০৫:৩৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রূপসায় দু:স্থদের বরাদ্ধের সরকারি টিন বিক্রির অভিযোগ, তদন্তর্পূবক ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস প্রশাসনের

####

খুলনার রূপসায় গরিব, অসহায় ও দুস্থ মানুষের জন্য বরাদ্ধের সরকারী ত্রাণের টিন বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান পরিচয় দানকারী মো: বেনজির হোসেন এ টিন বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। গত বুধবার(০৩জুলাই) দরিদ্র জনগোষ্ঠির জন্য বরাদ্ধকৃত সরকারী টিন আত্মসাৎ করে বিক্রির ঘটনায় তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে রূপসার নৈহাটি ইউনিয়নের তালিমপুর গ্রামের বলরাম সেনসহ এলাকাবাসী খুলনার জেলা প্রশাসক, জেলা ত্রাণ ও পূর্ণবাসন কর্মকর্তা, দুদকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।

এলাকাবাসীর লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, সরকারের ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় থেকে রূপসা উপজেলার গরীব, অসহায় ও দু:স্থ মানুষের জন্য সরকারিভাবে টিন বরাদ্ধ দেয়া হয়। সরকারের এই বরাদ্ধকৃত টিন পাইয়ে দেয়ার কথা বলে রূপসার তালিমপুরের মৃত দেলোয়ার মাষ্টারের ছেলে মো: বেনজির হোসেন নিজেকে আওয়ামীলীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে এনআইডি কার্ড সংগ্রহ করে। পরে দু:স্থ ও অসহায় মানুষের কথা বলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার(পিআইও) দপ্তর থেকে ত্রাণের টিন বরাদ্ধ এনে এলাকায় বিভিন্ন লোকের কাছে বিক্রি করে। এরমধ্যে গত বছরের ডিসেম্বর মাসে পূর্ব রূপসা রেলস্টেশন এলাকার চা দোকানদার ও তালিমপুর মুচিপাড়া এলাকার বাসিন্দা  ভূপতি রিশির কাছে ৩ বান সরকারী টিন ১৯হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রী করে। ক্রেতা ভূপতি টিন পাওয়ার পর জানতে পারে এগুলো সরকারী বরাদ্ধের টিন। তখন সে বেনজির হোসেনকে টিনগুলো ফেরত দিতে চাইলে সে ফেরত নিতে অস্বীকৃতি জানায়। এসময় ভূপতি টিনগুলো ঘরের চালে ব্যবহার না করে ঘরে রেখে দেয়। সম্প্রতি সরকারী বরাদ্ধের টিন বিক্রির বিষয়টি লোকমুখে জানাজানি হয়। খবর পেয়ে স্থানীয় একটি গ্রুপ ভূপতির বাড়ীতে এসে টিনের ভিডিও করে নিয়ে যায়। একথা জানতে পেরে গত ০১ জুলাই বেনজির হোসেন তার লোকজন নিয়ে ভূপতির চায়ের দোকানে এসে মারমুখি হয়ে হুমকি ধামকি দেয়। তাছাড়া বেশি বাড়াবাড়ি করলে এলাকা ছাড়া করা হবে বলেও হুমকি দেয়। এছাড়া একই এলাকায় আরো কয়েক জনের কাছে সরকারী বরাদ্ধের এই টিন বিক্রী করার অভিযোগ রয়েছে বেনজিরের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি বেনজিরের সাথে একটি চক্র সরকারী টিন বিক্রির সাথে জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। রূপসার নৈহাটী ইউনিয়নে সরকারিভাবে বরাদ্ধকৃত টিন বিক্রয়ের ঘটনার যতাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

সরকারি টিন ক্রেতা ভূপতি রিশি জানান, চলতি বছরের জানুয়ারী মাসে তালিমপুর গ্রামের মৃত দেলোয়ার মাস্টারের পুত্র বেনজির হোসেন টিন বিক্রির কথা তাকে জানায়। তারপর ১৯ হাজার ৫শত টাকা দিয়ে বেনজিরের কাছ থেকে ৩ বান টিন ক্রয় করি। কিন্তু টিন বাড়িতে আনার পর সরকারী সিল দেয়া টিন দেখে তাকে বার বার ফেরত দিতে চাইলেও সে ফেরত নেয়নি। যার কারণে আমি টিন ঘরের কাজে ব্যবহার না করে রেখে দিয়েছি। এ ঘটনা জানাজানি হলে বেনজির রোকজন নিয়ে এসে আমাকে হুমকি-ধামকি দিয়ে এলাকা ছাড়া করার হুমকিও দিয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ কমান্ডের সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির হোসেন দাবি করেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে তা সঠিক নয়। সে একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তার বিরুদ্ধে একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে বলেও অবিযোগ করেন তিনি।

খুলনা জেলা ত্রাণ ও পূর্ণবাসন কর্মকর্তা মো: আব্দুল করিম  জানান, সরকারী ত্রাণের টিন বিক্রির একটি অভিযোগ পেয়েছি। সংশ্লিষ্ট রূপসা উপজেলা পিআইওকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

খুলনার জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফিন জানান, এ ধরনের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেলে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ##

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik Madhumati

জনপ্রিয়

গোপালগঞ্জে অপচিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু, কথিত ডাক্তার আটক

