১২:৫২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ভেঙ্গে পড়েছে খুলনা টিটিসি’র প্রশাসনিক ও আর্থিক ব্যবস্থাপনা :

লাখ লাখ টাকা দূর্নীতি প্রকাশের ভয়ে সাবেক অধ্যক্ষ কাজী বরকতুল ইসলামের দায়িত্ব হন্তারে অনীহা

 

#  তিন মাসেও দায়িত্ব হন্তর করেনি সাবেক অধ্যক্ষ

# সাবেক অধ্যক্ষকে পুন:পদায়নের চেষ্টায় শিক্ষক-কর্মচারীদের ক্ষোভ

#  টিটিসি ছেড়ে যেতে নতুন অধ্যক্ষকে অতিরিক্ত মহাপরিচালকের হুমকি

#  প্রশিক্ষণার্থীদের ভাতা ও উপকরণ সরবরাহ বন্ধ থাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি

খুলনা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (টিটিসি) সাবেক অধ্যক্ষ কাজী বরকতুল ইসলাম বদলির তিন মাস পরেও দায়িত্ব হন্তর না করায় ভেঙ্গে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটির প্রশাসনিক ব্যবস্থা। নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে অভিযুক্ত সাবেক অধ্যক্ষকে রাষ্ট্রপতির নির্দেশক্রমে গত ২৩এপ্রিল নাটোর টিটিসিতে বদলী করা হয়। পরে খুলনা টিটিসিতে নিয়োগপ্রাপ্ত নতুন অধ্যক্ষ মো. আতা হিয়া বিন খুদা গত ৫ মে যোগদান করেন। যোগদানের পর তিনি প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করলেও সাবেক অধ্যক্ষ ডিডিও ক্ষমতা (আয়ন-ব্যয়ন কর্মকর্তা) হন্তর না করায় চরম জটিলতায় পড়েছে আত্নকর্মসংস্থান সৃষ্টিতে নিয়োজিত সরকারী এ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানটি। খুলনা থেকে বদলী করা হলেও সাবেক অধ্যক্ষের স্বাক্ষরেই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ভাতা এবং অন্যান্য আর্থিক লেনদেন করতে বাধ্য হচ্ছেন।তবে দায়িত্ব হন্তর না করায় প্রশিক্ষণার্থীদের ভাতা ও উপকরণ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এতে সাবির্ক কর্মকান্ডে বিশৃঙ্খলার মধ্যে পড়েছে প্রতিষ্ঠানের নতুন অধ্যক্ষ, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও প্রশিক্ষণার্থীরা। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের অভিযোগ সাবেক অধ্যক্ষের লাখ লাখ টাকা অনিয়ম দূর্নীতি প্রকাশের ভয়ে তিনি দায়িত্ব হন্তর করছেন না।

এদিকে, খুলনা টিটিসির অধ্যক্ষ পদে কাজী বরকতুল ইসলাম পুনরায় পদায়নের জন্য দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছেন। এছাড়া জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যূরোর মহাপরিচালকের দপ্তরের একজন অতিরিক্ত মহাপরিচালক(প্রশিক্ষণ) মো. মঞ্জুরুল হাফিজ মোবাইলে নতুন অধ্যক্ষকে খুলনা থেকে পুরাতন কর্মস্থল সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ টিটিসিতে চলে যাওয়ার জন্য হুমকি দেওয়ায় শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা সরকারী প্রতিষ্ঠানকে বাঁচাতে নতুন অধ্যক্ষকে সামগ্রিক দায়িত্ব হন্তরের জটিলতা নিরসনের জন্য প্রবাসী কল্যান ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী, মন্ত্রনালয়ের সচিব, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালকের প্রতি আবেদন জানিয়েছেন।

