসারে ইরান নামের পাঁচ বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। তারা অবশ্য তাহিদুলের বাড়িতে থাকেন। পরে গত ২৪-০৫ ২০২১ তারিখ ভুক্তভোগী নাজমুন নাহারকে বিয়ে করেন। সে সংসারে তাদের নিয়াজুল নামের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। গৃহবধূ নাজমুন নাহার জানান, তার স্বামী তাহিদুল দেশের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ৬/৭ টি বিয়ে করেছেন এবং প্রত্যেক স্ত্রীর পরিবারকে ব্লাকমেইল করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে সটকে পড়েছেন। এ সব ঘটনায় তার বিরুদ্ধে বরগুনা জেলার বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়েরসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। লম্পট তাহিদ একাধিক জাতীয় পরিচয় পত্র তৈরী করে এসব প্রতারণা করতো বলে অভিযোগে ভুক্তভোগীরা জানায়। বিভিন্ন লোকজনকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে সে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিতো। দুবাই পাঠানোর কথা বলে বরগুনা জেলার পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের গিয়াস উদ্দিনের কাছ থেকে তিন লক্ষ ৭০ হাজার টাকা নগদ গ্রহণ করে ভূয়া ভিসা ও বিমানের টিকিট দেন। এ ঘটনায় বরগুনা আমল আদালতে গত ০৬-০৩-২০২৩ তারিখ ভুক্তভোগী গিয়াস উদ্দিন একটি প্রতারণা মামলা করেন। সে বর্তমানে চেক জালিয়াতি, নারী নির্যাতন ও অপহরণ এবং মোটরসাইকেল চুরির মামলাসহ ৩ টি মামলার ওয়ারেন্টভূক্ত আসামি। এ সকল অভিযোগের বিষয়ে ভাগা গ্রামের তাহিদুলের পিতা নূর ইসলাম বলেন, আমাদের সাথে তার কোন যোগাযোগ নেই। অভিযোগের বিষয়ে দুবাই প্রবাসী তাহিদুলের কাছে ভিডিও কলে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বর্তমানে দুবাই আছি। আমি পরিস্থিতির শিকার। তবে তিনি একাধিক বিয়ে ও সন্তানের কথা স্বীকার করে বলেন বাড়িতে এসে বা লোক মারফত মামলা মোকাবেলা এবং স্ত্রী নাজমুন নাহারের সাথে মিমাংসা করে দেনা পাওনা বুঝে দেওয়া হবে জানিয়ে তিনি এসব নিয়ে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করেন।##

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik adhumati

জনপ্রিয়

কোস্টগার্ডের অভিযানে অস্ত্রসহ আটক -১ 

রামপালে যৌতুকলোভী স্বামীর বিরুদ্ধে গৃহবধূর মামলা, প্রতিকার চেয়ে দ্বারেদ্বারে ধর্ণা

প্রকাশিত সময় : ১১:০০:৪২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৩

 

