১০:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্বাস্থ্য পরীক্ষায় ব্যয়

  • সংবাদদাতা
  • প্রকাশিত সময় : ০২:২৪:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ জুলাই ২০২২
  • ৬৭ পড়েছেন

চিকিৎসায় স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যয় দুই থেকে দশগুণ বেশি। সারাদেশেই প্যাথলজি ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় ব্যয় নির্ধারিত মূল্য থেকে দ্বিগুন, তিন গুণ; আবার কোথাও কোথাও দশগুণ পর্যন্ত বেশি। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের দুর্বল মনিটরিং, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মালিকদের অতিরিক্ত মুনাফা করার প্রবণতা এবং এক শ্রেণির চিকিৎসকের কমিশন-বাণিজ্যের কারণেই এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা যায়। যার শিকার হচ্ছেন দেশের সাধারণ মানুষ। মূলত চিকিৎসকদের কমিশন-ব্যবসার কারণে বিভিন্ন স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যয় সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আকাশ-পাতাল ব্যবধান থাকে। যেসব চিকিৎসক বেসরকারি ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগী পাঠান, তাদের একেকটি পরীক্ষার মোট চার্জের ২৫ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমিশন দেয়া হয় বলে বিভিন্ন সূত্রে দাবী করা হচ্ছে।

আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থায় যে কী পরিমাণ অরাজকতা চলছে, এটি তার একটি উদাহরণ। প্রাইভেট চেম্বারসহ হাসপাতাল-ক্লিনিকে রোগীরা এলেই প্রথমত তাদের কাছ থেকে নেয়া হয় মোটা অংকের ফি। পরে প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে বিভিন্ন ধরণের পরীক্ষার পরামর্শ দেয়া হয়। অনেক সময় চিকিৎসকদের পছন্দের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা না করালে পরীক্ষার এ রিপোর্টই দেখতে চান না চিকিৎসকগণ। সরকারি হাসপাতালেও অনেক সময় স্বাস্থ্যপরীক্ষার অতিরিক্ত ফি নেয়া হয়। আমাদের দেশে বেসরকারি পর্যায়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষার ফি গ্রহণের জন্য কোন নিয়মনীতি নেই। তবে সরকার নির্ধারিত একটি মূল্য তালিকা রয়েছে। ২০১০ সালে এটি গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়। রোগির সুবিধার্থে সব হাসপাতাল ক্লিনিকেই এটি প্রদর্শনের নির্দেশনা রয়েছে। তবে সংশ্লিষ্টরা এই নির্দেশনাটি অনেক সময়ই মেনে চলছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। দেখা গেছে, সরকারি পরিপত্র অনুযায়ি সরকারি প্রতিষ্ঠানে যে পরীক্ষার চার্জ একশ’ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে অনেক বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সেই পরীক্ষার চার্জ নিচ্ছে কয়েকগুন বেশি। এটা ঠিক যে, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ব্যয় বেশি, তাই তারা পরীক্ষার চার্জ একটু বেশিই নেবে; তাই বলে সেই চার্জ সরকার নির্ধারিত হারের দশগুণ-১৫ গুণ বেশি তা হওয়ার কথা নয়।
সবচেয়ে দুঃখজনক হচ্ছে বেসরকারি প্যাথলজি ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর এই গলাকাটা ফি আদায়ের বিরুদ্ধে সরকারের কোন পদক্ষেপ নেই। সরকার একটি পরিপত্র জারি করেই বসে আছে; সেটা কার্যকর হচ্ছে কি-না কিংবা সেই হার সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের জন্য একই সঙ্গে প্রযোজ্য কিনা সেটা স্পষ্ট নয়। আসল কথা হলো, চিকিৎসায় পরীক্ষা-নীরিক্ষার চার্জ মানুষের সাধ্যের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। আর রোগিদের অপ্রয়োজনে পরীক্ষা-নীরিক্ষার যাঁতাকলে যাতে না পড়তে হয়, সেদিকেও নজর দিতে হবে।

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

dainik madhumati

জনপ্রিয়

কোস্টগার্ডের অভিযানে অস্ত্রসহ আটক -১ 

স্বাস্থ্য পরীক্ষায় ব্যয়

প্রকাশিত সময় : ০২:২৪:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ জুলাই ২০২২

চিকিৎসায় স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যয় দুই থেকে দশগুণ বেশি। সারাদেশেই প্যাথলজি ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় ব্যয় নির্ধারিত মূল্য থেকে দ্বিগুন, তিন গুণ; আবার কোথাও কোথাও দশগুণ পর্যন্ত বেশি। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের দুর্বল মনিটরিং, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মালিকদের অতিরিক্ত মুনাফা করার প্রবণতা এবং এক শ্রেণির চিকিৎসকের কমিশন-বাণিজ্যের কারণেই এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা যায়। যার শিকার হচ্ছেন দেশের সাধারণ মানুষ। মূলত চিকিৎসকদের কমিশন-ব্যবসার কারণে বিভিন্ন স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যয় সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আকাশ-পাতাল ব্যবধান থাকে। যেসব চিকিৎসক বেসরকারি ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগী পাঠান, তাদের একেকটি পরীক্ষার মোট চার্জের ২৫ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমিশন দেয়া হয় বলে বিভিন্ন সূত্রে দাবী করা হচ্ছে।

আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থায় যে কী পরিমাণ অরাজকতা চলছে, এটি তার একটি উদাহরণ। প্রাইভেট চেম্বারসহ হাসপাতাল-ক্লিনিকে রোগীরা এলেই প্রথমত তাদের কাছ থেকে নেয়া হয় মোটা অংকের ফি। পরে প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে বিভিন্ন ধরণের পরীক্ষার পরামর্শ দেয়া হয়। অনেক সময় চিকিৎসকদের পছন্দের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা না করালে পরীক্ষার এ রিপোর্টই দেখতে চান না চিকিৎসকগণ। সরকারি হাসপাতালেও অনেক সময় স্বাস্থ্যপরীক্ষার অতিরিক্ত ফি নেয়া হয়। আমাদের দেশে বেসরকারি পর্যায়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষার ফি গ্রহণের জন্য কোন নিয়মনীতি নেই। তবে সরকার নির্ধারিত একটি মূল্য তালিকা রয়েছে। ২০১০ সালে এটি গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়। রোগির সুবিধার্থে সব হাসপাতাল ক্লিনিকেই এটি প্রদর্শনের নির্দেশনা রয়েছে। তবে সংশ্লিষ্টরা এই নির্দেশনাটি অনেক সময়ই মেনে চলছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। দেখা গেছে, সরকারি পরিপত্র অনুযায়ি সরকারি প্রতিষ্ঠানে যে পরীক্ষার চার্জ একশ’ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে অনেক বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সেই পরীক্ষার চার্জ নিচ্ছে কয়েকগুন বেশি। এটা ঠিক যে, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ব্যয় বেশি, তাই তারা পরীক্ষার চার্জ একটু বেশিই নেবে; তাই বলে সেই চার্জ সরকার নির্ধারিত হারের দশগুণ-১৫ গুণ বেশি তা হওয়ার কথা নয়।
সবচেয়ে দুঃখজনক হচ্ছে বেসরকারি প্যাথলজি ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর এই গলাকাটা ফি আদায়ের বিরুদ্ধে সরকারের কোন পদক্ষেপ নেই। সরকার একটি পরিপত্র জারি করেই বসে আছে; সেটা কার্যকর হচ্ছে কি-না কিংবা সেই হার সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের জন্য একই সঙ্গে প্রযোজ্য কিনা সেটা স্পষ্ট নয়। আসল কথা হলো, চিকিৎসায় পরীক্ষা-নীরিক্ষার চার্জ মানুষের সাধ্যের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। আর রোগিদের অপ্রয়োজনে পরীক্ষা-নীরিক্ষার যাঁতাকলে যাতে না পড়তে হয়, সেদিকেও নজর দিতে হবে।