০৮:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সুন্দরবনের দুবলার চরের ১৪ থেকে তিন দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী রাসমেলা ও পূণ্যস্নান,  বন বিভাগের পাঁচটি রুট নির্ধারণ

  • মধুমতি ডেক্স :
  • প্রকাশিত সময় : ০১:১৯:৩৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ নভেম্বর ২০২৪
  • ৬ পড়েছেন

####

সুন্দরবনের দুবলার চরে রাস পূর্ণিমা উপলক্ষে আগামী ১৪ থেকে ১৬ নভেম্বর তিন দিনব্যাপী দু‘শতাধিক বছরের ঐতিহ্যবাহী রাসমেলা ও পূন্যস্নান অনুষ্ঠিত হবে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অংশগ্রহণে ঐতিহ্যবাহী রাসমেলায় নিরাপদে যাতায়াতের জন্য দর্শনার্থী ও তীর্থযাত্রীদের জন্য সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগ পাঁচটি রুট নির্ধারণ করেছে। এ সকল পথে বন বিভাগ, পুলিশ, বিজিবি ও কোস্টগার্ডের টহল দল তীর্থযাত্রী ও দর্শনার্থীদের জানমালের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবে। বুধবার বিকালে সুন্দরবন বিভাগের যৌথ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের ডিএফও মো: সারোয়ার আলম। তিনি বলেন, রাস উৎসবে পূজা ও পুর্ণ্যস্নানে  আগত তীর্থযাত্রীরা বিভিন্ন নদী পথে লঞ্চ, ট্রলার, স্পীডবোট ও দেশি নৌকাযোগে যেয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে অনুমোদিত পাঁচটি রুট হলো: বুড়িগোয়ালিনী, কোবাদক থেকে বাটুলানদী-বলনদী-পাটকোষ্টা খাল হয়ে হংসরাজ নদী হয়ে দুবলার চর। কয়রা, কাশিয়াবাদ, খাসিটানা, বজবজা হয়ে আড়ুয়া শিবসা-শিবসা নদী-মরজাত হয়ে দুবলার চর। নলিয়ান স্টেশন হয়ে শিবসা-মরজাত নদী হয়ে দুবলার চর। ঢাংমারী অথবা চাঁদপাই স্টেশন-তিনকোনা দ্বীপ হয়ে দুবলার চর এবং বগী-বলেশ্বর-সুপতি স্টেশন-কচিখালী-শেলার চর হয়ে দুবলার চর।

তিনি আরও জানান, রাস মেলার পুর্ণ্যস্নানে  অংশ নিতে দর্শনার্থী ও তীর্থযাত্রীদের ১৪ থেকে ১৬ নভেম্বর-এ তিন দিনের জন্য অনুমতি প্রদান করা হবে এবং প্রবেশের সময় এন্ট্রি পয়েন্টে লঞ্চ, ট্রলার ও নৌকার প্রবেশ ফি, অবস্থান ফি এবং লোকের সংখ্যা অনুযায়ী বিধি মোতাবেক রাজস্ব আদায় করে পাশ প্রদান করা হবে। অনুমতি পেতে জাতীয় পরিচয় পত্রের কপিসহ তীর্থযাত্রীদের আবেদন করতে হবে। প্রতিটি অনুমতিপত্রে সিল মেরে পথ বা রুট উল্লেখ্য করা হবে এবং তীর্থযাত্রী ও দর্শনার্থীগণ পছন্দমত একটি রুট বা পথ ব্যবহার করবেন। ১৪ নভেম্বর দিনের ভাটায় যাত্রা আরম্ভ করতে হবে। রাসপূর্ণিমা পুর্ণ্যস্নানে  উদ্দেশ্যে নির্ধারিত নৌযান রুটে শুধু দিনের বেলায় চলাচল করতে পারবে। বন বিভাগের চেকিং পয়েন্ট ছাড়া কোথাও লঞ্চ, ট্রলার ও নৌকা থামানো যাবে না। ট্রলারে প্রয়োজনীয় সংখ্যক লাইভ জ্যাকেট বা বয়া সংরক্ষণ করতে হবে।

এছাড়াও প্রতিটি জলযানের গায়ে রঙ অথবা স্টিকার দিয়ে বি,এল,সি বা সিরিয়াল নম্বর, তীর্থযাত্রী ও পুণ্যার্থীর সংখ্যা উল্লেখ করা হবে। সুন্দরবনে প্রবেশকালে প্রতি তীর্থযাত্রী ও পুণ্যার্থীকে একটি করে টিকেট বা টোকেন প্রদান করা হবে। সুন্দরবনের অভ্যন্তরে অবস্থানকালীন টোকেন বা টিকেট সর্বদা নিজের সাথে রাখতে হবে। প্রতিটি লঞ্চ, নৌকা ও ট্রলারকে আলোরকোলে স্থাপিত কন্টোলরুমে আবশ্যিকভাবে রিপোর্ট করতে হবে। এর ব্যত্যয় করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ষুলনার বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো জানান, সুন্দরবনের দুবলার চরে দুই শতাধিক সবছর আগে থেকে রাস মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এবারের রাস মেলায় আগতদের নিরাপত্তার জন্য রাসপূর্ণিমা পুর্ণ্যস্নানের সময় কোন বিস্ফোরকদ্রব্য, আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার ও বহন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কারো কাছে কোন আগ্নেয়াস্ত্র, বিস্ফোরকদ্রব্য, হরিণ মারার ফাঁদ, দড়ি, গাছ কাটার কুড়াল, করাত ইত্যাদি অবৈধ কিছু পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোন অবস্থায়ই সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক যেমন প্লাস্টিকের প্লেট, পানির বোতল, গ্লাস বা চামচ বহন করা যাবে না। লঞ্চ, ট্রলার, নৌকায় এবং পুর্ণ্যস্নান  স্থলে মাইক বাজানো, পটকা, বাজি ইত্যাদি ফোটানোসহ সকল প্রকার শব্দ দূষণ নিষিদ্ধ। রাসপূর্ণিমায় আগত পুণ্যার্থীদের সুন্দরবনে প্রবেশের সময় জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা ইউপি চেয়ারম্যানের নিকট হতে প্রাপ্ত সনদপত্রের মূলকপি সাথে রাখতে হবে। রাসমেলায় আগত তীর্থযাত্রীদের উল্লিখিত নিদের্শনা মেনে চলার জন্য তিনি অনুরোধ জানান। ##

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Dainik Madhumati

জনপ্রিয়

র্নিবাচিত সরকার ছাড়া কেউ সংবিধান সংশোধন করতে পারবে না : গয়েশ্বর রায়

সুন্দরবনের দুবলার চরের ১৪ থেকে তিন দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী রাসমেলা ও পূণ্যস্নান,  বন বিভাগের পাঁচটি রুট নির্ধারণ

প্রকাশিত সময় : ০১:১৯:৩৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ নভেম্বর ২০২৪

####

সুন্দরবনের দুবলার চরে রাস পূর্ণিমা উপলক্ষে আগামী ১৪ থেকে ১৬ নভেম্বর তিন দিনব্যাপী দু‘শতাধিক বছরের ঐতিহ্যবাহী রাসমেলা ও পূন্যস্নান অনুষ্ঠিত হবে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অংশগ্রহণে ঐতিহ্যবাহী রাসমেলায় নিরাপদে যাতায়াতের জন্য দর্শনার্থী ও তীর্থযাত্রীদের জন্য সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগ পাঁচটি রুট নির্ধারণ করেছে। এ সকল পথে বন বিভাগ, পুলিশ, বিজিবি ও কোস্টগার্ডের টহল দল তীর্থযাত্রী ও দর্শনার্থীদের জানমালের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবে। বুধবার বিকালে সুন্দরবন বিভাগের যৌথ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের ডিএফও মো: সারোয়ার আলম। তিনি বলেন, রাস উৎসবে পূজা ও পুর্ণ্যস্নানে  আগত তীর্থযাত্রীরা বিভিন্ন নদী পথে লঞ্চ, ট্রলার, স্পীডবোট ও দেশি নৌকাযোগে যেয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে অনুমোদিত পাঁচটি রুট হলো: বুড়িগোয়ালিনী, কোবাদক থেকে বাটুলানদী-বলনদী-পাটকোষ্টা খাল হয়ে হংসরাজ নদী হয়ে দুবলার চর। কয়রা, কাশিয়াবাদ, খাসিটানা, বজবজা হয়ে আড়ুয়া শিবসা-শিবসা নদী-মরজাত হয়ে দুবলার চর। নলিয়ান স্টেশন হয়ে শিবসা-মরজাত নদী হয়ে দুবলার চর। ঢাংমারী অথবা চাঁদপাই স্টেশন-তিনকোনা দ্বীপ হয়ে দুবলার চর এবং বগী-বলেশ্বর-সুপতি স্টেশন-কচিখালী-শেলার চর হয়ে দুবলার চর।

তিনি আরও জানান, রাস মেলার পুর্ণ্যস্নানে  অংশ নিতে দর্শনার্থী ও তীর্থযাত্রীদের ১৪ থেকে ১৬ নভেম্বর-এ তিন দিনের জন্য অনুমতি প্রদান করা হবে এবং প্রবেশের সময় এন্ট্রি পয়েন্টে লঞ্চ, ট্রলার ও নৌকার প্রবেশ ফি, অবস্থান ফি এবং লোকের সংখ্যা অনুযায়ী বিধি মোতাবেক রাজস্ব আদায় করে পাশ প্রদান করা হবে। অনুমতি পেতে জাতীয় পরিচয় পত্রের কপিসহ তীর্থযাত্রীদের আবেদন করতে হবে। প্রতিটি অনুমতিপত্রে সিল মেরে পথ বা রুট উল্লেখ্য করা হবে এবং তীর্থযাত্রী ও দর্শনার্থীগণ পছন্দমত একটি রুট বা পথ ব্যবহার করবেন। ১৪ নভেম্বর দিনের ভাটায় যাত্রা আরম্ভ করতে হবে। রাসপূর্ণিমা পুর্ণ্যস্নানে  উদ্দেশ্যে নির্ধারিত নৌযান রুটে শুধু দিনের বেলায় চলাচল করতে পারবে। বন বিভাগের চেকিং পয়েন্ট ছাড়া কোথাও লঞ্চ, ট্রলার ও নৌকা থামানো যাবে না। ট্রলারে প্রয়োজনীয় সংখ্যক লাইভ জ্যাকেট বা বয়া সংরক্ষণ করতে হবে।

এছাড়াও প্রতিটি জলযানের গায়ে রঙ অথবা স্টিকার দিয়ে বি,এল,সি বা সিরিয়াল নম্বর, তীর্থযাত্রী ও পুণ্যার্থীর সংখ্যা উল্লেখ করা হবে। সুন্দরবনে প্রবেশকালে প্রতি তীর্থযাত্রী ও পুণ্যার্থীকে একটি করে টিকেট বা টোকেন প্রদান করা হবে। সুন্দরবনের অভ্যন্তরে অবস্থানকালীন টোকেন বা টিকেট সর্বদা নিজের সাথে রাখতে হবে। প্রতিটি লঞ্চ, নৌকা ও ট্রলারকে আলোরকোলে স্থাপিত কন্টোলরুমে আবশ্যিকভাবে রিপোর্ট করতে হবে। এর ব্যত্যয় করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ষুলনার বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো জানান, সুন্দরবনের দুবলার চরে দুই শতাধিক সবছর আগে থেকে রাস মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এবারের রাস মেলায় আগতদের নিরাপত্তার জন্য রাসপূর্ণিমা পুর্ণ্যস্নানের সময় কোন বিস্ফোরকদ্রব্য, আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার ও বহন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কারো কাছে কোন আগ্নেয়াস্ত্র, বিস্ফোরকদ্রব্য, হরিণ মারার ফাঁদ, দড়ি, গাছ কাটার কুড়াল, করাত ইত্যাদি অবৈধ কিছু পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোন অবস্থায়ই সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক যেমন প্লাস্টিকের প্লেট, পানির বোতল, গ্লাস বা চামচ বহন করা যাবে না। লঞ্চ, ট্রলার, নৌকায় এবং পুর্ণ্যস্নান  স্থলে মাইক বাজানো, পটকা, বাজি ইত্যাদি ফোটানোসহ সকল প্রকার শব্দ দূষণ নিষিদ্ধ। রাসপূর্ণিমায় আগত পুণ্যার্থীদের সুন্দরবনে প্রবেশের সময় জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা ইউপি চেয়ারম্যানের নিকট হতে প্রাপ্ত সনদপত্রের মূলকপি সাথে রাখতে হবে। রাসমেলায় আগত তীর্থযাত্রীদের উল্লিখিত নিদের্শনা মেনে চলার জন্য তিনি অনুরোধ জানান। ##