খুলনা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিযোগ ও আবেদন সূত্রে জানা যায়, সাবেক অধ্যক্ষ কাজী বরকতুল ইসলামের স্বেচ্ছাচারিতা, প্রশিক্ষণের কাঁচামাল ক্রয়ের অর্থ আত্মসাৎ, প্রশিক্ষণের গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার, নারী কেলেঙ্কারি, শিক্ষক-কর্মচারীদের সাথে দূর্ব্যবহার ও পিডিও সম্মানী প্রদান না করাসহ বিভিন্ন কারণে আন্দোলন করে আসছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলন ও কর্মবিরতিকে বন্ধ করতে ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রশিক্ষক মো. মারুফ আহমেদকে কুয়েট বাইপাসে পিটিয়ে আহত করা হয়। এ ঘটনায় তিনি অধ্যক্ষ বরকতুল ইসলামকে বিবাদী করে মামলা করেন। এর আগে ২০২৩ সালের ১০ডিসেম্বর টিটিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সাবেক অধ্যক্ষ কাজী বরকতুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম দূর্নীতির ঘটনায় মহাপরিচালক বিএমইটি বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিএমইটি মহাপরিচালকের দপ্তর গত ০২জানুয়ারী বিএমইটি ঢাকার পরিচালক (প্রশিক্ষণ মান ও পরিকল্পনা) মো. আকরাম আলী ও উপপরিচালক (প্রশিক্ষণ মান ও পরিকল্পনা) মো. রফিকুল ইসলামের সমন্বয়ে দূর্নীতির অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন করেন। এই কমিটিকে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়। বিএমইটির দুই সদস্য বিশিষ্ট কমিটির তদন্তে খুলনা টিটিসিতে অধ্যক্ষ কাজী বরকতুল ইসলাম যোগদানের পর থেকে প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন অনিয়ম, দূর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, সরকারী সম্পদ নষ্ট ও আত্মসাৎ এবং রাষ্ট্রীয় দিবস পালনে বাঁধা দেওয়ার সতত্য পায়। এছাড়া শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, ভর্তি বাণিজ্য, প্রশিক্ষণ গাড়ী ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার ও প্রশিক্ষণের মালামালের অর্থ আত্মসাতের বিষয় তদন্তে উঠে আসে। একই সাথে দীর্ঘদিন যাবৎ পিডিও সম্মানী প্রদান না করা, হুমকি-ধামকি প্রদান ও নারী কেলেংকারী সহ ড্রাইভারকে মারধর করার অপরাধের প্রমাণ পান বলে তদন্তে উল্লেখ করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর গত ৩০ এপ্রিল সাবেক অধ্যক্ষ কাজী বরকতুল ইসলামকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক মন্ত্রণালয় থেকে শোকজ করা হয়। মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ড. শেখ মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান আল মাসউদ স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানো নোটিশে সরকারী কর্মচারী বিধিমালা ২০১৮ বিধি ৩ (খ) অনুযায়ী বিভাগীয় মামলা রুজু করা হবে না সে বিষয়ে ৭ দিনের মধ্যে জবাব দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়। এর আগে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে উপসচিব এ এস এম ফজলুর রহমান স্বাক্ষরিত মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে ২৩ এপ্রিল সাবেক অধ্যক্ষ কাজী বরকতুল ইসলামকে নাটোর টিটিসিতে বদলি করা হয়। একই প্রজ্ঞাপনে সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ টিটিসির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আতা হিয়া বিন খুদাকে খুলনা টিটিসির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে বদলী করা হয়। তিনি খুলনা টিটিসিতে গত ৫ মে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান (স্মারক নং-৪৯.০১.৪৭০০.০০৩.১৮.৩১৫.২৪.১৯০) করেন। যোগদানের পর তিনি সাবেক অধ্যক্ষ কাজী বরকতুল ইসলামকে দায়িত্ব হন্তরের জন্য একাধিকবার অনুরোধ করেন। কিন্তু সাবেক অধ্যক্ষ দায়িত্ব হন্তর না করে খুলনা টিসিসিতে স্বপদে বহাল থাকতে লবিং শুরু করেন। ফলে প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বিঘিœত হচ্ছে। একই সাথে চলমান প্রশিক্ষণ কোর্স সমূহের গত ৩ মাস যাবৎ প্রশিক্ষণার্থীদের প্রশিক্ষণের মালামাল সরবারহ ও ভাতা প্রদান বন্ধ রয়েছে। এতে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে চরম বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে।

অভিযোগে তারা আরো বলেন, ২১৪তম ব্যাচ থেকে ৩৭৮তম ব্যাচ পর্যন্ত প্রশিক্ষণার্থীদের টিউশন ফি বাবদ প্রায় ৬ লাখ ৬২ হাজার টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে সাবেক অধ্যক্ষ বরকতুল ইসলাম আত্মসাৎ করেন। এর বাইরে তার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতি মন্ত্রণালয় তদন্ত করছে। তাকে দুই দফা কারণ দর্শাও নোটিস দেওয়া হয়। এ অবস্থায় তিনি দুর্নীতি অনিয়ম ধামাচাপা দিতে পুনর্বহালের চেষ্টা করছেন। তাকে পুনরায় এ প্রতিষ্ঠানে ফিরিয়ে আনলে নতুন করে অচলাবস্থা তৈরি ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম ব্যাহত হবে। সেই সাথে প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক আইন-শৃঙ্খলার মারাত্মক অবনতি হওয়ার আশংকা রয়েছে।  ক্ষুব্ধ শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সরকারী এ প্রতিষ্ঠান বাঁচাতে প্রবাসী কল্যান ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী, মন্ত্রণালয়ের সচিব, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালকের প্রতি যথাযথ আইনানূগ পদক্ষেপ গ্রহণের আবেদন জানিয়েছেন।

নতুন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আতা হিয়া বিন খুদা জানান, তিনি গত ২৩ এপ্রিল মন্ত্রণালয়ের বদলীর আদেশের পর সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ টিটিসি থেকে গত ৫মে খুলনা টিটিসিতে যোগদান করেন। যোগদানের পর প্রশাসনিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য সাবেক অধ্যক্ষ কাজী বরকতুল ইসলামকে একাধিকবার ডিডিও ক্ষমতা (আয়ন-ব্যয়ন কর্মকর্তা) হন্তরের অনুরোধ করেন। কিন্তু তিনি গত ০৩মাস অতিবাহিত হলেও দায়িত্ব হন্তর করেননি। উপরোন্তু সাবেক অধ্যক্ষ মন্ত্রণালয় ও মহাপরিচালকের দপ্তরের নির্দেশ অমান্য করে অবৈধভাবে গত অর্থ বছরের(২০২৩-২৪) আর্থিক লেনদেন কার্যক্রম(জুন ক্লোজিং) করেছেন। এখানে বিগত দিনের লাখ লাখ টাকার আর্র্থিক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। যে কারণে সাবেক অধ্যক্ষ তাকে দায়িত্ব হন্তর করতে গড়িমসি করছেন। বিষয়টি নিয়ে তিনি বিএমইটি’র মহাপরিচালক সালেহ আহমেদ মোজাফফরকে লিখিতভাবে অবহিত করেছেন। ইতিমধ্যে গত ১৮ ও ২৫ জুলাই জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশিক্ষণ) মো. মঞ্জুরুল হাফিজ মোবাইল ফোনে একাধিকবার তাকে(ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ) তার পূর্বের কর্মস্থল সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ টিটিসিতে ফিরে যেতে মৌখিক নির্দেশনা ও হুমকি প্রদান করেছেন। এ হুমকির ঘটনা জানাজানি হলে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। দায়িত্ব হন্তর না করায় মন্ত্রণালয় ও মহাপরিচালকের দপ্তরের সরকারি নির্দেশনা লংঘন হচ্ছে। এতে সার্বিক প্রশাসনিক চেইন অব কমান্ড নষ্ট হয়ে গেছে। যা অপরাপর প্রতিষ্ঠানগুলোতেও প্রভাব ফেলছে। তিনি মন্ত্রণালয় ও মহাপরিচালকের দপ্তরের লিখিত পেলে তদানূযায়ী নির্দেশনা পালন করবেন। তবে মৌখিক কোন নির্দেশনায় তিনি কোন ধরণের পদক্ষেপ নেবেন না বলে জানান। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাবেক অধ্যক্ষ দায়িত্ব হন্তর না করায় টিটিসিতে প্রশাসনিক, প্রশিক্ষণ ও আর্থিক ব্যবস্থাপনায় চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। যা এ প্রতিষ্ঠানের সার্বিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত সৃষ্টি করছে বলে তিনি মনে করেন। এ অবস্থার সুষ্ঠু সমাধানে তিনি মহাপরিচালকসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