###    রামপালে নির্মম নির্যাতন সইতে না পেরে স্বামীর বিরুদ্ধে গৃহবধূ নাজমুন নাহার মামলা দায়ের করেছেন। কিন্তু কোর বিচার না পেয়ে এখন প্রতিকারের আশায় ঘুরছেন সমাজপতিদের দ্বারে। গৃহবধূর স্বামী প্রভাবশালী হওয়ায় কোন প্রতিকার মিলছে না বলে অভিযোগ করেছেন। বরং অসহায় ওই গৃহবধূকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছে স্বামী শেখ তাহিদুল ইসলাম, শশুর শেখ নূর ইসলাম ও তার শ্বাশুড়ি হাবিবা বেগম। মামলা সূত্রে জানা গেছে,  রামপাল উপজেলার ভাগা গ্রামের শেখ নূর ইসলামের পুত্র শেখ তাহিদুল ইসলাম (২৭) নামের এক যুবক বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা গ্রামের মো. আমিনুল ইসলামের কন্যা নাজমুন নাহার (২৩) কে বিয়ে করেন। বিয়ের কাবিনে ৫ লক্ষ টাকা ধার্য্য করা হয়। গত ইংরেজি ২৪-০৫-২০২১ সালে বিবাহের পরে তাদের ঔরশে জন্ম নেয়া শেখ নিয়াজুল ইসলাম নামের এক বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। এরপর থেকে যৌতুক লোভী তাহিদুল যৌতুকের দাবীতে নির্যাতন শুরু করে। বিয়ের সময় কন্যার পিতা ৩ লক্ষ টাকা মূল্যের ২ ভরি স্বর্ণালংকার ও  আসবাবপত্র উপঢৌকন হিসেবে জামাতাকে প্রদান করে। এতে সন্তুষ্ট হতে না পেরে যৌতুক হিসেবে আরও ৫ লক্ষ টাকা দাবী করেন। স্বামী তাহিদুলের দাবীকৃত টাকা দিতে অস্বীকার করলে ভুক্তভোগী নাজমুন নাহারের বাড়িতে ফেলে গত ১৭-০১-২০২৩ তারিখ রাত সাড়ে ৮ টায় গলা টিপে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় গত ২২-০১-২০২৩ তারিখ ভুক্তভোগী নাজমুন নাহার বাদী হয়ে বরগুনার বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেন। যার নম্বর ৫৯/২০২৩। তথ্য উপাত্ত ও অনুসন্ধানে জানা গেছে, রামপাল উপজেলার ভাগা গ্রামের নূর ইসলামের পুত্র তাহিদুল ইতিমধ্যে আরও একাধিক বিয়ে করেছেন। সে গত ২০১২ সালে একই উপজেলার ঝনঝনিয়া গ্রামের খাদিজা ইসলাম কলি নামের এক মেয়েকে বিয়ে করেন। সেই সংসারে ইমন নামের নয় বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। পরে লম্পট তাহিদুল তাকে ডিভোর্স দেন। এরপূর্বে সে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার মহিয়ারপুর গ্রামের আকতারা খাতুনকে বিয়ে করেন। তার পরিণতি কি হয়েছে সেটি জানা যায়নি। পরে গত ২০১৫ সালে রূপসার বাগমারা গ্রামের মৃত আইয়ুব আলীর কন্যা মিতাকে বিয়ে করেন। সেই সংসারে ইরান নামের পাঁচ বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। তারা অবশ্য তাহিদুলের বাড়িতে থাকেন। পরে গত ২৪-০৫ ২০২১ তারিখ ভুক্তভোগী নাজমুন নাহারকে বিয়ে করেন। সে সংসারে তাদের নিয়াজুল নামের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। গৃহবধূ নাজমুন নাহার জানান, তার স্বামী তাহিদুল দেশের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ৬/৭ টি বিয়ে করেছেন এবং প্রত্যেক স্ত্রীর পরিবারকে ব্লাকমেইল করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে সটকে পড়েছেন। এ সব ঘটনায় তার বিরুদ্ধে বরগুনা জেলার বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়েরসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। লম্পট তাহিদ একাধিক জাতীয় পরিচয় পত্র তৈরী করে এসব প্রতারণা করতো বলে অভিযোগে ভুক্তভোগীরা জানায়। বিভিন্ন লোকজনকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে সে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিতো। দুবাই পাঠানোর কথা বলে বরগুনা জেলার পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের গিয়াস উদ্দিনের কাছ থেকে তিন লক্ষ ৭০ হাজার টাকা নগদ গ্রহণ করে ভূয়া ভিসা ও বিমানের টিকিট দেন। এ ঘটনায় বরগুনা আমল আদালতে গত ০৬-০৩-২০২৩ তারিখ ভুক্তভোগী গিয়াস উদ্দিন একটি প্রতারণা মামলা করেন। সে বর্তমানে চেক জালিয়াতি, নারী নির্যাতন ও অপহরণ এবং মোটরসাইকেল চুরির মামলাসহ ৩ টি মামলার ওয়ারেন্টভূক্ত আসামি। এ সকল অভিযোগের বিষয়ে ভাগা গ্রামের তাহিদুলের পিতা নূর ইসলাম বলেন, আমাদের সাথে তার কোন যোগাযোগ নেই। অভিযোগের বিষয়ে দুবাই প্রবাসী তাহিদুলের কাছে ভিডিও কলে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বর্তমানে দুবাই আছি। আমি পরিস্থিতির শিকার। তবে তিনি একাধিক বিয়ে ও সন্তানের কথা স্বীকার করে বলেন বাড়িতে এসে বা লোক মারফত মামলা মোকাবেলা এবং স্ত্রী নাজমুন নাহারের সাথে মিমাংসা করে দেনা পাওনা বুঝে দেওয়া হবে জানিয়ে তিনি এসব নিয়ে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করেন।##