০৭:১৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্য আনাই-আনুচিংদের দেয়া ওয়াদা কেউ পুরন করেনি

###   দেশের মেয়েরা সাফ গেমসে চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় আনন্দে উচ্ছ্বাসে উন্মাতাল গোটা দেশ। ১৯বছরের খরা কাটিয়ে ইতিহাস গড়েছে বাংলার বাঘিনীরা। এই ইতিহাসের অনন্য সাক্ষী খাগড়াছড়িও। জয়ের এ উৎসবে নাম জড়িয়ে আছে জেলার সদর উপজেলার আনাই মগিনী ও আনুচিং মগিনী এবং লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার মনিকা চাকমার নাম। আছেন সাফ বিজয়ী দলের সহকারী কোচ তৃষ্ণা চাকমাও।ঐতিহাসিক জয়ের গৌররে সারথি যমজ বোন আনাই মগিনী ও আনুচিং মগিনী। জেলা সদরের সাতভাইয়াপাড়ায় তাদের গ্রামে যেতে দরকার একটি সেতুর। বিভিন্ন ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান সেতু নির্মাণের কথাও দিয়েও সে কথা রাখেনি কেউ। শহরতলীর দুর্গম গ্রামটিতে ছড়ার ওপর ঝুঁকিপূর্ণ এক সাঁকো পেরিয়ে যেতে হয়। নুন আনতে পানতা ফুরিয়ে যাওয়া আনাই ও আনুচিং ফুটবল খেলে নিজেদের অবস্থার পরিবর্তন করলও পরিবর্তন হয়নি তাদের গ্রামের অবস্থার। এখনও দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে নিজ ঘরে যেতে হয় তাদের। এ দুই বোনের বড় ভাই মংক্রচাই মগ। আনন্দ ও প্রাপ্তি ছাড়াও তিনি কথা বলেন অপ্রাপ্তি নিয়ে। জানালেন, বৃদ্ধ হতে থাকা বাবা-মা’র অবস্থায়। তার চেয়ে বেশি তাদের গ্রামের পরিস্থিতি। এখনও অনুন্নত সাতভাইয়াপাড়া। মংক্রচাই বলেন, আমাদের বাড়ির প্রবেশ পথের রাস্তাটি যেমন খারাপ তেমনি খারাপ বাড়ির পাশের ছড়ার পরিস্থিতিও। বর্ষাকালে ১০-১৫ ফুট গভীর এই ছড়াটির ওপর একটি বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাফেরা করতে হয়। যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ও এ থেকে মৃত্যু ঝুঁকিও রয়েছে। আনাই-আনুচিংয়ের বাবা রিপ্রুচাই মগ জানান, আমাদের বাড়িসংলগ্ন খালের ওপর সাঁকোটি ঝুঁকিপূর্ণ। মেয়েরা ফুটবল খেলে। পরিস্থিতি বিবেচনায় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এলাকায় সেতু নির্মাণের কথা দিয়েছিলেন। কিন্তু তার বাস্তবায়ন হয়নি। মেয়েরা বড় অর্জন করেছে। কিন্তু সেতুটি হবে কিনা, বলতে পারি না। খাগড়াছড়ি জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক জুয়েল চাকমা জানান, আনাই-আনুচিংদের বাড়ি সংলগ্ন সেতুটি দ্রুত নির্মাণ হওয়া জরুরি। তা না হলে হয়তো এভাবে দূর্গম পথ পাড়ি দিতে গিয়ে দেশের এই  স্বর্ন কিশোরীরা একদিন হারিয়ে যাবে বলে মত দেন তিনি।

খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস জানান, তিনি আনাই-আনুচিং মগিনী ও লক্ষ্মীছড়ির মনিকা চাকমার বাড়ি সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন। তাদের বাবা-মা, স্থানীয় ও স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে তাদের সমস্যা সম্পর্কেও জেনেছেন। তিনি বলেন, যতটুকু সম্ভব করেছি। এবার আরও এক লাখ টাকা করে দেওয়া হবে। সহকারী কোচ তৃষ্ণা চাকমাকেও এক লাখ টাকা দেওয়া হবে। সেতু নির্মাণ কতটা জরুরি তা সকলেই জানেন। কিন্তু কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেই। এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে আনাই-আনুচিংদের বাড়ি যাওয়ার পথে ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকোর পরিবর্তে সেতু নির্মাণের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ও পার্বত্য জেলা পরিষদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন বলে জানান জেলা প্রশাসক। ##

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik Madhumati

জনপ্রিয়

কোস্টগার্ডের অভিযানে অস্ত্রসহ আটক -১ 

সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্য আনাই-আনুচিংদের দেয়া ওয়াদা কেউ পুরন করেনি

প্রকাশিত সময় : ০৫:১৪:৫১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২

###   দেশের মেয়েরা সাফ গেমসে চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় আনন্দে উচ্ছ্বাসে উন্মাতাল গোটা দেশ। ১৯বছরের খরা কাটিয়ে ইতিহাস গড়েছে বাংলার বাঘিনীরা। এই ইতিহাসের অনন্য সাক্ষী খাগড়াছড়িও। জয়ের এ উৎসবে নাম জড়িয়ে আছে জেলার সদর উপজেলার আনাই মগিনী ও আনুচিং মগিনী এবং লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার মনিকা চাকমার নাম। আছেন সাফ বিজয়ী দলের সহকারী কোচ তৃষ্ণা চাকমাও।ঐতিহাসিক জয়ের গৌররে সারথি যমজ বোন আনাই মগিনী ও আনুচিং মগিনী। জেলা সদরের সাতভাইয়াপাড়ায় তাদের গ্রামে যেতে দরকার একটি সেতুর। বিভিন্ন ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান সেতু নির্মাণের কথাও দিয়েও সে কথা রাখেনি কেউ। শহরতলীর দুর্গম গ্রামটিতে ছড়ার ওপর ঝুঁকিপূর্ণ এক সাঁকো পেরিয়ে যেতে হয়। নুন আনতে পানতা ফুরিয়ে যাওয়া আনাই ও আনুচিং ফুটবল খেলে নিজেদের অবস্থার পরিবর্তন করলও পরিবর্তন হয়নি তাদের গ্রামের অবস্থার। এখনও দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে নিজ ঘরে যেতে হয় তাদের। এ দুই বোনের বড় ভাই মংক্রচাই মগ। আনন্দ ও প্রাপ্তি ছাড়াও তিনি কথা বলেন অপ্রাপ্তি নিয়ে। জানালেন, বৃদ্ধ হতে থাকা বাবা-মা’র অবস্থায়। তার চেয়ে বেশি তাদের গ্রামের পরিস্থিতি। এখনও অনুন্নত সাতভাইয়াপাড়া। মংক্রচাই বলেন, আমাদের বাড়ির প্রবেশ পথের রাস্তাটি যেমন খারাপ তেমনি খারাপ বাড়ির পাশের ছড়ার পরিস্থিতিও। বর্ষাকালে ১০-১৫ ফুট গভীর এই ছড়াটির ওপর একটি বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাফেরা করতে হয়। যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ও এ থেকে মৃত্যু ঝুঁকিও রয়েছে। আনাই-আনুচিংয়ের বাবা রিপ্রুচাই মগ জানান, আমাদের বাড়িসংলগ্ন খালের ওপর সাঁকোটি ঝুঁকিপূর্ণ। মেয়েরা ফুটবল খেলে। পরিস্থিতি বিবেচনায় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এলাকায় সেতু নির্মাণের কথা দিয়েছিলেন। কিন্তু তার বাস্তবায়ন হয়নি। মেয়েরা বড় অর্জন করেছে। কিন্তু সেতুটি হবে কিনা, বলতে পারি না। খাগড়াছড়ি জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক জুয়েল চাকমা জানান, আনাই-আনুচিংদের বাড়ি সংলগ্ন সেতুটি দ্রুত নির্মাণ হওয়া জরুরি। তা না হলে হয়তো এভাবে দূর্গম পথ পাড়ি দিতে গিয়ে দেশের এই  স্বর্ন কিশোরীরা একদিন হারিয়ে যাবে বলে মত দেন তিনি।

খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস জানান, তিনি আনাই-আনুচিং মগিনী ও লক্ষ্মীছড়ির মনিকা চাকমার বাড়ি সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন। তাদের বাবা-মা, স্থানীয় ও স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে তাদের সমস্যা সম্পর্কেও জেনেছেন। তিনি বলেন, যতটুকু সম্ভব করেছি। এবার আরও এক লাখ টাকা করে দেওয়া হবে। সহকারী কোচ তৃষ্ণা চাকমাকেও এক লাখ টাকা দেওয়া হবে। সেতু নির্মাণ কতটা জরুরি তা সকলেই জানেন। কিন্তু কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেই। এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে আনাই-আনুচিংদের বাড়ি যাওয়ার পথে ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকোর পরিবর্তে সেতু নির্মাণের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ও পার্বত্য জেলা পরিষদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন বলে জানান জেলা প্রশাসক। ##