সরকারী এ প্রতিষ্ঠানটিতে সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে, টিটিসি’র নতুন কয়েকটি ভবন তৈরী হচ্ছে। সেখানের ভবন নির্মান ও ঠিকাদারী নিয়ে ইতিমধ্যেই কয়েক দফা বিবাদের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া নতুন ভবনের র্নিমানের ও আগের পুরাতন ভবনের মালামাল বিক্রি, শির্ক্ষাথীদের প্রশিক্ষণ উপকরণ ক্রয় এবং প্রতিষ্টানের গাছ বিনা টেন্ডারে বিক্রি এবং গাড়ীর যন্ত্রাংশ ও তেল ক্রয় বাবদ অনেক অনিয়মের সাথে সাবেক অধ্যক্ষ জড়িত বলে একাধিক শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী অভিযোগ করেন। টিটিসি সংশ্লিষ্ঠরা আরও জানান, সাবেক অধ্যক্ষ কাজী বরকাতুল ইসলামের অনিয়ম-র্দূনীতির বিষয়ে বিএমইটি থেকে তদন্ত করে সত্যতা পাওয়ায তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা কেন করা হবে না মর্মে শোকজও করা হয়েছে।

খুলনা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (টিটিসি) সাবেক অধ্যক্ষ কাজী বরকতুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, খুলনা টিটিসিতে নতুন যোগদানকৃত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রশাসনিক অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। তিনি যেখান (সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ টিটিসি) থেকে এসেছেন সেখানে ডিডিও (আয়ন-ব্যয়ন কর্মকর্তা)’র দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে আসেননি। সেজন্য আমিও এখানে তাকে ডিডিও’র দায়িত্ব বুঝিয়ে দেইনি। ইতিমধ্যে তিনি মন্ত্রণালয়ে যোগদান করেছেন। তবে মহাপরিচালকের দপ্তরের কর্মকর্তাদের নির্দেশনায় এখনও বর্তমান কর্মস্থলে রয়েছেন। তারা পূর্বের বদলীর আদেশটি (২৩ এপ্রিল ২০২৪) পুনঃবিবেচনা করবেন বলে জানিয়েছেন। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তার বিরুদ্ধে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অনিয়ম দুর্নীতির তদন্ত ও শোকজ নোটিশ দিয়েছেন জানিয়ে বলেন, খুলনা টিটিসির অনেক উন্নয়ন কাজ হচ্ছে। যেগুলো তিনি দেখাশোনা করেছেন এবং উদ্বোধনের অপেক্ষায় আছে। এ কাজগুলো তিনি সম্পন্ন করতে চান। তবে তার বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়টি অনেক আগের বলে উল্লেখ করেন। তিনি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যেভাবে সিদ্ধান্ত দিবেন সেভাবেই কাজ করবেন বলে জানান।

জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) অতিরিক্ত মহাপরিচালক(প্রশিক্ষণ) মো. মঞ্জুরুল হাফিজ জানান, মহাপরিচালক মহোদয়ের পক্ষে আদিষ্ট হয়ে খুলনা টিটিসির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আতা হিয়া বিন খুদাকে তার পুরনো কর্মস্থলে চলে যাওয়ার জন্য বলেছি। এটা আমার ব্যক্তিগত বা হুমকির কোন বিষয় নয়। বদলীর আদেশটা মন্ত্রণালয়ে রিসাফল(পুনঃবিবেচনা) হবে। বদলীকৃতদের মধ্যে নাটোর টিটিসির অধ্যক্ষ মোহাম্মদ গোলাম নবী শারীরিক অসুস্থতার কথা জানিয়ে নতুন কর্মস্থলে যোগদান না করায় এবং খুলনা টিটিসির দায়িত্ব হন্তরের বিষয়টি পুনঃবিবেচনার জন্য আলোচনায় রয়েছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কাজী বরকতুল ইসলাম বদলীকৃত টিটিসিতে যোগদান এবং খুলনা টিটিসি’র দায়িত্ব হন্তর না করায় অন্যান্য টিটিসিগুলোর প্রশাসনিক কাজে সমস্যা তৈরি হচ্ছে, চেইন অব কমান্ড রক্ষা করা যাচ্ছে না।

তবে এ বিষয়ে কথা বলতে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) মহাপরিচালক সালেহ আহমেদ মোজাফফরের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে কথা বলতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. রুহুল আমিনের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি এবং এসএমএস পাঠিয়েও কোন উত্তর পাওয়া যায়নি। ##

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik Madhumati

জনপ্রিয়

সাতক্ষীরায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের মতবিনিময় সভা দু’গ্রুপের হাতাহাতিতে ভন্ডুল

ভেঙ্গে পড়েছে খুলনা টিটিসি’র প্রশাসনিক ও আর্থিক ব্যবস্থাপনা :

লাখ লাখ টাকা দূর্নীতি প্রকাশের ভয়ে সাবেক অধ্যক্ষ কাজী বরকতুল ইসলামের দায়িত্ব হন্তারে অনীহা

প্রকাশিত সময় : ০৬:৪৮:১৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

 

#  তিন মাসেও দায়িত্ব হন্তর করেনি সাবেক অধ্যক্ষ

# সাবেক অধ্যক্ষকে পুন:পদায়নের চেষ্টায় শিক্ষক-কর্মচারীদের ক্ষোভ

#  টিটিসি ছেড়ে যেতে নতুন অধ্যক্ষকে অতিরিক্ত মহাপরিচালকের হুমকি

#  প্রশিক্ষণার্থীদের ভাতা ও উপকরণ সরবরাহ বন্ধ থাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি

খুলনা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (টিটিসি) সাবেক অধ্যক্ষ কাজী বরকতুল ইসলাম বদলির তিন মাস পরেও দায়িত্ব হন্তর না করায় ভেঙ্গে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটির প্রশাসনিক ব্যবস্থা। নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে অভিযুক্ত সাবেক অধ্যক্ষকে রাষ্ট্রপতির নির্দেশক্রমে গত ২৩এপ্রিল নাটোর টিটিসিতে বদলী করা হয়। পরে খুলনা টিটিসিতে নিয়োগপ্রাপ্ত নতুন অধ্যক্ষ মো. আতা হিয়া বিন খুদা গত ৫ মে যোগদান করেন। যোগদানের পর তিনি প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করলেও সাবেক অধ্যক্ষ ডিডিও ক্ষমতা (আয়ন-ব্যয়ন কর্মকর্তা) হন্তর না করায় চরম জটিলতায় পড়েছে আত্নকর্মসংস্থান সৃষ্টিতে নিয়োজিত সরকারী এ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানটি। খুলনা থেকে বদলী করা হলেও সাবেক অধ্যক্ষের স্বাক্ষরেই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ভাতা এবং অন্যান্য আর্থিক লেনদেন করতে বাধ্য হচ্ছেন।তবে দায়িত্ব হন্তর না করায় প্রশিক্ষণার্থীদের ভাতা ও উপকরণ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এতে সাবির্ক কর্মকান্ডে বিশৃঙ্খলার মধ্যে পড়েছে প্রতিষ্ঠানের নতুন অধ্যক্ষ, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও প্রশিক্ষণার্থীরা। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের অভিযোগ সাবেক অধ্যক্ষের লাখ লাখ টাকা অনিয়ম দূর্নীতি প্রকাশের ভয়ে তিনি দায়িত্ব হন্তর করছেন না।

এদিকে, খুলনা টিটিসির অধ্যক্ষ পদে কাজী বরকতুল ইসলাম পুনরায় পদায়নের জন্য দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছেন। এছাড়া জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যূরোর মহাপরিচালকের দপ্তরের একজন অতিরিক্ত মহাপরিচালক(প্রশিক্ষণ) মো. মঞ্জুরুল হাফিজ মোবাইলে নতুন অধ্যক্ষকে খুলনা থেকে পুরাতন কর্মস্থল সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ টিটিসিতে চলে যাওয়ার জন্য হুমকি দেওয়ায় শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা সরকারী প্রতিষ্ঠানকে বাঁচাতে নতুন অধ্যক্ষকে সামগ্রিক দায়িত্ব হন্তরের জটিলতা নিরসনের জন্য প্রবাসী কল্যান ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী, মন্ত্রনালয়ের সচিব, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালকের প্রতি আবেদন জানিয়েছেন।

খুলনা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিযোগ ও আবেদন সূত্রে জানা যায়, সাবেক অধ্যক্ষ কাজী বরকতুল ইসলামের স্বেচ্ছাচারিতা, প্রশিক্ষণের কাঁচামাল ক্রয়ের অর্থ আত্মসাৎ, প্রশিক্ষণের গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার, নারী কেলেঙ্কারি, শিক্ষক-কর্মচারীদের সাথে দূর্ব্যবহার ও পিডিও সম্মানী প্রদান না করাসহ বিভিন্ন কারণে আন্দোলন করে আসছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলন ও কর্মবিরতিকে বন্ধ করতে ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রশিক্ষক মো. মারুফ আহমেদকে কুয়েট বাইপাসে পিটিয়ে আহত করা হয়। এ ঘটনায় তিনি অধ্যক্ষ বরকতুল ইসলামকে বিবাদী করে মামলা করেন। এর আগে ২০২৩ সালের ১০ডিসেম্বর টিটিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সাবেক অধ্যক্ষ কাজী বরকতুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম দূর্নীতির ঘটনায় মহাপরিচালক বিএমইটি বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিএমইটি মহাপরিচালকের দপ্তর গত ০২জানুয়ারী বিএমইটি ঢাকার পরিচালক (প্রশিক্ষণ মান ও পরিকল্পনা) মো. আকরাম আলী ও উপপরিচালক (প্রশিক্ষণ মান ও পরিকল্পনা) মো. রফিকুল ইসলামের সমন্বয়ে দূর্নীতির অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন করেন। এই কমিটিকে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়। বিএমইটির দুই সদস্য বিশিষ্ট কমিটির তদন্তে খুলনা টিটিসিতে অধ্যক্ষ কাজী বরকতুল ইসলাম যোগদানের পর থেকে প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন অনিয়ম, দূর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, সরকারী সম্পদ নষ্ট ও আত্মসাৎ এবং রাষ্ট্রীয় দিবস পালনে বাঁধা দেওয়ার সতত্য পায়। এছাড়া শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, ভর্তি বাণিজ্য, প্রশিক্ষণ গাড়ী ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার ও প্রশিক্ষণের মালামালের অর্থ আত্মসাতের বিষয় তদন্তে উঠে আসে। একই সাথে দীর্ঘদিন যাবৎ পিডিও সম্মানী প্রদান না করা, হুমকি-ধামকি প্রদান ও নারী কেলেংকারী সহ ড্রাইভারকে মারধর করার অপরাধের প্রমাণ পান বলে তদন্তে উল্লেখ করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর গত ৩০ এপ্রিল সাবেক অধ্যক্ষ কাজী বরকতুল ইসলামকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক মন্ত্রণালয় থেকে শোকজ করা হয়। মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ড. শেখ মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান আল মাসউদ স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানো নোটিশে সরকারী কর্মচারী বিধিমালা ২০১৮ বিধি ৩ (খ) অনুযায়ী বিভাগীয় মামলা রুজু করা হবে না সে বিষয়ে ৭ দিনের মধ্যে জবাব দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়। এর আগে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে উপসচিব এ এস এম ফজলুর রহমান স্বাক্ষরিত মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে ২৩ এপ্রিল সাবেক অধ্যক্ষ কাজী বরকতুল ইসলামকে নাটোর টিটিসিতে বদলি করা হয়। একই প্রজ্ঞাপনে সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ টিটিসির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আতা হিয়া বিন খুদাকে খুলনা টিটিসির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে বদলী করা হয়। তিনি খুলনা টিটিসিতে গত ৫ মে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান (স্মারক নং-৪৯.০১.৪৭০০.০০৩.১৮.৩১৫.২৪.১৯০) করেন। যোগদানের পর তিনি সাবেক অধ্যক্ষ কাজী বরকতুল ইসলামকে দায়িত্ব হন্তরের জন্য একাধিকবার অনুরোধ করেন। কিন্তু সাবেক অধ্যক্ষ দায়িত্ব হন্তর না করে খুলনা টিসিসিতে স্বপদে বহাল থাকতে লবিং শুরু করেন। ফলে প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বিঘিœত হচ্ছে। একই সাথে চলমান প্রশিক্ষণ কোর্স সমূহের গত ৩ মাস যাবৎ প্রশিক্ষণার্থীদের প্রশিক্ষণের মালামাল সরবারহ ও ভাতা প্রদান বন্ধ রয়েছে। এতে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে চরম বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে।

অভিযোগে তারা আরো বলেন, ২১৪তম ব্যাচ থেকে ৩৭৮তম ব্যাচ পর্যন্ত প্রশিক্ষণার্থীদের টিউশন ফি বাবদ প্রায় ৬ লাখ ৬২ হাজার টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে সাবেক অধ্যক্ষ বরকতুল ইসলাম আত্মসাৎ করেন। এর বাইরে তার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতি মন্ত্রণালয় তদন্ত করছে। তাকে দুই দফা কারণ দর্শাও নোটিস দেওয়া হয়। এ অবস্থায় তিনি দুর্নীতি অনিয়ম ধামাচাপা দিতে পুনর্বহালের চেষ্টা করছেন। তাকে পুনরায় এ প্রতিষ্ঠানে ফিরিয়ে আনলে নতুন করে অচলাবস্থা তৈরি ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম ব্যাহত হবে। সেই সাথে প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক আইন-শৃঙ্খলার মারাত্মক অবনতি হওয়ার আশংকা রয়েছে।  ক্ষুব্ধ শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সরকারী এ প্রতিষ্ঠান বাঁচাতে প্রবাসী কল্যান ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী, মন্ত্রণালয়ের সচিব, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালকের প্রতি যথাযথ আইনানূগ পদক্ষেপ গ্রহণের আবেদন জানিয়েছেন।

নতুন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আতা হিয়া বিন খুদা জানান, তিনি গত ২৩ এপ্রিল মন্ত্রণালয়ের বদলীর আদেশের পর সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ টিটিসি থেকে গত ৫মে খুলনা টিটিসিতে যোগদান করেন। যোগদানের পর প্রশাসনিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য সাবেক অধ্যক্ষ কাজী বরকতুল ইসলামকে একাধিকবার ডিডিও ক্ষমতা (আয়ন-ব্যয়ন কর্মকর্তা) হন্তরের অনুরোধ করেন। কিন্তু তিনি গত ০৩মাস অতিবাহিত হলেও দায়িত্ব হন্তর করেননি। উপরোন্তু সাবেক অধ্যক্ষ মন্ত্রণালয় ও মহাপরিচালকের দপ্তরের নির্দেশ অমান্য করে অবৈধভাবে গত অর্থ বছরের(২০২৩-২৪) আর্থিক লেনদেন কার্যক্রম(জুন ক্লোজিং) করেছেন। এখানে বিগত দিনের লাখ লাখ টাকার আর্র্থিক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। যে কারণে সাবেক অধ্যক্ষ তাকে দায়িত্ব হন্তর করতে গড়িমসি করছেন। বিষয়টি নিয়ে তিনি বিএমইটি’র মহাপরিচালক সালেহ আহমেদ মোজাফফরকে লিখিতভাবে অবহিত করেছেন। ইতিমধ্যে গত ১৮ ও ২৫ জুলাই জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশিক্ষণ) মো. মঞ্জুরুল হাফিজ মোবাইল ফোনে একাধিকবার তাকে(ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ) তার পূর্বের কর্মস্থল সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ টিটিসিতে ফিরে যেতে মৌখিক নির্দেশনা ও হুমকি প্রদান করেছেন। এ হুমকির ঘটনা জানাজানি হলে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। দায়িত্ব হন্তর না করায় মন্ত্রণালয় ও মহাপরিচালকের দপ্তরের সরকারি নির্দেশনা লংঘন হচ্ছে। এতে সার্বিক প্রশাসনিক চেইন অব কমান্ড নষ্ট হয়ে গেছে। যা অপরাপর প্রতিষ্ঠানগুলোতেও প্রভাব ফেলছে। তিনি মন্ত্রণালয় ও মহাপরিচালকের দপ্তরের লিখিত পেলে তদানূযায়ী নির্দেশনা পালন করবেন। তবে মৌখিক কোন নির্দেশনায় তিনি কোন ধরণের পদক্ষেপ নেবেন না বলে জানান। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাবেক অধ্যক্ষ দায়িত্ব হন্তর না করায় টিটিসিতে প্রশাসনিক, প্রশিক্ষণ ও আর্থিক ব্যবস্থাপনায় চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। যা এ প্রতিষ্ঠানের সার্বিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত সৃষ্টি করছে বলে তিনি মনে করেন। এ অবস্থার সুষ্ঠু সমাধানে তিনি মহাপরিচালকসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

সরকারী এ প্রতিষ্ঠানটিতে সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে, টিটিসি’র নতুন কয়েকটি ভবন তৈরী হচ্ছে। সেখানের ভবন নির্মান ও ঠিকাদারী নিয়ে ইতিমধ্যেই কয়েক দফা বিবাদের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া নতুন ভবনের র্নিমানের ও আগের পুরাতন ভবনের মালামাল বিক্রি, শির্ক্ষাথীদের প্রশিক্ষণ উপকরণ ক্রয় এবং প্রতিষ্টানের গাছ বিনা টেন্ডারে বিক্রি এবং গাড়ীর যন্ত্রাংশ ও তেল ক্রয় বাবদ অনেক অনিয়মের সাথে সাবেক অধ্যক্ষ জড়িত বলে একাধিক শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী অভিযোগ করেন। টিটিসি সংশ্লিষ্ঠরা আরও জানান, সাবেক অধ্যক্ষ কাজী বরকাতুল ইসলামের অনিয়ম-র্দূনীতির বিষয়ে বিএমইটি থেকে তদন্ত করে সত্যতা পাওয়ায তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা কেন করা হবে না মর্মে শোকজও করা হয়েছে।

খুলনা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (টিটিসি) সাবেক অধ্যক্ষ কাজী বরকতুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, খুলনা টিটিসিতে নতুন যোগদানকৃত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রশাসনিক অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। তিনি যেখান (সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ টিটিসি) থেকে এসেছেন সেখানে ডিডিও (আয়ন-ব্যয়ন কর্মকর্তা)’র দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে আসেননি। সেজন্য আমিও এখানে তাকে ডিডিও’র দায়িত্ব বুঝিয়ে দেইনি। ইতিমধ্যে তিনি মন্ত্রণালয়ে যোগদান করেছেন। তবে মহাপরিচালকের দপ্তরের কর্মকর্তাদের নির্দেশনায় এখনও বর্তমান কর্মস্থলে রয়েছেন। তারা পূর্বের বদলীর আদেশটি (২৩ এপ্রিল ২০২৪) পুনঃবিবেচনা করবেন বলে জানিয়েছেন। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তার বিরুদ্ধে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অনিয়ম দুর্নীতির তদন্ত ও শোকজ নোটিশ দিয়েছেন জানিয়ে বলেন, খুলনা টিটিসির অনেক উন্নয়ন কাজ হচ্ছে। যেগুলো তিনি দেখাশোনা করেছেন এবং উদ্বোধনের অপেক্ষায় আছে। এ কাজগুলো তিনি সম্পন্ন করতে চান। তবে তার বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়টি অনেক আগের বলে উল্লেখ করেন। তিনি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যেভাবে সিদ্ধান্ত দিবেন সেভাবেই কাজ করবেন বলে জানান।

জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) অতিরিক্ত মহাপরিচালক(প্রশিক্ষণ) মো. মঞ্জুরুল হাফিজ জানান, মহাপরিচালক মহোদয়ের পক্ষে আদিষ্ট হয়ে খুলনা টিটিসির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আতা হিয়া বিন খুদাকে তার পুরনো কর্মস্থলে চলে যাওয়ার জন্য বলেছি। এটা আমার ব্যক্তিগত বা হুমকির কোন বিষয় নয়। বদলীর আদেশটা মন্ত্রণালয়ে রিসাফল(পুনঃবিবেচনা) হবে। বদলীকৃতদের মধ্যে নাটোর টিটিসির অধ্যক্ষ মোহাম্মদ গোলাম নবী শারীরিক অসুস্থতার কথা জানিয়ে নতুন কর্মস্থলে যোগদান না করায় এবং খুলনা টিটিসির দায়িত্ব হন্তরের বিষয়টি পুনঃবিবেচনার জন্য আলোচনায় রয়েছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কাজী বরকতুল ইসলাম বদলীকৃত টিটিসিতে যোগদান এবং খুলনা টিটিসি’র দায়িত্ব হন্তর না করায় অন্যান্য টিটিসিগুলোর প্রশাসনিক কাজে সমস্যা তৈরি হচ্ছে, চেইন অব কমান্ড রক্ষা করা যাচ্ছে না।

তবে এ বিষয়ে কথা বলতে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) মহাপরিচালক সালেহ আহমেদ মোজাফফরের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে কথা বলতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. রুহুল আমিনের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি এবং এসএমএস পাঠিয়েও কোন উত্তর পাওয়া যায়নি। ##