রূপসায় দু:স্থদের বরাদ্ধের সরকারি টিন বিক্রির অভিযোগ, তদন্তর্পূবক ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস প্রশাসনের

প্রকাশিত সময় : ১২:৪৫:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই ২০২৪

####

খুলনার রূপসায় গরিব, অসহায় ও দুস্থ মানুষের জন্য বরাদ্ধের সরকারী ত্রাণের টিন বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান পরিচয় দানকারী মো: বেনজির হোসেন এ টিন বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। গত বুধবার(০৩জুলাই) দরিদ্র জনগোষ্ঠির জন্য বরাদ্ধকৃত সরকারী টিন আত্মসাৎ করে বিক্রির ঘটনায় তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে রূপসার নৈহাটি ইউনিয়নের তালিমপুর গ্রামের বলরাম সেনসহ এলাকাবাসী খুলনার জেলা প্রশাসক, জেলা ত্রাণ ও পূর্ণবাসন কর্মকর্তা, দুদকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।

এলাকাবাসীর লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, সরকারের ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় থেকে রূপসা উপজেলার গরীব, অসহায় ও দু:স্থ মানুষের জন্য সরকারিভাবে টিন বরাদ্ধ দেয়া হয়। সরকারের এই বরাদ্ধকৃত টিন পাইয়ে দেয়ার কথা বলে রূপসার তালিমপুরের মৃত দেলোয়ার মাষ্টারের ছেলে মো: বেনজির হোসেন নিজেকে আওয়ামীলীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে এনআইডি কার্ড সংগ্রহ করে। পরে দু:স্থ ও অসহায় মানুষের কথা বলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার(পিআইও) দপ্তর থেকে ত্রাণের টিন বরাদ্ধ এনে এলাকায় বিভিন্ন লোকের কাছে বিক্রি করে। এরমধ্যে গত বছরের ডিসেম্বর মাসে পূর্ব রূপসা রেলস্টেশন এলাকার চা দোকানদার ও তালিমপুর মুচিপাড়া এলাকার বাসিন্দা  ভূপতি রিশির কাছে ৩ বান সরকারী টিন ১৯হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রী করে। ক্রেতা ভূপতি টিন পাওয়ার পর জানতে পারে এগুলো সরকারী বরাদ্ধের টিন। তখন সে বেনজির হোসেনকে টিনগুলো ফেরত দিতে চাইলে সে ফেরত নিতে অস্বীকৃতি জানায়। এসময় ভূপতি টিনগুলো ঘরের চালে ব্যবহার না করে ঘরে রেখে দেয়। সম্প্রতি সরকারী বরাদ্ধের টিন বিক্রির বিষয়টি লোকমুখে জানাজানি হয়। খবর পেয়ে স্থানীয় একটি গ্রুপ ভূপতির বাড়ীতে এসে টিনের ভিডিও করে নিয়ে যায়। একথা জানতে পেরে গত ০১ জুলাই বেনজির হোসেন তার লোকজন নিয়ে ভূপতির চায়ের দোকানে এসে মারমুখি হয়ে হুমকি ধামকি দেয়। তাছাড়া বেশি বাড়াবাড়ি করলে এলাকা ছাড়া করা হবে বলেও হুমকি দেয়। এছাড়া একই এলাকায় আরো কয়েক জনের কাছে সরকারী বরাদ্ধের এই টিন বিক্রী করার অভিযোগ রয়েছে বেনজিরের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি বেনজিরের সাথে একটি চক্র সরকারী টিন বিক্রির সাথে জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। রূপসার নৈহাটী ইউনিয়নে সরকারিভাবে বরাদ্ধকৃত টিন বিক্রয়ের ঘটনার যতাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

সরকারি টিন ক্রেতা ভূপতি রিশি জানান, চলতি বছরের জানুয়ারী মাসে তালিমপুর গ্রামের মৃত দেলোয়ার মাস্টারের পুত্র বেনজির হোসেন টিন বিক্রির কথা তাকে জানায়। তারপর ১৯ হাজার ৫শত টাকা দিয়ে বেনজিরের কাছ থেকে ৩ বান টিন ক্রয় করি। কিন্তু টিন বাড়িতে আনার পর সরকারী সিল দেয়া টিন দেখে তাকে বার বার ফেরত দিতে চাইলেও সে ফেরত নেয়নি। যার কারণে আমি টিন ঘরের কাজে ব্যবহার না করে রেখে দিয়েছি। এ ঘটনা জানাজানি হলে বেনজির রোকজন নিয়ে এসে আমাকে হুমকি-ধামকি দিয়ে এলাকা ছাড়া করার হুমকিও দিয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ কমান্ডের সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির হোসেন দাবি করেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে তা সঠিক নয়। সে একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তার বিরুদ্ধে একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে বলেও অবিযোগ করেন তিনি।

খুলনা জেলা ত্রাণ ও পূর্ণবাসন কর্মকর্তা মো: আব্দুল করিম  জানান, সরকারী ত্রাণের টিন বিক্রির একটি অভিযোগ পেয়েছি। সংশ্লিষ্ট রূপসা উপজেলা পিআইওকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

খুলনার জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফিন জানান, এ ধরনের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেলে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ##